ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

আইআইইউসি’রর জুলাই শহীদ দিবস পালন অনুষ্ঠান

জুলাই-যোদ্ধাদের স্বার্থহীন আত্মত্যাগে মানবতা মুক্তি পায় : ভিসি ড. আলী আজাদী

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১৫৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী বলেছেন, জুলাই-যোদ্ধাদের স্বার্থহীন আত্মত্যাগে মানবতা মুক্তি পায়। দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ জুলাই-যোদ্ধারাই সুগম করে। জুলাই-যোদ্ধারা সাহস না দেখালে জাতির ঘাড় থেকে ফ্যাসিবাদের জগদ্দল পাথর নামানো সম্ভব ছিলনা। জুলাইয়ে মানুষ অবর্ণনীয় নিষ্ঠুর করাল গ্রাস থেকে মুক্তি লাভ করে। তিনি বলেন, একটা সমাজ যখন অসভ্যতার দিকে এগোতে থাকে তখন ওই সমাজে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অন্যায়গুলোর অন্যতম অন্যায় হলো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘‘যে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলো সে যেন পুরো পৃথিবীকে হত্যা করলো, আর যে একজন নিরপরাধ মানুষকে বাঁচিয়ে দিল সে যেন পুরো পৃথিবীকে হত্যার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিল।’’ যদি আমরা জুলাইয়ের চেতনাকে সত্যিকার অর্থে ধারণ করতে পারি, তাহলে ফ্যাসিবাদ কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। আইআইইউসি’র জুলাই যোদ্ধা শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, জাতীয় ইতিহাসের এই মহান আন্দোলনে আইআইইউসি’র শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাদের অবদান নিয়ে আইআইইউসি একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হবে বলে ভিসি ড. আলী আজাদী ঘোষণা দেন।

গতকাল বুধবার আইআইইউসি আয়োজিত ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি’র ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসান উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি রেজিস্ট্রার কর্নেল মোহাম্মদ কাশেম, পিএসসি (অব.)। জুলাই যোদ্ধা শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ফরেন ল্যাংগুয়েজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও আবৃত্তিশিল্পী ইকবাল হোসেন এবং পারচেজ অ্যান্ড প্রোকিউরমেন্ট ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মাহমুদুল আলম। আইআইইউসি’র জুলাই যোদ্ধা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেনি আকতার, আদিবা ইবনাথ, মীর আফিফুল ইসলাম, রিয়াজুল হক ও আবিদ বিন গফুর। অনুষ্ঠানে আইআইইউসি নির্মিত জুলাই জাগরণের একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সংগীত পরিবেশন করে শিক্ষার্থী আশিক ইলাহি।

জুলাই শহীদদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও শরিয়াহ অনুষদের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম ভূঁইয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইআইইউসির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আলী আজাদী বলেন, গত ১৬ বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো ও ঘৃণিত অধ্যায় হিসেবে নিন্দিত হয়ে থাকবে। ওই সময়ে মানুষের মুখ বন্ধ ছিল। দমবন্ধ করা একটি ভীতিকর পরিবেশ ছিল। জুলাই যোদ্ধারা আমাদের জন্য স্বস্তি নিয়ে এসেছেন। এই স্বস্তি অক্ষুণ্ন রাখতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। এই দেশ আমাদের। আমাদের মতো করেই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হবে। জুলাই যোদ্ধারা লুট হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে উদ্ধার করে দেশে শান্তির দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। এই অর্জনে তাদের অনেক অপবাদ সইতে হয়েছে। তাই তারা উদাত্ত কণ্ঠে স্লোগান দিয়েছিল, ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার।’ রাজাকার নয়, এরাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। এদের দেশপ্রেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। ওরা না হলে এই দেশ আমাদের থাকতো না। ওরাই আন্দোলনকে ফ্যাসিবাদ পতনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল এবং সফলও হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আইআইইউসি’রর জুলাই শহীদ দিবস পালন অনুষ্ঠান

