ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

গৃহদাহে পুড়ছে এলডিপি

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ৪০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ও আসন সমঝোতা নিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) চলছে চরম গৃহদাহ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক এই দলটিতে এখন ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের একটি বড় অংশ জামায়াত ইসলামীর নেতৃত্বাধীন নতুন জোটে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একাধিক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
দলীয় সূত্র জানায়, আসন বণ্টন ইস্যুতে এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এবং মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের একচ্ছত্র আধিপত্যে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন সিনিয়র নেতাদের একাংশ। তারা অভিযোগ করছেন, দীর্ঘদিন ধরে দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে একনায়কতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছেন এই দুই নেতা। মনোনয়ন ঘোষণাকে ঘিরে সেই ক্ষোভ এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, অলি আহমদের জন্য চট্টগ্রাম-১৪ এবং রেদোয়ান আহমেদের জন্য কুমিল্লা-৭ আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু দলের অন্যান্য নেতাদের জন্য কোনো আসন নির্ধারণ না হওয়ায় প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ জেলা পর্যায়ের অনেকেই এখন বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম খুঁজছেন। জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে নতুন জোটে যাওয়ার বিষয়ে এই অংশের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও একটি সূত্র দাবি করেছে।
দলটির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অলি সাহেব এখন এককভাবে সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আমরা কেউ জানি না বিএনপির সঙ্গে কত আসনে সমঝোতা হয়েছে। আমাদের মতামত না নিয়েই সব কিছু হচ্ছে। এতে আমাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই মনে করছেন, বিএনপি এবার শরিকদের তেমন গুরুত্ব দেবে না। সেক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামি দলগুলোর জোটের সঙ্গে যুক্ত হওয়াই কৌশলগতভাবে ভালো হবে।
এদিকে দলের ভেতরে বাড়তে থাকা অসন্তোষের বিষয়ে জানতে এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল হিসেবে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। ১৫টি আসন চেয়েছি, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি।
দলের ভেতরে বিভাজন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘বিভাজন বলতে কিছু অতি উৎসাহী লোকজন আছেন, যারা বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছু মন্তব্য করেছেন। আমরা তাদের সতর্ক করেছি। দুই-একদিনের মধ্যে বৈঠকে বসে সবকিছু ঠিক করে ফেলবো।
সূত্র মতে, বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর শরিক দলগুলোর মধ্যে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, এলডিপি তারই একটি প্রতিফলন। বিশেষ করে জামায়াত ইসলামীর নতুন উদ্যোগে শরিক দলগুলোকে একত্র করার প্রচেষ্টা এখন এই ভাঙনের পেছনে প্রভাব ফেলছে।
আগামী সপ্তাহের মধ্যে এলডিপির ভেতরে এই অস্থিরতা আরও স্পষ্ট হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দলের একাংশ যদি সত্যিই জামায়াতের জোটে যোগ দেয়, তাহলে এটি হবে বিএনপির যুগপৎ মিত্র কাঠামোতে প্রথম বড় ধরনের ভাঙ্গন।
কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে (এলডিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলডিপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম এমনটা আশঙ্কা করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলডিপি প্রধান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে কয়েকশ রাজনৈতিক দল রয়েছে। তার মধ্যে আরেকটা হবে। প্রত্যেকটা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে সংঘটিত হওয়ার। তবে শাহাদত হোসেন সেলিম বিএনপির প্রতি দুর্বল। তিনি আগের দলের যোগ দেবেন বলে এর আগে জানিয়েছেন। এমনকি তার নিজ এলাকায় এলডিপির কমিটি নেই,’ বললেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ।
সেলিম এলডিপি নামেই সংঘটিতে হচ্ছেন বলে জানতে চাইলে কর্নেল (অব.) অলি বলেন, এলডিপি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। আর নিবন্ধনে আমিই হচ্ছি দরখাস্তকারী। অন্য কেউ এই নাম নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এছাড়া যারা তার সঙ্গে যাচ্ছেন, তাদের অনেকেই আমার দলের সাধারণ সদস্যও না বলে দাবি করেন তিনি।
উদহারণ হিসেবে তিনি বলেন, আবদুল করিম আব্বাসী, আবদুল গণি, প্রফেসর আবদুল্লাহর সঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। মনোনয়ন না পাওয়ায় তারা আমাকে বলেছেন আর রাজনীতি করবেন না। পরবর্তী পর্যায়ে তারা তিনজন আমার কাছে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেছেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক এলডিপির এই নেতা বলেন, আমি সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি। কাজেই তারা এলডিপির সদস্য না।
