ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::

চট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী এসআই কামাল এখন শ্রেষ্ঠ মাদক কারবারি

দেলোয়ার হোসেন রশিদী, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)
  • আপডেট সময় : ৩৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বাজারে শতাধিক ফেনসিডিল বোতলসহ তিন পুলিশ সোর্সকে আটক করেছে ছাত্র-জনতা। গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টায় এ ঘটনা ঘটে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, লোহাগাড়া থানা পুলিশের চেকপোস্টে বিভিন্ন সময় উদ্ধারকৃত কিছু মাদক পুলিশ ও সোর্সের মাধ্যমে পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগরে পাচার হবে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার চুনতি বাজার এলাকার স্থানীয় ছাত্রজনতা ও যুবকরা বিকাল ৪টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাহারা দেয়। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে চকলেট কালারের একটি প্রাইভেট কার চুনতি বাজারে পৌঁছলে স্থানীয়রা ঘিরে ধরে। ফেসবুক লাইভে গিয়ে গাড়িটি তল্লাশি করে। শতাধিক ফেনসিডিল বোতলসহ তিনজনকে আটক করে সেনাবাহিনীকে খবর দেয় ছাত্র জনতা।
আটককৃতরা হলো পুলিশের কথিত সোর্স রমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন ও তাজরুল ইসলাম। রমিজ উদ্দিন ও নাজিম উদ্দিনের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলায়। তাজরুলের বাড়ি কুমিল্লায় বলে জানা গেছে।
এমডি পারভেজ নামক একজনের ফেসবুক লাইভে দেখা যাচ্ছে পুলিশের সোর্স রমিজ অকপটে স্বীকার করছেন মাদকগুলো লোহাগাড়া থানা পুলিশের এসআই কামাল উদ্দীনের বাসা থেকে গাড়িতে তোলা হয়েছে। তিনি এ কাজে এসআই কামাল উদ্দীনের সম্পৃক্ততার কথা বারবার বলছেন।
জোবাইর ইসলাম নামের একজন ফেসবুকে আটক তিনজনের স্বীকারোক্তি শেয়ার করে লিখেন, ‘বিশ্বস্ত লোকের মাধ্যমে জানতে পারি থানা থেকে জব্দকৃত মাদক পাচার করা হবে। স্থানীয় ছাত্র-জনতা বিকাল ৪টা থেকে রাত পর্যন্ত পাহারা দিয়ে আটক করতে সক্ষম হয়। চকলেট কালারের গাড়িটি আটক করতে পারলেও পেছনে থাকা সাদা কালারের গাড়িটি আটকাতে পারেনি। ওই গাড়িতে লোহাগাড়া থানার এসআই কামাল উদ্দিন ছিলেন। এ গাড়িতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ছিল’ বলে দাবি করেন জোবাইর ইসলাম।
পুলিশ সোর্স রমিজ উদ্দিন স্বীকার করেন, এসআই কামাল তাদের জব্দকৃত ফেনসিডিলগুলো দিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী পার্বত্য লামা উপজেলার আজিজ নগরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
রাতেই আটককৃতদের সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা। পরে সেনাবাহিনী তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানায় হস্তান্তর করেন। আটক তিনজনের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু হয় লোহাগাড়া থানায়। এবং এসআই কামালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত এসআই কামাল উদ্দিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’ তবে কারা এ ষড়যন্ত্রে জড়িত, এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
লোহাগাড়া থানার ওসি (তদন্ত) রবিউল আলম খান বলেন, ‘আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু বলা যাবে না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী এসআই কামাল এখন শ্রেষ্ঠ মাদক কারবারি

আপডেট সময় :

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বাজারে শতাধিক ফেনসিডিল বোতলসহ তিন পুলিশ সোর্সকে আটক করেছে ছাত্র-জনতা। গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টায় এ ঘটনা ঘটে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, লোহাগাড়া থানা পুলিশের চেকপোস্টে বিভিন্ন সময় উদ্ধারকৃত কিছু মাদক পুলিশ ও সোর্সের মাধ্যমে পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগরে পাচার হবে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার চুনতি বাজার এলাকার স্থানীয় ছাত্রজনতা ও যুবকরা বিকাল ৪টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাহারা দেয়। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে চকলেট কালারের একটি প্রাইভেট কার চুনতি বাজারে পৌঁছলে স্থানীয়রা ঘিরে ধরে। ফেসবুক লাইভে গিয়ে গাড়িটি তল্লাশি করে। শতাধিক ফেনসিডিল বোতলসহ তিনজনকে আটক করে সেনাবাহিনীকে খবর দেয় ছাত্র জনতা।
আটককৃতরা হলো পুলিশের কথিত সোর্স রমিজ উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন ও তাজরুল ইসলাম। রমিজ উদ্দিন ও নাজিম উদ্দিনের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলায়। তাজরুলের বাড়ি কুমিল্লায় বলে জানা গেছে।
এমডি পারভেজ নামক একজনের ফেসবুক লাইভে দেখা যাচ্ছে পুলিশের সোর্স রমিজ অকপটে স্বীকার করছেন মাদকগুলো লোহাগাড়া থানা পুলিশের এসআই কামাল উদ্দীনের বাসা থেকে গাড়িতে তোলা হয়েছে। তিনি এ কাজে এসআই কামাল উদ্দীনের সম্পৃক্ততার কথা বারবার বলছেন।
জোবাইর ইসলাম নামের একজন ফেসবুকে আটক তিনজনের স্বীকারোক্তি শেয়ার করে লিখেন, ‘বিশ্বস্ত লোকের মাধ্যমে জানতে পারি থানা থেকে জব্দকৃত মাদক পাচার করা হবে। স্থানীয় ছাত্র-জনতা বিকাল ৪টা থেকে রাত পর্যন্ত পাহারা দিয়ে আটক করতে সক্ষম হয়। চকলেট কালারের গাড়িটি আটক করতে পারলেও পেছনে থাকা সাদা কালারের গাড়িটি আটকাতে পারেনি। ওই গাড়িতে লোহাগাড়া থানার এসআই কামাল উদ্দিন ছিলেন। এ গাড়িতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ছিল’ বলে দাবি করেন জোবাইর ইসলাম।
পুলিশ সোর্স রমিজ উদ্দিন স্বীকার করেন, এসআই কামাল তাদের জব্দকৃত ফেনসিডিলগুলো দিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী পার্বত্য লামা উপজেলার আজিজ নগরে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
রাতেই আটককৃতদের সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা। পরে সেনাবাহিনী তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানায় হস্তান্তর করেন। আটক তিনজনের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু হয় লোহাগাড়া থানায়। এবং এসআই কামালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত এসআই কামাল উদ্দিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’ তবে কারা এ ষড়যন্ত্রে জড়িত, এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
লোহাগাড়া থানার ওসি (তদন্ত) রবিউল আলম খান বলেন, ‘আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু বলা যাবে না।’