ঢাকা ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আজীবন সম্মাননা পেলেন বিশ্বনন্দিত যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ এবং কিংবদন্তী অভিনেত্রী আনোয়ারা শ্রেষ্ঠ নায়ক সজল শ্রেষ্ঠ নায়িকা পরীমণি Logo শীর্ষ সন্ত্রাসীদের যুদ্ধক্ষেত্রে রূপ নিচ্ছে ঢাকা! Logo গুজব ও শঙ্কায় সারাদেশ Logo গোলাম মাওলা সেতু দ্রুত নির্মাণের দাবি: জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন Logo শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে প্রসাশনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo ‘আগামী দশ বছরের মধ্যে দেশের নেতৃত্ব দেবে রাজপথে থাকা তরুণেরা’ Logo ময়মনসিংহে ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন, দুই ঘন্টা চলাচল বন্ধ Logo সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ট্রাকের চাবি পেলেন তিমন চৌধুরী Logo ইসলামপুরে জাংক ফুড বিরোধী ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত Logo গোলাপগঞ্জে অপরাধ দমনে সক্রিয় পুলিশ, এক মাসে ১৫ মামলা নিস্পত্তি

টাঙ্গাইলে জমির জন্য সন্তানের নির্যাতনে প্রাণ হারালেন শতবর্ষী বৃদ্ধ

অলক কুমার দাস টাঙ্গাইল
  • আপডেট সময় : ২৭০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

টাঙ্গাইলে জমির জন্য সন্তানের নির্যাতনে প্রাণ হারালেন হযরত আলী (১০৬) নামের শতবর্ষী বৃদ্ধ। বাসাইল উপজেলা ফুলকি ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের হযরত আলীকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে মেয়ে, জামাতা আর নাতি ও নাতনির বিরুদ্ধে।

হযরত আলী জীবিত অবস্থায় পুলিশ, সাংবাদিক ও স্থানীয়দের কাছে তাকে হাত-পা বেঁধে কারা নির্যাতন করেছেন, তার বয়ান তুলে ধরেন। মেয়ে, মেয়ের জামাই, নাতি, নাতনি ছাড়াও তার ছেলে নির্যাতন করেছে বলেও জানান।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ মে হযরত আলীর মালিকাধীন ৫৩ শতাংশ জমি বাসাইল সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে ১৪৯৩ নং হেবা দলিল মূলে লিখে নেন ছোট মেয়ে ফরিদা বেগম, ১৪৯৪ দলিল মূলে ১২ শতাংশ নাতি মেহেদী হাসান আর ১৫০২ নং দলিল মূলে ১৮ শতাংশ নাতনি সোহেবা আক্তার কনা।

পরবর্তীতে হযরত আলী চলতি বছরের ২১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর থানার সিনিয়র সহ-জজ আদালতে ছোট মেয়ে ফরিদা বেগমের ১৪৯৩ নং দলিলে লিখে নেয়া ৫৩ শতাংশ জমির দলিল পন্ডের জন্য ১৪১ নং মোকদ্দমাসহ ২৪ মার্চ বাসাইল থানাসহ জজ আদালতে নাতি মেহেদী হাসানের ১৪৯৪ নং দলিল এর ১২ শতাংশ জমির দলিল পন্ডের জন্য ৫৩ নং আর নাতনি সোহেবা আক্তার কনার ১৫০২ নং দলিল এর ১৮ শতাংশ জমির দলিল পন্ডের জন্য ৫৪ নং মোকদ্দমা করেন।

হযরত আলীর ছেলে নওজেশ আলী বলেন, দুই বোন মারা গেলেও আমার দুই বোন জীবিত। ফরিদা আমার ছোট বোন। বাবার বয়স হওয়ার কারণে নিজ বাসস্থানে কম থাকতেন। বোনদের বাড়িসহ একেক এক সময় দীর্ঘদিনের জন্য বেড়াতে বের হতেন। বেশ কিছুদিন বাবা ওই বাড়িতে থাকায় আমার মেজ বোন ও আমার ছেলেরা বাবাকে আনতে ফরিদার বাড়িতে যান।

ফরিদার অসৎ উদ্দেশ্য থাকায় সে সময় বাবাকে বাড়ি আসতে দেয়নি। তার বাড়িতে রাখার সুযোগে বাবার হাত পা বেধে মারধর এবং আটক রেখে নির্যাতন চালিয়ে ৮৩ শতাংশ জমি লিখে নিয়েছে। জমি লিখে নেয়ার পরে গুরুতর অসুস্থ বাবাকে তারা বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে আমার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে রেখে যায়। বাবার মুখে তার ওপর চালানো নির্যাতনের কথা আমরা শুনি।

