সংবাদ শিরোনাম ::
দাগনভূঞা প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ

শাখাওয়াত হোসেন টিপু, দাগনভূঞা
- আপডেট সময় : ০৩:২৩:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ ১৮ বার পড়া হয়েছে
ফেনী জেলা, দাগনভূঞা উপজেলার ৮ নং জায়লস্কর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ নেয়াজ পুরে অবস্থিতি, দক্ষিন নেয়াজ পুর মকবুল আহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দূর্নীতি, অপকর্ম ও ছাত্র বলৎকারের অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে গত ২৪ মে ২০২৫ এলাকা বাসী ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির লোকজন বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিনের দূর্নীতি ও অপকর্ম তদন্তের জন্য দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দূর্নীতি দমন কমিশন নোয়াখালী জোন বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
আবেদন পত্র ও সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, স্কুলের প্রতিষ্ঠা কালীন সময় থেকেই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন মঈন উদ্দিন আহমেদ। যখন যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের ছত্র ছায়ায় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিজের পছন্দের স্কুল কমিটি গঠন করে মঈন উদ্দিন বিদ্যালয়ের আয়- ব্যায় হিসাব গোপন করে স্কুলের টাকা আত্মসাৎ, নিজের খেয়াল খুশিমত স্কুলে আসা, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ বানিজ্য, ভর্তি পরিক্ষা, এস এস সি ফরম ফিলাপে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রশংসা পত্র দানে অর্থ আদায়, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণ, স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমে মনোযোগী না হওয়া, অপকর্মের বিষয়ে প্রতিবাদী শিক্ষকদের ভয়-ভীতি দেখানো সহ বিভিন্ন ধরনের দূর্নীতি ও অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, গত কিছু দিন আগে অভিভাবক ও গণ্যমান্য এলাকাবাসীর সম্মতিক্রমে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স ম আজহারুল ইসলাম কে প্রধান করে একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি তার দূর্নীতি ও অপকর্মের বিষয়ে তদন্ত শুরু করলে প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন কাউকে কিছু না জানিয়ে তার পছন্দের পুরানো একটি বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটি করে অনুমোদনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে প্রেরন করেন। যে খানে সভাপতি হিসাবে স্কুলের জায়গা প্রদানকারী মরহুম মকবুল আহাম্মদের জামাতা হাবিবুর রহমান কে রাখা হয়। এবং কমিটির লোকজন যেন তাকে সমর্থন দেন সে জন্য স্কুলের ১০ শতাংশ জায়গা উক্ত কমিটির কয়েক জন লোকের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেন।
তা ছাড়া আজ থেকে কয়েক বছর আগে স্কুলের এক ছাত্রকে বলৎকার করে সালিশি মাধ্যামে টাকা দিয়ে ঘটনার ধামা চাপা দেয়ার অভিযোগ ও রয়েছে প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন স্কুলের টাকা আত্মসাৎ ও দূর্নীতি করে ফেনীতে ২ টি বাড়ির মালিক হয়েছেন যা সমাজে বিরল ঘটনা। অভিযোগ কারীর একজন ইমাম হাসান দাবি করেন, আমরা যদি ওনার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলি প্রশাসন কে বলেন তদন্ত করতে, তদন্ত করে যদি প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন নির্দোষ প্রমানিত হন, আমরা শাস্তি ভোগ করবো।
কিন্তু এ রকম দূর্নীতি বাজ, লম্পট, চরিত্র হীন প্রধান শিক্ষক দিয়ে আমাদের সন্তানদের পড়াতে চাইনা। আমরা অনতিবিলম্বে মকবুল আহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তার অপসারন চাই। এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার, কমিটি তে আসতে না পেরে অনেকে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কুৎসা রটাচ্ছে। আমি এই স্কুলের প্রতিষ্ঠা কালীন শিক্ষক, অনেক শ্রম ঘাম দিয়ে আমি স্কুলটিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি।
স্কুলকে এমপিও ভুক্ত করতে আমি একাই লড়ে যাচ্ছি। এডহক কমিটি রেখে বিলুপ্ত কমিটি সচল করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এডহক কমিটির মেয়াদ ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে। যে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল তারা কোর্টে মামলা করে, সে মামলার রায় তাদের পক্ষেই আসছে। মামলার রায় পাওয়ার পর আমি এই কমিটি চুড়ান্ত করতে শিক্ষা বোর্ডে প্রেরন করি।
ছাত্র বলৎকারের বিষয়ে বলেন, আমিতো বললাম অযোগ্য ও অশিক্ষিত লোকদের কমিটিতে না রাখায় তারা আমার চরিত্র হনন করার চেষ্টা করতেছে। দূর্নীতি করে ফেনীতে বাড়ি করার কথা জানতে চাইলে মঈন উদ্দিন বলেন, আমার বাবা সরকারী চাকরি করতেন, তিনি অবসরে যাওয়ার পর যে টাকা পেয়েছেন তা দিয়ে ২০০৫ সালে হাজারী রোড়ে জায়গা কিনে বাড়ি নির্মান করেন। এগুলো আমার বাবার সম্পদ আামার নয় বলে জোর দাবী করেন।
উক্ত বিষয়ে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স ম আজহারুল ইসলাম জানান, আমরা দক্ষিন নেয়াজপুর মুকবুল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, এই বিষয়ে আমরা এডহক কমিটির সভা ডেকে অভিযোগের বিষয়ে কারন দর্শানোর নোটিশ দিব এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব, তদন্ত চলাকালীন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। তদন্তে অভিযোগ সত্যি প্রমানিত হলে, প্রধান শিক্ষক মঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিধি ও আইন মোতাবেক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।