জেলে পেশা ছেড়ে করলা চাষে সুবর্ণচরের চাষীদের ভাগ্যবদল
- আপডেট সময় : ১৭ বার পড়া হয়েছে
মাচায় মাচায় ঝুলছে স্বাদে তেতো, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিভাইরাল-সমৃদ্ধ করলা। এই সবজি চাষ করে ধীরে ধীরে ভাগ্য বদল করছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কৃষকরা। একসময়ে নদীতে জেলে পেশায় কাটতো উপকুলীয় সুবর্ণচরের অধিকাংশ শ্রমজীবী মানুষের সময়। নানা প্রতিকুলতা এবং নুন আনতে পান্তা ফুরানো সেই পরিবারগুলোতে এখন হাসি ফুটেছে করলা চাষে। জেলে পেশা ছেড়ে অনেকে এখন লাখপতি। স্থানীয় অনেক যুবকদের বেকারত্বও দূর হয়েছে করলা চাষে।
সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের ইমান আলী বাজারের পাশের এক করলা চাষী মো: রুহুল আমিন জানান, করলা চাষ করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রপ্তানি করে পুঁজি উঠিয়ে কয়েক গুণ লাভবান হচ্ছেন তিনি। গত বছর দেড় লক্ষ টাকা পুঁজি দিয়ে করলা বিক্রি করেছেন ৬ লক্ষ টাকার। এবছর গতবারের সারঞ্জামাদি থেকে যাওয়ায় করলা চাষে পুঁজি দিয়েছেন ১লক্ষ টাকা। আশানুরুপ পরিবেশ ও ন্যায্য দাম পেলে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার করলা বিক্রির আশা করছেন তিনি। তিনি এক সময় মেঘনা নদীতে মাছ ধরতেন। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারে এখন তিনি বছরে ৫-৬ লক্ষ টাকার রোজকার করছেন।
তারমতো একই মন্তব্য করেছেন একই ইউনিয়নের উত্তর চরবাগ্যা গ্রামের মোঃ হাসান জানান, তিনি ২ বছর আগে করলা চাষ শুরু করেন তিনি। ১৬০শতক জমিতে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা পুঁজি দেন, সেবছর পুঁজি উঠিয়ে তিনি ৪লক্ষ টাকা লাভ গুণেছেন। এবছর তিনি ৩২০ শতক জমিতে করলা চাষ করে ৩লক্ষ ৫০হাচার টাকা খরছ করে ৮-৯লক্ষ টাকা করলা বিক্রির আশা করছেন। তাদের মতো একই ভাবে করলা চাষ করেছেন, মোঃ জাফর উল্যাহ ও মধু মিয়াসহ আরও অনেকে। একসময়ের বেকার যুবকরাও এখন করলা কিংবা নানান জাতের সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। দেখছেন আশার আলো। অনাবাদি জমি ও ধান চাষের জমিতে দিন দিন সুবর্ণচরে জনপ্রিয় হচ্ছে করলা চাষ। ধানের তুলনায় করলা চাষে কৃষকরা ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশি লাভবান হচ্ছেন। ফলে ধান চাষের পরবর্তে করলা চাষ করছেন তারা।
সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, চলতি অর্থবছরে নোয়াখালীর ভুলুয়া নদীর তীরবর্তী সুবর্ণচরে পতিত জমিসহ ধানের জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি করলা চাষে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। চলতি অর্থবছরে সরকারি প্রণোদনায় ৯০ হেক্টর জমিসহ মোট তিন গুণের বেশি জমিতে করলা চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা । তার মতে, ২০০৫ সালে নবগঠিত সুবর্ণচর উপজেলা সবজি উৎপাদনে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও সুনাম কুডাচ্ছে।
















