ঢাকা ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo `জুলাই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সমাজের অঙ্গীকার’ Logo ডামুড্যায় গরীব ও অসহায়দের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ Logo বিশ্বনাথে আলোকিত সুর সাংস্কৃতিক ফোরাম অভিষেক ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা Logo বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এমডিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহে মামলা Logo সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন Logo ঝিনাইদহে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির মতবিনিময় সভা Logo ভালো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল ভূমিকা রাখছে Logo বন্ধু একাদশ হাকিমপুরকে হারিয়ে মুন্সিপাড়া ওয়ারিয়ার্স দিনাজপুর চ্যাম্পিয়ান Logo জয়পুরহাটে স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা স্বামীর Logo ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা শিল্পীরা

টেকনাফের সবুজ অরণ্যে অপহরণ বাণিজ্য, ২২ দিনে ২০ জন অপহরণ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ৩৭২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

থামছে না টেকনাফের অস্থিরতা। নানা কারণে টেকনাফ এখন অপরাধ রাজ্য হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেবার পর থেকে শান্তিপূর্ণ ও পর্যটর এলাকা হয়ে ওঠে অপরাধের স্বর্গরাজ্য।

মাদকের হাটবাজারই নয়, ইয়াবা নামক মরণ নেশার টেবলেট পাচারের একমাত্র রুট হচ্ছে এই টেকনাফ।

ডাকাতি, অপরহরণ, হত্যাসহ কোন অপরাধ হচ্ছে না টেকনাফে? আর এই অপরাধ দিনে দিনে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

জানা গেয়েছে, চলতি মাসের শুক্রবার ২২ মার্চ পর্যন্ত শিশুসহ ২০ জন অপরণের শিকার হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই মুক্তিপণ গুণে বাড়ি ফেরেন।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা পশ্চিম পানখালি পাহাড়ের পাশে সবজিক্ষেতে কাজ করার সময় পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। গত ৩৬ ঘণ্টায়ও তারা উদ্ধার হয়নি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত তিন বছরে দেড় শতাধিক মানুষ অপহরণের শিকার হয়। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া, কাঠুরিয়া, জেলে, কৃষক ও প্রবাসীও রয়েছেন অপহরণের তালিকায়। অপহরণকারীর দাবিকৃত অর্থের যোগান দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় খুন হয়েছেন ৫জন। এই অবস্থায় আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, সর্বশেষ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম পানখালির মো. শামীম (১৯), একই এলাকার মোহাম্মদ রফিক (১৯), মোহাম্মদ জিহান (১৮), মোহাম্মদ নুর (২২) ও আব্দুর রহিম (১৪)। তারা সবাই সবজিক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে অপহৃত হয়।

অপহৃত শামীমের বড় ভাই সোনা মিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, পশ্চিম পানখালি পাহাড়ের পাশের জমিতে আলু, মরিচ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরের ক্ষেতে গেলে অপহৃত হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সারাদিন পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে খোঁজ করেও সন্ধ্যান মেলেনি।

আগে অপহৃত হয়ে মুক্তিপণে ফেরত আসা টেকনাফের বাহারছড়ার বাসিন্দা ছৈয়দ আলম (৪০) বলেন, গত ৮ মার্চ জাহাজপুরার আলী আহমদসহ আমরা দুজন পানের বরজে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ৮-১০ জনের অস্ত্রধারী দল আমাদের জিম্মি করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে বেঁধে রাখে। পরে তাদের নির্যাতনে নিরুপায় হয়ে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ গুণে মুক্ত হয়ে আসে।

হ্নীলার বাসিন্দা নুরজাহান। তিনি জানান, তার ছেলে সোয়াত বিন আব্দুল্লাহ (৬)। সে গত ৯ মার্চ মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণকারীরা তাকে ধরে নিয়ে যায়।

