সংবাদ শিরোনাম ::
চাপাই নবাবগঞ্জ কারাগারে জেলার এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

রাজশাহী ব্যুরো
- আপডেট সময় : ১২:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৫ বার পড়া হয়েছে
চাপাই নবাবগঞ্জ কারাগারের বন্দীদের জন্য টাকা লেনদেনের প্রিজনার্স ক্যাশ (পিসি) থেকে প্রতিদিন টাকা লোপাট করা হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে জেলার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। তথ্য প্রমান হিসেবে গণমাধ্যমের হাতে এসেছে হুয়াটসএ্যাপে কথোপকথনের কিছু স্ক্রীনশট।
গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে সাংবাদিকের ফোনে ঐ স্ক্রীনশট দেয়া হয়েছে। পরে ফোন কলে (হুয়াটসএ্যাপে) বিস্তারিত জানান। এব্যাপারে সূত্রটি বলছে, প্রতিদিন জেলার জাকির হোসেন কমিশন হিসেবে এভাবে পিসি থেকে টাকা নিচ্ছেন। সূত্রটি আরও বলেছেন, ব্যাপারটি হাতে নাতে ধরতে হলে যেতে হবে চাপাই নবাবগঞ্জ কারাগারে। সেখানে পিসিতে টাকা লেনদেনের রশিদ ও জেলার এর প্রতিদিনের হিসেবের খাতা দেখলেই পরিষ্কার হবে টাকা উধাও হওয়ার তথ্য। স্ক্রীনশট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গত জানুয়ারি মাসে পিসি’র দ্বায়িত্বে ছিলেন কারারক্ষী মিঠুন। তার কারারক্ষী নাম্বার ৩২৬১৫। তিনি দ্বায়িত্বে থাকাকালীন প্রতিদিনের পিসি’র টাকা গ্রহন ও প্রদানের হিসাব জেলার এর হুয়াটসএ্যাপে দেন। ঐ ক্ষুদেবার্তায় তিনি লিখেছেন ” আসসালামু আলাইকুম স্যার, তারিখ ১৫/০১/২৫ খ্রীঃ পি.সি মোট=৩৩১০০ টাকা নগদ মোট=৪০০০ টাকা আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো হলো। বাদ দেওয়া হয়েছে ৫,০০০ টাকা। ঐ বার্তাটি গত ১৫ জানুয়ারি বিকাল ৪:০৪ মিনিটের। এরকম প্রায় দুই মাসের পিসি হিসাবের স্ক্রীনশট দেয়া হয়েছে। সূত্রটি আরও বলছে, এমন দুর্নীতির তথ্য বর্তমান ডিআইজি কামাল হোসেনের জানা। তিনি কোন পদক্ষেপ নেন না, কারন জেলার জাকির হোসেন ডিআইজি’র অত্যান্ত আস্থাভাজন কর্মকর্তা। কারন রাজশাহী বিভাগে কারাগার নিয়ে কোন সমস্যা হলেই তদন্তের দ্বায়িত্ব দেয়া হয় এই জাকির হোসেনকে। তাই এই ডিআইজি থাকাকালীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না, এমনটায় ব্যক্ত করেছেন অসংখ্য ভুক্তভোগী কারারক্ষী। বরং ডিআইজি’র ব্যাপারে কেউ মুখ খুললেই তার চাকরি চলে যায়। এমন ভুক্তভোগীও রয়েছে রাজশাহী প্রিজন্সে। তাই তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহসও করেনা।
সূত্রটির সাথে কথা শেষ হলে মুঠোফোনে কথা হয় ডিআইজি প্রিজন্স কামাল হোসেনের সাথে। চাপাই কারাগারে টাকা লোপাটের কথা জানালে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নাই। আপনি জেলার জাকির হোসেনের সাথে কথা বলেন। আপনি তার থেকে বক্তব্য নেন। আপনার কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে আমাকে দিবেন আমি ব্যবস্থা নিব। পরে কুশল বিনিময় করে ফোন রেখে দেন।
পরে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে যোগাযোগ করা হয় ৩২৬১৫ কারারক্ষী মিঠুন এর সাথে। তিনি বলেন, এই ধরনের তথ্য সঠিক নয়। আপনার ফোন কখনও হ্যাক হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে, তিনি না উত্তর দেন। আপনার মুঠোফোনের কথোপকথনের কিছু স্ক্রীনশট আমাদের হাতে এসেছে বললে তিনি বলেন, আপনি জেল গেটে এসে আমার সাথে দেখা করেন। মিঠুনকে বলা হয়, আপনি জেলার এর বডিগার্ড সারোয়ারকে টাকা দিয়েছেন এমন ক্ষুদেবার্তা জেলার কে দিয়েছেন, এমন তথ্য লিখেছেন, আপনি সারোয়ারকে কেন টাকা দিলেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জেল গেটে সরাসরি দেখা করতে বলেন। এরপর পিসির দ্বায়িত্বে থাকা আরেক কারারক্ষী নাইস এর সাথে কথা হয়। তার কারারক্ষী নাম্বার ৩২৫৪২। তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন যে টাকা গ্রহন করি সেটি জেলার স্যারের কাছে জমা দিই। কোন বন্দী টাকা পাইনি এমন কোন অভিযোগ আছে কিনা? উল্টো প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান নাইস। পরে প্রতিবেদক তাকে এই ধরনের ঘটনা না বলে আশ্বস্ত করেন।
এব্যাপারে চাপাই নবাবগঞ্জ কারাগারে জেলার জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন, আপনারা সংবাদ প্রাকাশ করলে সত্যতা নিয়ে করবেন। আপনাদের কাছে কে অভিযোগ করেছে তার নাম বলেন? নাম বললে তো তার ক্ষতি করবেন! তাই তার নাম বলা যাবে না। এভাবে কিছুক্ষণ প্রতিবেদকের সাথে মুঠোফোনে বিতর্কে জড়ান। এরপর আমি ব্যস্ত আছি অযথা বিরক্ত করবেন না বলে ফোন রেখে দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জেল সুপারের সাথে। তিনি বলেন, ভাই আমি এই কারাগারে নতুন যোদগদান করেছি। আমি এখনও সকল কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। আমার দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা কথা বলতে পারছিনা। আপনি পরে যোগাযোগ করবেন বলে ফোন রেখে দেন।