ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জাকসুতে ৪০ ঘণ্টার নাটকীয়তা Logo কাশিয়ানীতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার Logo মহেশখালীতে হত্যা চেষ্টা ও ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার ৭ আসামি গ্রেপ্তার Logo ইসলামপুরে মিথ্যাচার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Logo সালথা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি নাহিদ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল Logo কালীগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির মতবিনিময় সভা Logo রুপগঞ্জে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ দুই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড Logo বাগেরহাটে বিআরটিসি গাড়ির অবৈধ কাউন্টার ও মহাসড়কে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন, করিমন বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Logo জামালপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশ ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বড়াইগ্রাম শাখা অফিস শুভ উদ্বোধন

দাগনভূঞায় নদীর ভাঙনের কবলে বিদ্যালয় ভবন

শাখাওয়াত হোসেন টিপু, দাগনভূঞা (ফেনী)
  • আপডেট সময় : ৫০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার কাটাখালী নদীর ভাঙনে মাতুভূঞা ইউনিয়নের করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতে ধুয়ে গেছে মাটি। ভবনের উত্তর পাশের অংশ
ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ভবনটি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় পুরো ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
শিক্ষক ও এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টির কারণে নদীর ভাঙনের সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙনের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকেরা।
জানা গেছে, অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরীর দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিম তাদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১৬ সালে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করেন। এ ভবনটিতে ৭ম শ্রেণির পাঠদান, নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদানসহ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, ছাত্রীদের নামাজ স্থান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের অংশ ভেঙে নদীর দিকে ঝুলছে এবং ভবনের পাশে লাগোয়া শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা গেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আদনান বিন আলম বলে, ওই ভবনে আমাদের দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদান চলে। আমরা আতঙ্কিত, কখন পুরো ভবন নদীতে তলিয়ে যায়। বিদ্যালয়ের এই ভবনটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিনাল দাস গুপ্ত বলেন, নদী ভাঙনে খবর শুনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুরো ভবন ধসে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সন্তান নিয়ে চিন্তিত আছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, কয়েক বছর আগে ভাঙনরোধে জেলা পরিষদ থেকে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এবারের প্রবল বৃষ্টির স্রোতে গার্ডওয়ালের অস্তিত্ব নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা বলেন, নদীর ভাঙনের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যেকোনো সময় ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে এবং এটি একটি বিপদজনক পরিস্থিতি।অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে আছেন। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন আজাদ বলেন, ভবনটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। নদীর তীরে ভাঙনরোধে টেকসই কাজ করা জরুরি। না হলে প্রবল বৃষ্টির স্রোতে যেকোনো ভবন ধসে পড়বে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এভবনটিতে পাঠদান করা সম্ভব নয় তাই পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের ভবনটি দেখে এসেছে। নদী ভাঙনের কারণে ভবনটির একটি অংশ ফাটল দেখা গেছে। ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ভবনটিতে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ফুয়াদ হাসান বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান
সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। শুরু হলেই নদীর তীর ভাঙনরোধ হবে।
এ বিষয়ে ইউএনও মোঃ শাহীদুল ইসলাম বলেন, ভাঙন থেকে বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দাগনভূঞায় নদীর ভাঙনের কবলে বিদ্যালয় ভবন

আপডেট সময় :

ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার কাটাখালী নদীর ভাঙনে মাতুভূঞা ইউনিয়নের করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতে ধুয়ে গেছে মাটি। ভবনের উত্তর পাশের অংশ
ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ভবনটি। ভাঙন অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় পুরো ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
শিক্ষক ও এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টির কারণে নদীর ভাঙনের সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙনের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকেরা।
জানা গেছে, অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরীর দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিম তাদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১৬ সালে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করেন। এ ভবনটিতে ৭ম শ্রেণির পাঠদান, নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদানসহ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, ছাত্রীদের নামাজ স্থান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের অংশ ভেঙে নদীর দিকে ঝুলছে এবং ভবনের পাশে লাগোয়া শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা গেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আদনান বিন আলম বলে, ওই ভবনে আমাদের দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদান চলে। আমরা আতঙ্কিত, কখন পুরো ভবন নদীতে তলিয়ে যায়। বিদ্যালয়ের এই ভবনটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিনাল দাস গুপ্ত বলেন, নদী ভাঙনে খবর শুনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুরো ভবন ধসে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সন্তান নিয়ে চিন্তিত আছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, কয়েক বছর আগে ভাঙনরোধে জেলা পরিষদ থেকে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এবারের প্রবল বৃষ্টির স্রোতে গার্ডওয়ালের অস্তিত্ব নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা বলেন, নদীর ভাঙনের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যেকোনো সময় ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে এবং এটি একটি বিপদজনক পরিস্থিতি।অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে আছেন। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন আজাদ বলেন, ভবনটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। নদীর তীরে ভাঙনরোধে টেকসই কাজ করা জরুরি। না হলে প্রবল বৃষ্টির স্রোতে যেকোনো ভবন ধসে পড়বে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এভবনটিতে পাঠদান করা সম্ভব নয় তাই পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ের ভবনটি দেখে এসেছে। নদী ভাঙনের কারণে ভবনটির একটি অংশ ফাটল দেখা গেছে। ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ভবনটিতে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ফুয়াদ হাসান বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান
সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। শুরু হলেই নদীর তীর ভাঙনরোধ হবে।
এ বিষয়ে ইউএনও মোঃ শাহীদুল ইসলাম বলেন, ভাঙন থেকে বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা হয়েছে।