দলটির নতুন কমিটি থেকে যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমকে বাদ দেয়ার পর দলটির ভেতর সংকট তৈরি হয়েছে। কমিটি থেকে বাদ পড়ার পর এবার তিনি দল ছেড়ে দেয়ারই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম বলেন, দলের ভেতর স্বৈরাচারী, অগণতান্ত্রীক ও স্বেচ্ছাচারী আচরণের কারণে আমি বেরিয়ে যাচ্ছি।
গত ৯ নভেম্বর ২০৩ সদস্য বিশিষ্ট দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির তালিকা প্রকাশ করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। গত সাত মাস ধরে দলের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার অভিযোগে দলটির ঘোষিত এই কমিটিতে এই সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবকে রাখা হয়নি। এ কারণে তিনিসহ এলডিপির বেশ কয়েক নেতা খুব শিগগিরই বিএনপিতে যোগ দেবেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এ প্রতিবেদককে সেলিম বলেন, বিএনপিতে যোগ দেব কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখনই না। আগে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে আরও জোরদার করি। নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হই, তারপর দলীয়ভাবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।
অপরদিকে আর সেলিম দল থেকে বের হয়ে গেলে এলডিপি ভাঙনের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে শাহাদাত হোসেন সেলিমকে দলে কোনো পদে না রাখলেও এলডিপি থেকে বহিষ্কার করা হয়নি।
গত ৯ নভেম্বর অলি আহমদের স্বাক্ষরে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি গঠনের বিষয় জানানো হয়। এলডিপির মহাসচিব হয়েছেন রেদোয়ান আহমেদ। আর ১৭ জন সভাপতিম-লী, ২১ জন সহসভাপতি, ২১ জন উপদেষ্টাম-লী, সাতজন যুগ্ম মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ, সম্পাদকীয়, সহসম্পাদকীয়সহ ১২৬ সদস্যের নির্বাহী সদস্যের নামও প্রকাশ করা হয়েছে ওই তালিকায়। সেলিমকে পদে না রাখার বিষয়ে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বলেন, গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে শাহাদাত হোসেন সেলিম দলের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
তিনি বলেন, আর আমাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে যারা দলের সঙ্গে ও দলীয় কাজে সম্পৃক্ত নেই, তাদের পদে রাখা হবে না। আর এলডিপি সভাপতিকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সভা দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনিই। সেলিম গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে এলডিপির প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। এ বিষয়ে রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমরা সেলিমকে কোনো পদে রাখি নাই। কিন্তু তাকে তো দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। তিনি এখনো এলডিপির একজন সদস্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গৃহদাহে পুড়ছে এলডিপি

আপডেট সময় :

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ও আসন সমঝোতা নিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) চলছে চরম গৃহদাহ। বিএনপি নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক এই দলটিতে এখন ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের একটি বড় অংশ জামায়াত ইসলামীর নেতৃত্বাধীন নতুন জোটে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একাধিক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
দলীয় সূত্র জানায়, আসন বণ্টন ইস্যুতে এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এবং মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের একচ্ছত্র আধিপত্যে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন সিনিয়র নেতাদের একাংশ। তারা অভিযোগ করছেন, দীর্ঘদিন ধরে দলীয় গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে একনায়কতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছেন এই দুই নেতা। মনোনয়ন ঘোষণাকে ঘিরে সেই ক্ষোভ এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, অলি আহমদের জন্য চট্টগ্রাম-১৪ এবং রেদোয়ান আহমেদের জন্য কুমিল্লা-৭ আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু দলের অন্যান্য নেতাদের জন্য কোনো আসন নির্ধারণ না হওয়ায় প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ জেলা পর্যায়ের অনেকেই এখন বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম খুঁজছেন। জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে নতুন জোটে যাওয়ার বিষয়ে এই অংশের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও একটি সূত্র দাবি করেছে।
দলটির এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অলি সাহেব এখন এককভাবে সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আমরা কেউ জানি না বিএনপির সঙ্গে কত আসনে সমঝোতা হয়েছে। আমাদের মতামত না নিয়েই সব কিছু হচ্ছে। এতে আমাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই মনে করছেন, বিএনপি এবার শরিকদের তেমন গুরুত্ব দেবে না। সেক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামি দলগুলোর জোটের সঙ্গে যুক্ত হওয়াই কৌশলগতভাবে ভালো হবে।
এদিকে দলের ভেতরে বাড়তে থাকা অসন্তোষের বিষয়ে জানতে এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল হিসেবে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। ১৫টি আসন চেয়েছি, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি।
