নওগাঁয় বিচার বিভাগের সামারি ট্রায়াল
ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা, ভেজাল ডাল জব্দ
- আপডেট সময় : ১১১ বার পড়া হয়েছে
নওগাঁ শহরে স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা বিচার বিভাগের উদ্যোগে গতকাল শনিবার বিকাল ৪টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ সামারি ট্রায়াল পরিচালনা করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ। এ সময় শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মিষ্টির দোকান ও ভোজ্যপণ্যের দোকানে অভিযান চালিয়ে একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ে। অসঙ্গতি ও ত্রুটি পাওয়ায় শহরের দয়ালের মোড় এলাকায় অবস্থিত হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়।
অভিযানে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা চিন্ময় প্রামাণিক, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. নাজিয়া তাসনিম, সদর থানা পুলিশের সদস্য ও সেনাবাহিনীর টিম উপস্থিত থেকে সহায়তা করেন। বিচার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নওগাঁ শহরের বেশ কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনা করছে—এমন গোপন সংবাদ পাওয়া গেলে তদন্ত ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে এই সামারি ট্রায়াল পরিচালনা করা হয়।
অভিযানের শুরুতে শহরের দয়ালের মোড় এলাকার হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাগজপত্রে ত্রুটি পাওয়া গেলে প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার বলাকা ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে অব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়। এরপর অভিযান পরিচালিত হয় শহরের ডালপট্টি এলাকায়, যেখানে বেশ কয়েকটি দোকানের ভোজ্যপণ্যের মান পরীক্ষা করা হয়। এ সময় একটি দোকান থেকে ২৪ কেজি রং মিশ্রিত ও ভেজাল মুগ ডাল জব্দ করে বিচার বিভাগ। একই সঙ্গে অন্যান্য দোকান মালিকদের সতর্ক করা হয় যেন কোনোভাবেই খাদ্যে ভেজাল না মেশানো হয়।
পরে শহরের মিষ্টি পট্টি এলাকার কয়েকটি দোকান পরিদর্শনে গিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টান্ন প্রস্তুতের বিষয়টি নজরে আসে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ দোকান মালিকদের সতর্ক করে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে মিষ্টি তৈরির নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
নওগাঁয় বিচার বিভাগের এ সামারি ট্রায়ালের মাধ্যমে শহরের ব্যবসায়ী মহলে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষও এ অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসন ও বিচার বিভাগের এমন ধারাবাহিক উদ্যোগে শহরে শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


















