তীব্র গরম, শঙ্কা বাড়াচ্ছে রেল দুর্ঘটনার

- আপডেট সময় : ০১:০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
দেশে রেল দুঘর্টনার শঙ্কা বাড়াচ্ছে তীব্র গরম। অতিসম্প্রতি হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনা। ২৪ ঘণ্টায় পাঁচটি পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে রেলপথের ত্রুটিতে চলাচলরত ট্রেনগুলো দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে। তাতে বিভিন্ন রুটে শিডিউল বিপর্যয়সহ বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। আর বেশকিছু ট্রেন সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি। তীব্র গরমে রেললাইনের পাত বেঁকে যেতে পারে। তাছাড়া রেললাইনে কোনো ত্রুটিতে এসব দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ রেললাইন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, ত্রুটিপূর্ণ ও দায়সারাভাবে সংস্কার কাজ, যথাযথ তদারকির অভাবের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, একদিনের মধ্যে একাধিক ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৫টি ট্রেনের লাইনচ্যুেতর ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে একদমই নতুন জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ও কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি। দেশের সবচেয়ে ভালো ট্র্যাকগুলোয় এ ট্রেনগুলো চলাচল করে। কিন্তু সামপ্রতিক দাবদাহের কারণে রেলপথে ত্রুটির কারণে লাইন থেকে ছিটকে পড়ে ট্রেনগুলো। দেশের মিটার গেজ ট্রেনগুলো সর্বোচ্চ ৭০-৭৫ কিলোমিটার গতিবেগে চলাচল করলেও ব্রড গেজ ট্রেন ৮০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলাচল করে। তাতে রেললাইনে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। পাশাপাশি তীব্র গরম চলছে। এসব কারণে রেললাইনে ত্রুটি বাড়ার আশঙ্কা থাকে। তবে দেশে গরমের তীব্রতা আরো বাড়লে রেললাইনের ঝুঁকিও বেড়ে যাবে। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা জরুরি। সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার কারণে রেলের শিডিউল বিপর্যয়, জ্বালানি অপচয়, যাত্রী ভোগান্তি, আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে হলে ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, সঠিকভাবে টেম্পিং না করা, স্লিপারের ক্লিপ থাকা না থাকা, চাকার ট্রলি ঠিক ছিল কিনা, ওভারলোড বা ওভারস্পিড ছিল কিনা, কারো দায়িত্বে অবহেলা ছিল কিনা বা গরমের কারণে লাইন বেঁকে গিয়েছিল কিনা সবকিছুই খুঁজে দেখা জরুরি। কিন্তু রেলওয়ের বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রকৃত কারণকে নিম্নপদের কর্মীদের ওপর দায় চাপিয়ে এড়িয়ে যাওয়া হয়। আর অধিকাংশ সময়ই বাস্তবায়ন করা হয় না রেল দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো। বরং দুর্ঘটনার পর এক ডিপার্টমেন্ট অন্য ডিপার্টমেন্টের ওপর দায় চাপিয়ে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে। যা রেলপথে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি আশঙ্কা বাড়ছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সুবক্তগীন জানান, বেশ কয়েকটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। বেশির ভাগই পণ্যবাহী ট্রেন হওয়ায় যাত্রী হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দেশে দাবদাহ চললেও ঠিক কোন কারণে একাধিক ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে তা এখনই নির্ণয় করা যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটি গঠন করে কারণ অনুসন্ধানের মাধ্যমে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে হঠাৎ একাধিক দুর্ঘটনার কারণে ট্রেন চলাচলে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।