মির কাসেম জানায়, ১০ মার্চ সকালে আমার দুই ছেলে নুর কবির ও জসিমসহ সাতজন উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে পাহাড়ি বাগানে কাজ করতে যায়। সেখানে আরও পাঁচজন কাঠ সংগ্রহ ও গরু চড়াতে গেলে ১০-১৫ জনের সশস্ত্র দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদেরকে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। তারা জনপ্রতি ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে অনেক দেন-দরবারে নগদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পৌঁছানোর পর রাতে তাদের ছেড়ে দেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

টেকনাফের সবুজ অরণ্যে অপহরণ বাণিজ্য, ২২ দিনে ২০ জন অপহরণ

আপডেট সময় :

 

থামছে না টেকনাফের অস্থিরতা। নানা কারণে টেকনাফ এখন অপরাধ রাজ্য হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেবার পর থেকে শান্তিপূর্ণ ও পর্যটর এলাকা হয়ে ওঠে অপরাধের স্বর্গরাজ্য।

মাদকের হাটবাজারই নয়, ইয়াবা নামক মরণ নেশার টেবলেট পাচারের একমাত্র রুট হচ্ছে এই টেকনাফ।

ডাকাতি, অপরহরণ, হত্যাসহ কোন অপরাধ হচ্ছে না টেকনাফে? আর এই অপরাধ দিনে দিনে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

জানা গেয়েছে, চলতি মাসের শুক্রবার ২২ মার্চ পর্যন্ত শিশুসহ ২০ জন অপরণের শিকার হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই মুক্তিপণ গুণে বাড়ি ফেরেন।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা পশ্চিম পানখালি পাহাড়ের পাশে সবজিক্ষেতে কাজ করার সময় পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। গত ৩৬ ঘণ্টায়ও তারা উদ্ধার হয়নি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত তিন বছরে দেড় শতাধিক মানুষ অপহরণের শিকার হয়। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পড়ুয়া, কাঠুরিয়া, জেলে, কৃষক ও প্রবাসীও রয়েছেন অপহরণের তালিকায়। অপহরণকারীর দাবিকৃত অর্থের যোগান দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় খুন হয়েছেন ৫জন। এই অবস্থায় আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা গেছে, সর্বশেষ টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম পানখালির মো. শামীম (১৯), একই এলাকার মোহাম্মদ রফিক (১৯), মোহাম্মদ জিহান (১৮), মোহাম্মদ নুর (২২) ও আব্দুর রহিম (১৪)। তারা সবাই সবজিক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে অপহৃত হয়।

অপহৃত শামীমের বড় ভাই সোনা মিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, পশ্চিম পানখালি পাহাড়ের পাশের জমিতে আলু, মরিচ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরের ক্ষেতে গেলে অপহৃত হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সারাদিন পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে খোঁজ করেও সন্ধ্যান মেলেনি।

আগে অপহৃত হয়ে মুক্তিপণে ফেরত আসা টেকনাফের বাহারছড়ার বাসিন্দা ছৈয়দ আলম (৪০) বলেন, গত ৮ মার্চ জাহাজপুরার আলী আহমদসহ আমরা দুজন পানের বরজে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ৮-১০ জনের অস্ত্রধারী দল আমাদের জিম্মি করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে বেঁধে রাখে। পরে তাদের নির্যাতনে নিরুপায় হয়ে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ গুণে মুক্ত হয়ে আসে।

হ্নীলার বাসিন্দা নুরজাহান। তিনি জানান, তার ছেলে সোয়াত বিন আব্দুল্লাহ (৬)। সে গত ৯ মার্চ মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণকারীরা তাকে ধরে নিয়ে যায়।

মির কাসেম জানায়, ১০ মার্চ সকালে আমার দুই ছেলে নুর কবির ও জসিমসহ সাতজন উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে পাহাড়ি বাগানে কাজ করতে যায়। সেখানে আরও পাঁচজন কাঠ সংগ্রহ ও গরু চড়াতে গেলে ১০-১৫ জনের সশস্ত্র দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদেরকে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। তারা জনপ্রতি ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে অনেক দেন-দরবারে নগদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পৌঁছানোর পর রাতে তাদের ছেড়ে দেয়।