ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

দই বিক্রেতা সেই জিয়াউল হক পেলেন একুশে পদক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৫০:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৫০৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

দইয়ের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেন জিয়াউল হক। বিক্রির টাকা দিয়ে বই কেনেন। তারপর সেই বই বিতরণ করেন সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সন্তানদের। বইয়ের অভাবে কারো সন্তানের যেন লেখাপড়া থেমে না থাকে।

তার বয়স ৯১ বছর। এবয়সেও দই বিক্রি করে চলে তার সংসার। তিনি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক। তার দইয়ের সুনাম গোটা জেলাজুড়েই। গরুর দুধ দিয়ে দই বানান তিনি। শতভাগ খাঁটি সেই দইয়ের প্রশাংসা করেন সবাই। এ কারণে জিয়াউল হক ভোক্তাদের আস্থার ঠিকানা। অনেকেই তার দই কেনার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে তার বাড়িতেও ছুটে যান।

 

কেন এ পথ বিচে নিলেন জিয়াউল হক? উত্তর সহজ। দারিদ্রতার কারণে টেনে টুনে পঞ্চশ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার সুযোগ হয়েছিল জিয়াউল হকের। তারপর অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

সেই দুঃখই থেকেই শিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে তুলে নেন জিয়াউল হক। ১৯৬৯ সালে নিজ বাড়িতেই গড়ে তোলেন সাধারণ পাঠাগার। শুধু পাঠাগারই নয়, নানা প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাদা মনের এই মানুষটি। শিক্ষা প্রসারে তিন কোটি টাকারও বেশি খচর করেছেন তিনি।

জিয়াউল হকের বাড়ি বাংলাদেশের উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভূজা বটতলা গ্রামে। গ্রামের অতি সাধারণ এ মানুষটি সমাজসেবায় অনন্য অবদানের জন্য এবার একুশে পদকের মতো মর্যদাপূর্ণ পদক পেলেন।

কোন প্রাপ্তি বা কিছুর জন্য নয় নিজের মনের আনন্দের জন্যই এ কাজ করে নজির গড়েছেন এই মানুষটি। জিউয়াল হকের ভাষায়, ভালো কিছু করলে ভালো কিছু পাওয়া যায়, আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে সম্মান জানানো হবে এটা জানার পর আনন্দিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

পেশায় দই বিক্রেতা এই মানুষটি পদকের অর্থ দিয়ে পাঠাগার বানাবেন কারন আগের পাঠাগারে জায়গার সংকুলান হয় না, আরও একটি ঘর করতে পারলে ভালো হয় তাই এ অর্থ দিয়ে পাঠাগারের জন্য আরো একটি ঘর বানাবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দই বিক্রেতা সেই জিয়াউল হক পেলেন একুশে পদক

আপডেট সময় : ১২:৫০:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

দইয়ের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেন জিয়াউল হক। বিক্রির টাকা দিয়ে বই কেনেন। তারপর সেই বই বিতরণ করেন সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সন্তানদের। বইয়ের অভাবে কারো সন্তানের যেন লেখাপড়া থেমে না থাকে।

তার বয়স ৯১ বছর। এবয়সেও দই বিক্রি করে চলে তার সংসার। তিনি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক। তার দইয়ের সুনাম গোটা জেলাজুড়েই। গরুর দুধ দিয়ে দই বানান তিনি। শতভাগ খাঁটি সেই দইয়ের প্রশাংসা করেন সবাই। এ কারণে জিয়াউল হক ভোক্তাদের আস্থার ঠিকানা। অনেকেই তার দই কেনার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে তার বাড়িতেও ছুটে যান।

 

কেন এ পথ বিচে নিলেন জিয়াউল হক? উত্তর সহজ। দারিদ্রতার কারণে টেনে টুনে পঞ্চশ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার সুযোগ হয়েছিল জিয়াউল হকের। তারপর অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

সেই দুঃখই থেকেই শিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে তুলে নেন জিয়াউল হক। ১৯৬৯ সালে নিজ বাড়িতেই গড়ে তোলেন সাধারণ পাঠাগার। শুধু পাঠাগারই নয়, নানা প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাদা মনের এই মানুষটি। শিক্ষা প্রসারে তিন কোটি টাকারও বেশি খচর করেছেন তিনি।

জিয়াউল হকের বাড়ি বাংলাদেশের উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুশরীভূজা বটতলা গ্রামে। গ্রামের অতি সাধারণ এ মানুষটি সমাজসেবায় অনন্য অবদানের জন্য এবার একুশে পদকের মতো মর্যদাপূর্ণ পদক পেলেন।

কোন প্রাপ্তি বা কিছুর জন্য নয় নিজের মনের আনন্দের জন্যই এ কাজ করে নজির গড়েছেন এই মানুষটি। জিউয়াল হকের ভাষায়, ভালো কিছু করলে ভালো কিছু পাওয়া যায়, আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যে সম্মান জানানো হবে এটা জানার পর আনন্দিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

পেশায় দই বিক্রেতা এই মানুষটি পদকের অর্থ দিয়ে পাঠাগার বানাবেন কারন আগের পাঠাগারে জায়গার সংকুলান হয় না, আরও একটি ঘর করতে পারলে ভালো হয় তাই এ অর্থ দিয়ে পাঠাগারের জন্য আরো একটি ঘর বানাবেন।