ঢাকা ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

কুঁড়ে ঘরে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগে ডুপ্লেক্স বাড়ির মালিকের বাধা ও এসিড নিক্ষেপের হুমকি

শাখাওয়াত হোসেন টিপু, দাগনভূঞা
  • আপডেট সময় : ১৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গরীব, অসহায়, সহায় সম্বলহীন গার্মেন্টস কর্মি আয়েশার কুঁড়ে ঘর নির্মাণাধীন ডুপ্লেক্স বিল্ডিং এর সামনে হওয়ায়, সম্মানহানির অজুহাতে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগে বাধা ও এসিড নিক্ষেপের হুমকির অভিযোগ প্রতিবেশী আবদুর রবের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ফেনী দাগনভূঞা উপজেলা ২ নং রাজাপুর ১ নং ওয়ার্ড আবদুল নবী গ্রামের।
এলাকার লোকজনের তথ্য মতে, ৯ বছর আগে গার্মেন্টসে চাকরি করে অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে বাড়ির চাচাতো বোন নুরজাহান ও খোদেজা থেকে বসতঘর করার উদ্দেশ্যে ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন বিবি আয়েশা। জায়গা ক্রয় করার পর থেকে দাগ নং এর বিড়ম্বনায় জায়গাটি রেজিষ্ট্রি করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় আয়েশাকে। অবশেষে সকল সমস্যা সমাধান করে এই বছর ২০২৫ এর জুন মাসে থাকার উদ্দেশ্যে একটি ছোট্ট টিনের ঘর করে বিদ্যুৎহীন বসবাস শুরু করেন আয়েশা ও তার বৃদ্ধ মা। পল্লি বিদ্যুৎ অফিসের ঝক্কিঝামেলা শেষ করে ঘর কে আলোকিত করতে মিটার সংযোগের ব্যাবস্থা করলেও সামনের ডুপ্লেক্স বিল্ডিং এর মালিক আবদুর রব বৈদ্যুতিক সংযোগ না দিতে দেয়াল হয়ে দাড়ান। স্থানীয় রাজাপুর পল্লি বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেন আয়েশার কুঁড়ে ঘরটি তার ক্রয়কৃত জায়গায় নির্মান করা হয়েছে। তাই পল্লি বিদ্যুৎ অফিস মিটার সংযোগে অপারগতা প্রকাশ করে ফিরে যান।
আয়েশা অভিযোগ করে বলেন, একই মালিক থেকে আবদুর রব ও জায়গা কিনেছেন তবে তা অন্য দাগে, আমার দাগে আবদুর রব কোন জায়গা কিনেন নাই। আমার দলিল কাগজ পত্র সব কয়েকবার যাচাই করা হয়েছে এবং যতবারই এই বিষয়ে শালিশ দরবার হয়েছে সকলে কাগজ পত্র যাচাই করে আমি সঠিক আছি বলে রায় দিয়েছেন। কিন্তু আমি গরীব ও অসহায় বলে বিগত ৯ বছর থেকে বিভিন্ন ভাবে আমাকে অত্যাচার ও হয়রানি করে আসছেন আবদুর রব কারন আমার গরীব ও অসহায়ত্ব তার অর্থ বিত্তের সামনে বেমানান তাই সে কোন ভাবেই আমাকে এখানে বসবাস করতে দিবে না এবং ঘুমের মধ্যে এসিড নিক্ষেপ ও জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং সরকার ও প্রশাসনের কাছে এই অন্যায় অবিচারের বিচার চাই।
জায়গা সংক্রান্ত জটিলতায় কাগজ পত্র যাচাই বাচাই করে এলাকার সকলে আয়েশার পক্ষে রায় দিলেও তা মানতে নারাজ আবদুর রব।
এই বিষয়ে জায়গার প্রকৃত মালিক থেকে জানা যায়, আবদুর রব শুধু শুধু গায়ের জোরে অসহায় গরীব মেয়েটিকে হয়রানি করছে। তার এই দাগে কোন জায়গা নেই। কাগজ পত্রে ও নেই। আয়েশার ক্রয়কৃত জায়গাটি আমার বাবার ছিল। হক হিসাবে আমার ২ বোন নুর জাহান ও খোদেজা কে দেয়ার পর তারা আয়েশার কাছে বিক্রি করে এবং ৬ মাস আগে সে অনেক কষ্টে টিনের এই ছোট্ট ঘরটি নির্মান করে তখন আব্দুর রব কোন বাধা বিগ্নতা সৃষ্টি করেন নি। মেয়েটি অন্ধকারে দিনযাপন করছে। কেন আবদুর রব অনর্থক ঝামেলা করে আয়েশার ঘরে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগে বাধা প্রদান করছে তা আমাদের বুজে আসে না।
