ঢাকা ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বান্দরবানে জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন Logo জয়পুরহাটে ঝুঁকিপূর্ণ গাছের ডালপালা ছাঁটাই স্থগিত করেছে নেসকো Logo গাইবান্ধা সদর আসনে মাঠ-ময়দানে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর Logo কোম্পানীগঞ্জে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত Logo টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী মাহত আমিন গ্রেপ্তার Logo জনগণই বিএনপির শক্তি-বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম Logo আগুনে পুড়ে সর্বস্ব হারানো জুয়েল মিয়ার পাশে কুড়িগ্রাম জেলা চর উন্নয়ন কমিটি Logo জুড়ীতে বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা Logo স্বতন্ত্র নার্সিং প্রশাসন রক্ষার দাবিতে কুড়িগ্রামে নার্সদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়ে তুলতে সংগ্রাম চলবেই

চিকিৎসকদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১৯৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে এক দফা দাবি পূরণ হলেও বাকি চার দফা দাবি আদায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চিকিৎসকরা। তাদের এই পদযাত্রা দোয়েল চত্বরে যেতেই বাধা দেয় পুলিশ। তবে সেখান থেকে বাধা উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগুতে থাকেন চিকিৎসকরা। পরে হাইকোর্ট মোড় হয়ে শিক্ষাভবনের সামনে গেলে সেখানে আগে থেকেই দেওয়া পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে যায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পদযাত্রা। আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আজ যদি চিকিৎসকদের সঙ্গে খারাপ কিছু হয়, এর দায়ভার ডা. সাইদুর রহমান এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে নিতে হবে। বাকি চার দফা দাবি পূরণ না হলে আমরা ঘরে যাবো না। ডা. হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, আমাদের পাঁচ দফার এক দফা পূরণ হয়েছে। পাঁচ দফা আদায় করতেই হবে। গতকাল বুধবার দুপর ১টা ২০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করেন চিকিৎসকরা। দোয়েল চত্বরে এলে পুলিশ তাদের অনুরোধ করে, সবাই না গিয়ে প্রতিনিধি পাঠাতে। কিন্তু চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দোয়েল চত্বর পার হয়ে যান। পরে শিক্ষাভবনের সামনে চিকিৎসকদের পদযাত্রা আটকে দেয় পুলিশ। এর আগে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন চিকিৎসকরা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ কর্মসূচিতে চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি হলো-
১. এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া কেউ ‘চিকিৎসক’ লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এ ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনও ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতি বছর চার থেকে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৪. সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। এরই মধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তায় চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এ ক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য যে, ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে চিকিৎসক সমাজের প্রতিবাদের মুখে সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, যা আজ সাত মাস পেরিয়েও কোনও আলোর মুখ দেখেনি। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চিকিৎসকদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

আপডেট সময় :

হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে এক দফা দাবি পূরণ হলেও বাকি চার দফা দাবি আদায়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন চিকিৎসকরা। তাদের এই পদযাত্রা দোয়েল চত্বরে যেতেই বাধা দেয় পুলিশ। তবে সেখান থেকে বাধা উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগুতে থাকেন চিকিৎসকরা। পরে হাইকোর্ট মোড় হয়ে শিক্ষাভবনের সামনে গেলে সেখানে আগে থেকেই দেওয়া পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে যায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পদযাত্রা। আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আজ যদি চিকিৎসকদের সঙ্গে খারাপ কিছু হয়, এর দায়ভার ডা. সাইদুর রহমান এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে নিতে হবে। বাকি চার দফা দাবি পূরণ না হলে আমরা ঘরে যাবো না। ডা. হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, আমাদের পাঁচ দফার এক দফা পূরণ হয়েছে। পাঁচ দফা আদায় করতেই হবে। গতকাল বুধবার দুপর ১টা ২০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করেন চিকিৎসকরা। দোয়েল চত্বরে এলে পুলিশ তাদের অনুরোধ করে, সবাই না গিয়ে প্রতিনিধি পাঠাতে। কিন্তু চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দোয়েল চত্বর পার হয়ে যান। পরে শিক্ষাভবনের সামনে চিকিৎসকদের পদযাত্রা আটকে দেয় পুলিশ। এর আগে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন চিকিৎসকরা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ কর্মসূচিতে চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি হলো-
১. এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া কেউ ‘চিকিৎসক’ লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে হাসিনা সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এ ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস বা বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরের ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরের কোনও ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সব শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে আগের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতি বছর চার থেকে পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকদের বিসিএসে বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৪. সব মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করতে হবে। এরই মধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তায় চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা। এ ক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য যে, ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে চিকিৎসক সমাজের প্রতিবাদের মুখে সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, যা আজ সাত মাস পেরিয়েও কোনও আলোর মুখ দেখেনি। চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।