তিনি জানান, পরবর্তীতে ফরিদা, তার স্বামী নুরুল ইসলাম, আমার বড় বোনের ছেলে মেহেদী ও মেয়ে কনা হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালানোসহ জোড় করে জমি লিখে নেয়ার কথা জীবিত অবস্থায় বাবা বাসাইল থানার ওসি, সাংবাদিকসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছেন। এছাড়াও লিখে নেয়া ৮৩ জমির দলিল পন্ডের মোকদ্দমাও করেন। বাবা মোকদ্দমা করার পর থেকে ফরিদা মামলাসহ নানা ভাবে আমাদের হয়রানী করছে। ওই নির্যাতনে কারণে আর আতঙ্কে আমার বাবা মারা গেছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল আমীন বলেন, হযরত আলী থানায় এসে আমার কাছে তার মেয়ে কর্তৃক নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে অবগত করেছিলেন। তখন তিনি কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। পরবর্তীতে জমিজমার ঝামেলা নিয়ে ওনার মেয়ে ও জামাতাও থানায় অভিযোগ দেন। এরমধ্যে বৃদ্ধ মারা গেছেন বলে শুনেছি। ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

টাঙ্গাইলে জমির জন্য সন্তানের নির্যাতনে প্রাণ হারালেন শতবর্ষী বৃদ্ধ

আপডেট সময় :

 

টাঙ্গাইলে জমির জন্য সন্তানের নির্যাতনে প্রাণ হারালেন হযরত আলী (১০৬) নামের শতবর্ষী বৃদ্ধ। বাসাইল উপজেলা ফুলকি ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের হযরত আলীকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করে জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে মেয়ে, জামাতা আর নাতি ও নাতনির বিরুদ্ধে।

হযরত আলী জীবিত অবস্থায় পুলিশ, সাংবাদিক ও স্থানীয়দের কাছে তাকে হাত-পা বেঁধে কারা নির্যাতন করেছেন, তার বয়ান তুলে ধরেন। মেয়ে, মেয়ের জামাই, নাতি, নাতনি ছাড়াও তার ছেলে নির্যাতন করেছে বলেও জানান।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ মে হযরত আলীর মালিকাধীন ৫৩ শতাংশ জমি বাসাইল সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে ১৪৯৩ নং হেবা দলিল মূলে লিখে নেন ছোট মেয়ে ফরিদা বেগম, ১৪৯৪ দলিল মূলে ১২ শতাংশ নাতি মেহেদী হাসান আর ১৫০২ নং দলিল মূলে ১৮ শতাংশ নাতনি সোহেবা আক্তার কনা।

পরবর্তীতে হযরত আলী চলতি বছরের ২১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর থানার সিনিয়র সহ-জজ আদালতে ছোট মেয়ে ফরিদা বেগমের ১৪৯৩ নং দলিলে লিখে নেয়া ৫৩ শতাংশ জমির দলিল পন্ডের জন্য ১৪১ নং মোকদ্দমাসহ ২৪ মার্চ বাসাইল থানাসহ জজ আদালতে নাতি মেহেদী হাসানের ১৪৯৪ নং দলিল এর ১২ শতাংশ জমির দলিল পন্ডের জন্য ৫৩ নং আর নাতনি সোহেবা আক্তার কনার ১৫০২ নং দলিল এর ১৮ শতাংশ জমির দলিল পন্ডের জন্য ৫৪ নং মোকদ্দমা করেন।

হযরত আলীর ছেলে নওজেশ আলী বলেন, দুই বোন মারা গেলেও আমার দুই বোন জীবিত। ফরিদা আমার ছোট বোন। বাবার বয়স হওয়ার কারণে নিজ বাসস্থানে কম থাকতেন। বোনদের বাড়িসহ একেক এক সময় দীর্ঘদিনের জন্য বেড়াতে বের হতেন। বেশ কিছুদিন বাবা ওই বাড়িতে থাকায় আমার মেজ বোন ও আমার ছেলেরা বাবাকে আনতে ফরিদার বাড়িতে যান।

ফরিদার অসৎ উদ্দেশ্য থাকায় সে সময় বাবাকে বাড়ি আসতে দেয়নি। তার বাড়িতে রাখার সুযোগে বাবার হাত পা বেধে মারধর এবং আটক রেখে নির্যাতন চালিয়ে ৮৩ শতাংশ জমি লিখে নিয়েছে। জমি লিখে নেয়ার পরে গুরুতর অসুস্থ বাবাকে তারা বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে আমার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে রেখে যায়। বাবার মুখে তার ওপর চালানো নির্যাতনের কথা আমরা শুনি।

তিনি জানান, পরবর্তীতে ফরিদা, তার স্বামী নুরুল ইসলাম, আমার বড় বোনের ছেলে মেহেদী ও মেয়ে কনা হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালানোসহ জোড় করে জমি লিখে নেয়ার কথা জীবিত অবস্থায় বাবা বাসাইল থানার ওসি, সাংবাদিকসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছেন। এছাড়াও লিখে নেয়া ৮৩ জমির দলিল পন্ডের মোকদ্দমাও করেন। বাবা মোকদ্দমা করার পর থেকে ফরিদা মামলাসহ নানা ভাবে আমাদের হয়রানী করছে। ওই নির্যাতনে কারণে আর আতঙ্কে আমার বাবা মারা গেছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল আমীন বলেন, হযরত আলী থানায় এসে আমার কাছে তার মেয়ে কর্তৃক নির্যাতনের বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে অবগত করেছিলেন। তখন তিনি কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। পরবর্তীতে জমিজমার ঝামেলা নিয়ে ওনার মেয়ে ও জামাতাও থানায় অভিযোগ দেন। এরমধ্যে বৃদ্ধ মারা গেছেন বলে শুনেছি। ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।