দলের ভেতরে বিভাজন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘বিভাজন বলতে কিছু অতি উৎসাহী লোকজন আছেন, যারা বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছু মন্তব্য করেছেন। আমরা তাদের সতর্ক করেছি। দুই-একদিনের মধ্যে বৈঠকে বসে সবকিছু ঠিক করে ফেলবো।
সূত্র মতে, বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর শরিক দলগুলোর মধ্যে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, এলডিপি তারই একটি প্রতিফলন। বিশেষ করে জামায়াত ইসলামীর নতুন উদ্যোগে শরিক দলগুলোকে একত্র করার প্রচেষ্টা এখন এই ভাঙনের পেছনে প্রভাব ফেলছে।
আগামী সপ্তাহের মধ্যে এলডিপির ভেতরে এই অস্থিরতা আরও স্পষ্ট হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দলের একাংশ যদি সত্যিই জামায়াতের জোটে যোগ দেয়, তাহলে এটি হবে বিএনপির যুগপৎ মিত্র কাঠামোতে প্রথম বড় ধরনের ভাঙ্গন।
কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে (এলডিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলডিপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম এমনটা আশঙ্কা করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলডিপি প্রধান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে কয়েকশ রাজনৈতিক দল রয়েছে। তার মধ্যে আরেকটা হবে। প্রত্যেকটা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে সংঘটিত হওয়ার। তবে শাহাদত হোসেন সেলিম বিএনপির প্রতি দুর্বল। তিনি আগের দলের যোগ দেবেন বলে এর আগে জানিয়েছেন। এমনকি তার নিজ এলাকায় এলডিপির কমিটি নেই,’ বললেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ।
সেলিম এলডিপি নামেই সংঘটিতে হচ্ছেন বলে জানতে চাইলে কর্নেল (অব.) অলি বলেন, এলডিপি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। আর নিবন্ধনে আমিই হচ্ছি দরখাস্তকারী। অন্য কেউ এই নাম নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এছাড়া যারা তার সঙ্গে যাচ্ছেন, তাদের অনেকেই আমার দলের সাধারণ সদস্যও না বলে দাবি করেন তিনি।
উদহারণ হিসেবে তিনি বলেন, আবদুল করিম আব্বাসী, আবদুল গণি, প্রফেসর আবদুল্লাহর সঙ্গে গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। মনোনয়ন না পাওয়ায় তারা আমাকে বলেছেন আর রাজনীতি করবেন না। পরবর্তী পর্যায়ে তারা তিনজন আমার কাছে পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেছেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক এলডিপির এই নেতা বলেন, আমি সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি। কাজেই তারা এলডিপির সদস্য না।
দলটির নতুন কমিটি থেকে যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমকে বাদ দেয়ার পর দলটির ভেতর সংকট তৈরি হয়েছে। কমিটি থেকে বাদ পড়ার পর এবার তিনি দল ছেড়ে দেয়ারই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম বলেন, দলের ভেতর স্বৈরাচারী, অগণতান্ত্রীক ও স্বেচ্ছাচারী আচরণের কারণে আমি বেরিয়ে যাচ্ছি।
গত ৯ নভেম্বর ২০৩ সদস্য বিশিষ্ট দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির তালিকা প্রকাশ করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। গত সাত মাস ধরে দলের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকার অভিযোগে দলটির ঘোষিত এই কমিটিতে এই সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবকে রাখা হয়নি। এ কারণে তিনিসহ এলডিপির বেশ কয়েক নেতা খুব শিগগিরই বিএনপিতে যোগ দেবেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে। তবে এ প্রতিবেদককে সেলিম বলেন, বিএনপিতে যোগ দেব কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখনই না। আগে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে আরও জোরদার করি। নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হই, তারপর দলীয়ভাবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।
অপরদিকে আর সেলিম দল থেকে বের হয়ে গেলে এলডিপি ভাঙনের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে শাহাদাত হোসেন সেলিমকে দলে কোনো পদে না রাখলেও এলডিপি থেকে বহিষ্কার করা হয়নি।
গত ৯ নভেম্বর অলি আহমদের স্বাক্ষরে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি গঠনের বিষয় জানানো হয়। এলডিপির মহাসচিব হয়েছেন রেদোয়ান আহমেদ। আর ১৭ জন সভাপতিম-লী, ২১ জন সহসভাপতি, ২১ জন উপদেষ্টাম-লী, সাতজন যুগ্ম মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ, সম্পাদকীয়, সহসম্পাদকীয়সহ ১২৬ সদস্যের নির্বাহী সদস্যের নামও প্রকাশ করা হয়েছে ওই তালিকায়। সেলিমকে পদে না রাখার বিষয়ে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বলেন, গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে শাহাদাত হোসেন সেলিম দলের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
তিনি বলেন, আর আমাদের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে যারা দলের সঙ্গে ও দলীয় কাজে সম্পৃক্ত নেই, তাদের পদে রাখা হবে না। আর এলডিপি সভাপতিকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সভা দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনিই। সেলিম গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে এলডিপির প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন। এ বিষয়ে রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমরা সেলিমকে কোনো পদে রাখি নাই। কিন্তু তাকে তো দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। তিনি এখনো এলডিপির একজন সদস্য।