জুলাই-যোদ্ধাদের স্বার্থহীন আত্মত্যাগে মানবতা মুক্তি পায় : ভিসি ড. আলী আজাদী

আপডেট সময় :

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী বলেছেন, জুলাই-যোদ্ধাদের স্বার্থহীন আত্মত্যাগে মানবতা মুক্তি পায়। দেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ জুলাই-যোদ্ধারাই সুগম করে। জুলাই-যোদ্ধারা সাহস না দেখালে জাতির ঘাড় থেকে ফ্যাসিবাদের জগদ্দল পাথর নামানো সম্ভব ছিলনা। জুলাইয়ে মানুষ অবর্ণনীয় নিষ্ঠুর করাল গ্রাস থেকে মুক্তি লাভ করে। তিনি বলেন, একটা সমাজ যখন অসভ্যতার দিকে এগোতে থাকে তখন ওই সমাজে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অন্যায়গুলোর অন্যতম অন্যায় হলো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘‘যে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করলো সে যেন পুরো পৃথিবীকে হত্যা করলো, আর যে একজন নিরপরাধ মানুষকে বাঁচিয়ে দিল সে যেন পুরো পৃথিবীকে হত্যার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিল।’’ যদি আমরা জুলাইয়ের চেতনাকে সত্যিকার অর্থে ধারণ করতে পারি, তাহলে ফ্যাসিবাদ কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। আইআইইউসি’র জুলাই যোদ্ধা শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, জাতীয় ইতিহাসের এই মহান আন্দোলনে আইআইইউসি’র শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাদের অবদান নিয়ে আইআইইউসি একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হবে বলে ভিসি ড. আলী আজাদী ঘোষণা দেন।

গতকাল বুধবার আইআইইউসি আয়োজিত ‘জুলাই শহীদ দিবস’ পালন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি’র ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসান উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি রেজিস্ট্রার কর্নেল মোহাম্মদ কাশেম, পিএসসি (অব.)। জুলাই যোদ্ধা শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ফরেন ল্যাংগুয়েজ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও আবৃত্তিশিল্পী ইকবাল হোসেন এবং পারচেজ অ্যান্ড প্রোকিউরমেন্ট ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মাহমুদুল আলম। আইআইইউসি’র জুলাই যোদ্ধা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেনি আকতার, আদিবা ইবনাথ, মীর আফিফুল ইসলাম, রিয়াজুল হক ও আবিদ বিন গফুর। অনুষ্ঠানে আইআইইউসি নির্মিত জুলাই জাগরণের একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সংগীত পরিবেশন করে শিক্ষার্থী আশিক ইলাহি।

জুলাই শহীদদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও শরিয়াহ অনুষদের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম ভূঁইয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইআইইউসির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আলী আজাদী বলেন, গত ১৬ বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো ও ঘৃণিত অধ্যায় হিসেবে নিন্দিত হয়ে থাকবে। ওই সময়ে মানুষের মুখ বন্ধ ছিল। দমবন্ধ করা একটি ভীতিকর পরিবেশ ছিল। জুলাই যোদ্ধারা আমাদের জন্য স্বস্তি নিয়ে এসেছেন। এই স্বস্তি অক্ষুণ্ন রাখতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। এই দেশ আমাদের। আমাদের মতো করেই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হবে। জুলাই যোদ্ধারা লুট হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে উদ্ধার করে দেশে শান্তির দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। এই অর্জনে তাদের অনেক অপবাদ সইতে হয়েছে। তাই তারা উদাত্ত কণ্ঠে স্লোগান দিয়েছিল, ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার।’ রাজাকার নয়, এরাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। এদের দেশপ্রেমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। ওরা না হলে এই দেশ আমাদের থাকতো না। ওরাই আন্দোলনকে ফ্যাসিবাদ পতনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল এবং সফলও হয়েছে।