খেলাপি ঋণ পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকা
- আপডেট সময় : ১০:১৯:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১০১ বার পড়া হয়েছে
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সমূহের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত এসব বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এসব ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতির পরিমাণ তিন লাখ ১২ হাজার ৫৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এ সময়ে এসব বেসরকারি ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৬১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা।
সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৫ শতাংশ। এ সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৪৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ঋণ স্থিতির পরিমাণ ৬৫ হাজার ৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২১ শতাংশ। খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৮১৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। মোট ঋণ স্থিতির পরিমাণ ৪৪ হাজার কোটি ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি প্রান্তিক অক্টোবর-ডিসেম্বর খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে।
তারা ধারণা করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো ভুয়া দলিল ও অনিয়মের মাধ্যমে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর এই ঋণের একটি অংশ খেলাপিতে পরিণত হবে।
তারা বলেন, শুধু এস আলম ও তার সহযোগীরা একাই ছয়টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ঋণ মন্দ ঋণে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে চান না। তাদের এই প্রবণতা মন্দ ঋণের বোঝা আরও বাড়াতে পারে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা অধিকাংশ ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে, ফলে এসব ঋণ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির পরামর্শে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সাবেক সরকার।
আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ শতাংশ। এখন সকল প্রাক্কলনই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।