আয়েশার অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আয়েশাকে বিক্রেতারা দখল দিয়েছে অন্য দাগে সে ওখানে কিছুদিন দখলেও ছিল, হঠাৎ করে সে গত ৬ মাস আগে আমার জায়গায় ঘর নির্মান করে যেখানে আমি ১ শতাংশ জায়গার মালিক আছি। আমি তাকে আমার জায়গা বুজিয়ে দিয়ে ঘর নির্মান করতে বলি কিন্তু সে এলাকার সন্ত্রাসীদের প্ররোচনায় আমার জায়গায় ঘর নির্মান করাতে আমি বৈদ্যুতিক সংযোগ না দিতে বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করি। এবং এই জায়গার জন্য কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে বলেও জানান।
এসিড নিক্ষেপ ও হুমকি ধামকির বিষয়ে তিনি বলেন এই মহিলা অনেক বেয়াদপ ও নষ্ট সে ইয়াবা ব্যাবসা করে খারাপ মানুষের সাথে উঠাবসা তাই এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে।
স্থানীয় ক্রোশমুন্সি ফাঁড়ি থানার ইনচার্জ মোতালেব জানান, কয়দিন আগে এই বিষয়ে আয়েশার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমি উভয় পক্ষের সাথে স্থানীয় গন্য মান্যদের নিয়ে বসি এবং সকল বৃত্তান্ত ও কাগজ পত্র দেখে আয়েশার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আবদুর রবকে এই ব্যাপারে জামেলা না করতে অনুরোধ করি কিন্তু সে সকলের সামনে সব মেনে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে আবার জামেলা শুরু করে বলে অভিযোগ পাই।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কুঁড়ে ঘরে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগে ডুপ্লেক্স বাড়ির মালিকের বাধা ও এসিড নিক্ষেপের হুমকি

আপডেট সময় :

গরীব, অসহায়, সহায় সম্বলহীন গার্মেন্টস কর্মি আয়েশার কুঁড়ে ঘর নির্মাণাধীন ডুপ্লেক্স বিল্ডিং এর সামনে হওয়ায়, সম্মানহানির অজুহাতে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগে বাধা ও এসিড নিক্ষেপের হুমকির অভিযোগ প্রতিবেশী আবদুর রবের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ফেনী দাগনভূঞা উপজেলা ২ নং রাজাপুর ১ নং ওয়ার্ড আবদুল নবী গ্রামের।
এলাকার লোকজনের তথ্য মতে, ৯ বছর আগে গার্মেন্টসে চাকরি করে অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে বাড়ির চাচাতো বোন নুরজাহান ও খোদেজা থেকে বসতঘর করার উদ্দেশ্যে ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন বিবি আয়েশা। জায়গা ক্রয় করার পর থেকে দাগ নং এর বিড়ম্বনায় জায়গাটি রেজিষ্ট্রি করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় আয়েশাকে। অবশেষে সকল সমস্যা সমাধান করে এই বছর ২০২৫ এর জুন মাসে থাকার উদ্দেশ্যে একটি ছোট্ট টিনের ঘর করে বিদ্যুৎহীন বসবাস শুরু করেন আয়েশা ও তার বৃদ্ধ মা। পল্লি বিদ্যুৎ অফিসের ঝক্কিঝামেলা শেষ করে ঘর কে আলোকিত করতে মিটার সংযোগের ব্যাবস্থা করলেও সামনের ডুপ্লেক্স বিল্ডিং এর মালিক আবদুর রব বৈদ্যুতিক সংযোগ না দিতে দেয়াল হয়ে দাড়ান। স্থানীয় রাজাপুর পল্লি বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করেন আয়েশার কুঁড়ে ঘরটি তার ক্রয়কৃত জায়গায় নির্মান করা হয়েছে। তাই পল্লি বিদ্যুৎ অফিস মিটার সংযোগে অপারগতা প্রকাশ করে ফিরে যান।
