কেশবপুরে সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদীর অভিযোগ
তসলিমা নির্যাতনের মেডিকেল সনদ আড়াল করে চার্জশিট দাখিল
- আপডেট সময় : ৫০ বার পড়া হয়েছে
যশোরের কেশবপুরে স্ত্রী ও সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাওয়ায় তসলিমা খাতুন নামে এক যুবতিকে লোহার রর্ড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে দু’হাত ভেঙ্গে দেওয়াসহ মাথা ফাঁটিয়ে দেওয়ার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সজ্ঞয় দাস আসামীর নিকট থেকে মোটা অংক নিয়ে জখমি সনদ আড়াল করে তড়িঘড়ি করে সাধারন ধারায় আদালতে চার্জসীট দাখিল করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী নির্যাতিত তসলিমার বোন নাসিমা খাতুন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১২টায়, কেশবপুর নিউজ ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, গত ০৬/০৮/২৫ তারিখে অসহায় তসলিমা খাতুন স্ত্রীর মর্যাদা ও সন্তানের পরিচয় চাওয়ায় উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন (৩০) তাকে মারপীটসহ তার দু’হাত ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায় কেশবপুর থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। যার মামলা নং-০৫, তারিখ-১০/০৮/২৫। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় থানার এসআই সজ্ঞয় দাসকে। তদন্ত কর্মকর্তা ভিকটিম ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহন না করে এবং ডাক্তারী সনদ আড়াল করে, তড়িঘড়ি করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ২৫/০৮/২৫ তারিখে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জসীট) আদালতে দাখিল করেন। চার্জসীটে তিনি ভিকটিমের দু’হাত ফ্যাকচার (ভাঙ্গা) উল্লেখ না করে সাধারন ফোলাযখমের কথা উল্লেখ করেছেন। তাতে মামলার আসামীকে আইনের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে ভিকটিম ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রতিবেদনে ফোর ধারা না দিয়ে তিনি সাধারন ধারায় প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার ফলে মামলার আসামী সোহাগ হোসেন রবিবার ১২ (অক্টোবর) যশোর বিজ্ঞ বিচারিক আদালত থেকে স্থায়ী ভাবে জামিন পেয়েছেন। তিনি এসময় বলেন, মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা এসআই সজ্ঞয় দাস মামলার তদন্তসহ সঠিক ভাবে চার্জসীট দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা গ্রহন করেন। তার পরও তিনি মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দদীকল করেছেন। এর বিরুদ্ধে আমাদের আইনজীবি এ্যাড. আব্দুল মজিদ পুলিশের চার্জসীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি পত্র দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত তা মঞ্জুর করে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে তার তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার জন্য যশোর পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে মামলার বাদী সংবাদ সম্মেলনে জানান।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, কেশবপুর উপজেলার আব্দুর রউফের ছেলে সোহাগ হোসেন পার্শ্ববর্তি চিংড়া গ্রামের মৃত রহিম সানার কন্যা তসলিমা খাতুনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে অবৈধ মেলামেশা করার ফলে তার গর্ভে একটি কন্যা সন্তান জন্মনেয়। এরপর তসলিমা তার সন্তানের পিতৃ পরিচয়সহ তাকে বিয়ে করার জন্য তাকে চাপ দিলে গত ০৬/০৮/২৫ তারিখে সোহাগ হোসেন লোহার রর্ড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তসলিমা খাতুনকে মারপিট করে তার দু’হাত ভেঙ্গে দেয় এবং তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় স্থানীয় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে তসলিমার মেয়ের বয়স ৮ মাস।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সজ্ঞয় দাস বলেন, তসলিমার দু’হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে তা আমি দেখেছি। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ তরিকুল ইসলাম যে ভাবে ডাক্তারী সনদ দিয়েছেন আমি সেভাবেই আদালতে চার্জসীট দাখিল করেছি।
হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের ফলে তসলিমার দু’হাত ভাঙ্গা অবস্থায় এবং মাথায় ইনজুরি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরইমধ্যে তার হাতের ফেক্সার রিপোর্ট হাতে আসার আগেই মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা তাদের কাছে মেডিকেল রিপোর্ট চায়। এসময় প্রাথমিক ভাবে ফোলা যখমের রিপোর্ট দেয়া হয়। ওই রিপোর্টে ফ্যাকচার রিপোর্ট হাতে পাওয়া যায়নি বলে বলা আছে।




















