ঢাকা ০৮:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাইকগাছায় অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত: ৭ মাস্টার এজেন্ট আটক Logo পঞ্চগড়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ক্রীড়া উৎসব অনুষ্ঠিত Logo কুড়িগ্রামেট্রেন-ট্রাক্টর সংঘর্ষ আহত-২  Logo কালীগঞ্জে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত Logo শেরপুর-৩ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী এরশাদ আলম জর্জ Logo মানবতার ফেরিওয়ালা গোমস্তাপুর ইউএনও নিশাত আনজুম অনন্যা  Logo টেকনাফে কোস্টগার্ড-র‍্যাবের অভিযানে ইয়াবা মদসহ দুই মাদককারবারী আটক Logo ইমন হত্যা মামলায় গোপালপুর পৌর যুবলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার Logo মাদারীপুরে দুই দফা দাবিতে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশনের কর্মবিরতি Logo অর্থকন্ঠ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত পপুলারের এমডি বি এম ইউসুফ আলী

দাগনভূঞায় প্রধান শিক্ষক নেই ৩০ প্রাথমিকে, ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান

শাখাওয়াত হোসেন টিপু, দাগনভূঞা
  • আপডেট সময় : ০৭:২৩:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় ১০২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ৫৫টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য। এতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান, বিপাকে পড়ছে সাধারণ শিশু শিক্ষার্থীরা। উপজেলার পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় পাঠদান ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, ৫৫টি সহকারী শিক্ষক পদও শূন্য রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা শিক্ষা অফিসে ১৩টি পদের মধ্যে পাঁচটি পদই খালি। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম। এসব বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকগণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও চলতি দায়িত্বে থেকে দুই দায়িতুই পালন করেছেন। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে পিছিয়ে পড়ছেন তারা। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে শিগগিরই এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত চার-পাঁচটি বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারি শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে পুরো সময় উপস্থিত থাকেন না। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলির সৃষ্টি হচ্ছে। বাতশিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমার বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে। বর্তমানে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে পালন করছি। বিদ্যালয় এবং অফিসের কাজ দুটোই সামলাতে হচ্ছে আমাকে, ফলে শ্রেণি কার্যক্রমসহ অফিসের চাপ সামলাতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে তিনি জানান। চুন্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগম রেনু বলেন, আমি বিদ্যালয়ে প্রায় ২ বছর হয়ে গেল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। অপরদিকে সহকারী শিক্ষকের পদও খালি থাকায় রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। দাগনভূঞা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পূর্বচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াছিন জানান, ও উপজেলার ৩০টি প্রধান শিক্ষক ও ৫৫টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ অফিসের কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব এসব পদ পুরনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তিনি। জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদকে দ্বিতীয় শ্রেণি ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। ১০বছর ধরে শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়টি আটকে আছে। সহকারী শিক্ষক থেকেই শূন্য পদের প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পুরণ হবে। মন্ত্রণালয়,

থেকেই শূন্য পদের প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পূরণ হবে। মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের মধ্যে কারা ওই পদোন্নতি দেবে, তা নিয়েও রয়েছে ঝামেলা। ওই কারণে শূন্য পদগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। এতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দাগনভূঞা উপজেলার শিক্ষা অফিসার সাইফ্লু রহমান জানান, উপজেলার ৩০টিতে স্থায়ী প্রধান শিক্ষক, ৫৫টি সহকারী শিক্ষক, অফিসে ১৩টি পদে মধ্যে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ পাঁচটি পদই শূন্য রয়েছে। যার ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শূন্য পদগুলো পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এটির একটি প্রক্রিয়া চলছে, তবে শূন্য পদগুলো খুব তাড়াতাড়িই পুরণ হবে বলে আশা করছি। তাছাড়া অফিসিয়াল পদগুলোও শীঘ্রই পুরণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স.ম. আজহারুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় শিক্ষক সংকটের বিষয়গুলি আমি অবগত আছি। যতটুকু জানলাম প্রায় ৩০টি বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। তাছাড়া ৫৫টি সহকারী শিক্ষক ও অফিসেও ৫টি পদ খালি আছে। এভাবে চলার কারণে শিক্ষার গুণগত মান বিগ্ন হচ্ছে। দ্রুত এ শূন্য স্থানে শিক্ষক নিয়োগ করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রমকে বেগমান করবেন বলে তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দাগনভূঞায় প্রধান শিক্ষক নেই ৩০ প্রাথমিকে, ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান

আপডেট সময় : ০৭:২৩:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় ১০২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ৫৫টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য। এতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান, বিপাকে পড়ছে সাধারণ শিশু শিক্ষার্থীরা। উপজেলার পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় পাঠদান ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, ৫৫টি সহকারী শিক্ষক পদও শূন্য রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলা শিক্ষা অফিসে ১৩টি পদের মধ্যে পাঁচটি পদই খালি। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম। এসব বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকগণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও চলতি দায়িত্বে থেকে দুই দায়িতুই পালন করেছেন। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে পিছিয়ে পড়ছেন তারা। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে শিগগিরই এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত চার-পাঁচটি বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারি শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে পুরো সময় উপস্থিত থাকেন না। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলির সৃষ্টি হচ্ছে। বাতশিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমার বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে। বর্তমানে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে পালন করছি। বিদ্যালয় এবং অফিসের কাজ দুটোই সামলাতে হচ্ছে আমাকে, ফলে শ্রেণি কার্যক্রমসহ অফিসের চাপ সামলাতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে তিনি জানান। চুন্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগম রেনু বলেন, আমি বিদ্যালয়ে প্রায় ২ বছর হয়ে গেল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। অপরদিকে সহকারী শিক্ষকের পদও খালি থাকায় রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। দাগনভূঞা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পূর্বচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াছিন জানান, ও উপজেলার ৩০টি প্রধান শিক্ষক ও ৫৫টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ অফিসের কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব এসব পদ পুরনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তিনি। জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদকে দ্বিতীয় শ্রেণি ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। ১০বছর ধরে শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়টি আটকে আছে। সহকারী শিক্ষক থেকেই শূন্য পদের প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পুরণ হবে। মন্ত্রণালয়,

থেকেই শূন্য পদের প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পূরণ হবে। মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের মধ্যে কারা ওই পদোন্নতি দেবে, তা নিয়েও রয়েছে ঝামেলা। ওই কারণে শূন্য পদগুলো পূরণ করা যাচ্ছে না। এতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দাগনভূঞা উপজেলার শিক্ষা অফিসার সাইফ্লু রহমান জানান, উপজেলার ৩০টিতে স্থায়ী প্রধান শিক্ষক, ৫৫টি সহকারী শিক্ষক, অফিসে ১৩টি পদে মধ্যে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ পাঁচটি পদই শূন্য রয়েছে। যার ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, শূন্য পদগুলো পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এটির একটি প্রক্রিয়া চলছে, তবে শূন্য পদগুলো খুব তাড়াতাড়িই পুরণ হবে বলে আশা করছি। তাছাড়া অফিসিয়াল পদগুলোও শীঘ্রই পুরণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স.ম. আজহারুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় শিক্ষক সংকটের বিষয়গুলি আমি অবগত আছি। যতটুকু জানলাম প্রায় ৩০টি বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। তাছাড়া ৫৫টি সহকারী শিক্ষক ও অফিসেও ৫টি পদ খালি আছে। এভাবে চলার কারণে শিক্ষার গুণগত মান বিগ্ন হচ্ছে। দ্রুত এ শূন্য স্থানে শিক্ষক নিয়োগ করলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রমকে বেগমান করবেন বলে তিনি জানান।