আয়েশা অভিযোগ করে বলেন, একই মালিক থেকে আবদুর রব ও জায়গা কিনেছেন তবে তা অন্য দাগে, আমার দাগে আবদুর রব কোন জায়গা কিনেন নাই। আমার দলিল কাগজ পত্র সব কয়েকবার যাচাই করা হয়েছে এবং যতবারই এই বিষয়ে শালিশ দরবার হয়েছে সকলে কাগজ পত্র যাচাই করে আমি সঠিক আছি বলে রায় দিয়েছেন। কিন্তু আমি গরীব ও অসহায় বলে বিগত ৯ বছর থেকে বিভিন্ন ভাবে আমাকে অত্যাচার ও হয়রানি করে আসছেন আবদুর রব কারন আমার গরীব ও অসহায়ত্ব তার অর্থ বিত্তের সামনে বেমানান তাই সে কোন ভাবেই আমাকে এখানে বসবাস করতে দিবে না এবং ঘুমের মধ্যে এসিড নিক্ষেপ ও জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং সরকার ও প্রশাসনের কাছে এই অন্যায় অবিচারের বিচার চাই।
জায়গা সংক্রান্ত জটিলতায় কাগজ পত্র যাচাই বাচাই করে এলাকার সকলে আয়েশার পক্ষে রায় দিলেও তা মানতে নারাজ আবদুর রব।
এই বিষয়ে জায়গার প্রকৃত মালিক থেকে জানা যায়, আবদুর রব শুধু শুধু গায়ের জোরে অসহায় গরীব মেয়েটিকে হয়রানি করছে। তার এই দাগে কোন জায়গা নেই। কাগজ পত্রে ও নেই। আয়েশার ক্রয়কৃত জায়গাটি আমার বাবার ছিল। হক হিসাবে আমার ২ বোন নুর জাহান ও খোদেজা কে দেয়ার পর তারা আয়েশার কাছে বিক্রি করে এবং ৬ মাস আগে সে অনেক কষ্টে টিনের এই ছোট্ট ঘরটি নির্মান করে তখন আব্দুর রব কোন বাধা বিগ্নতা সৃষ্টি করেন নি। মেয়েটি অন্ধকারে দিনযাপন করছে। কেন আবদুর রব অনর্থক ঝামেলা করে আয়েশার ঘরে বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগে বাধা প্রদান করছে তা আমাদের বুজে আসে না।
আয়েশার অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আয়েশাকে বিক্রেতারা দখল দিয়েছে অন্য দাগে সে ওখানে কিছুদিন দখলেও ছিল, হঠাৎ করে সে গত ৬ মাস আগে আমার জায়গায় ঘর নির্মান করে যেখানে আমি ১ শতাংশ জায়গার মালিক আছি। আমি তাকে আমার জায়গা বুজিয়ে দিয়ে ঘর নির্মান করতে বলি কিন্তু সে এলাকার সন্ত্রাসীদের প্ররোচনায় আমার জায়গায় ঘর নির্মান করাতে আমি বৈদ্যুতিক সংযোগ না দিতে বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করি। এবং এই জায়গার জন্য কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে বলেও জানান।
এসিড নিক্ষেপ ও হুমকি ধামকির বিষয়ে তিনি বলেন এই মহিলা অনেক বেয়াদপ ও নষ্ট সে ইয়াবা ব্যাবসা করে খারাপ মানুষের সাথে উঠাবসা তাই এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে।
স্থানীয় ক্রোশমুন্সি ফাঁড়ি থানার ইনচার্জ মোতালেব জানান, কয়দিন আগে এই বিষয়ে আয়েশার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমি উভয় পক্ষের সাথে স্থানীয় গন্য মান্যদের নিয়ে বসি এবং সকল বৃত্তান্ত ও কাগজ পত্র দেখে আয়েশার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আবদুর রবকে এই ব্যাপারে জামেলা না করতে অনুরোধ করি কিন্তু সে সকলের সামনে সব মেনে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে আবার জামেলা শুরু করে বলে অভিযোগ পাই।