নরসিংদীতে বিএনপির কান্ডারি আবু তাহের খন্দকার
- আপডেট সময় : ৯৩ বার পড়া হয়েছে
নরসিংদী শিবপুর উপজেলার আয়ুবপুর ইউনিয়নে বিএনপির রাজনীতিতে এক অনন্য নাম আবু তাহের খন্দকার। প্রায় তিন যুগের রাজনৈতিক জীবনে চরম ক্রান্ত্রি কালের মধ্যেও সাহসিকতার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শক্ত হাতে। ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে শিবপুর উপজেলার প্রতিটি মানুষের কাছে তিনি বেশ পরিচিত।
শিবপুর উপজেলার আয়ুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন আবু তাহের খন্দকার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে টানা ১৬ বছর সারাদেশে বিএনপি কঠিন সময় পার করলেও আবু তাহের খন্দকার আয়ুবপুর ইউনিয়নে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত ও সুসংগঠিত রেখেছেন সর্বক্ষণ। আন্দোলন সংগ্রামে কখনোই পেছনে তাকাননি। দলের হাজারো নেতাকর্মী হামলা-মামলার শিকার হলেও তাদের দেখভালের প্রায় সবটুকু দায়িত্বই পালন করেছেন। এমনকি জেল-জুলুম ও নির্যাতনে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে থাকা নেতাকর্মীদের পরিবারগুলোর খোঁজখবর রেখেছেন সর্বদাই।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে দলের দুঃসময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন ও সাধারণ সম্পাদক মনজুর এলাহীর নির্দেশনায় বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত প্রত্যেকটি কর্মসূচি আবু তাহের খন্দকার এর নেতৃত্বে আয়ুবপুর ইউনিয়নে পালিত হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা সাহসের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথ সরগরম রেখেছিলেন। পাশাপাশি তার নেতৃত্বে নরসিংদীতে দলের বড় বড় প্রত্যেকটি সভা-সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী আয়ুবপুর ইউনিয়ন থেকে যোগ দিয়েছেন। একজন মেধাবী ও ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ হিসেবে সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে আয়ুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মহিলা দলসহ অঙ্গসংগঠনের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করার চেষ্টা করেছেন। সর্বশেষ শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে আয়ুবপুর ইউনিয়ন থেকে আবু তাহের খন্দকার এর নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল বিএনপি। একান্ত সাক্ষাৎকারে শিবপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও আয়ুবপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের খন্দকার বলেন, ১৯৭৮ সালে স্কুলজীবনে রাজনীতির সূচনা করেন, স্কুলের হেডমাস্টার জনাব বাবু মাস্টারের হাত ধরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৮০’র দশক আয়ুবপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেন এবং এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সেসময় থেকেই এলাকায় একজন সাহসী ও সংগ্রামী ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৯০-২০০০ সালে আয়ুবপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি এবং পরে বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বহু বছর ধরে। ২০০৩ সালে নির্বাচিত হন আয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে। ২০০৩-২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা ১৪ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দুই মেয়াদে। এই দীর্ঘ সময়ে আয়ুবপুরবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নেন একজন জনবান্ধব, সৎ, ন্যায়নিষ্ঠ ও উন্নয়নবান্ধব নেতা হিসেবে। ইউনিয়নের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও সামাজিক কল্যাণে অনন্য ভূমিকা রাখেন। ২০০৭-২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবাবধায়ক সরকারের সময় অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও কারাবরণ করেন। তবুও আদর্শচ্যুত হননি; বিএনপির প্রতি তার অটল আস্থা ও নিষ্ঠা বজায় থাকে। ফ্যাসিবাদী সরকারের ষড়যন্ত্রে ২০১৭ ও ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তুমুল জনপ্রিয়তা ও গণভোটে নির্বাচিত হলেও রাতের ভোট, সিল মেরে আওয়ামী দোসর, নিজ দলের কুচক্রী ও জামায়াতে ইসলামীর ষড়যন্ত্রে চেয়ারম্যানের পদ থেকে বঞ্চিত হন। তবুও তিনি রাজনীতি থেকে সরে যাননি বরং দ্বিগুণ উদ্যমে গণমানুষের পাশে থেকেছেন। জীবন-মৃত্যুর লড়াই: ২০২১-২০২৩ সালে দুইটি কিডনি বিকল হয়ে যায়; তাকে সপ্তাহে ২ বার ডায়ালাইসিস করতে হয়। এর মধ্যেও নিয়মিত মামলার হাজিরা দেন, জুলাই আন্দোলনের সময় বাড়ি ছাড়া হয়ে থাকতে হয়। ২০২৪ সালে আল্লাহর রহমতে জটিল অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন। সুস্থ হয়ে উঠে পুনরায় শহীদ জিয়ার আদর্শ বুকে ধারণ করে দলের হাল ধরেন। জনকল্যাণে নিজেকে এতোটাই বিলিয়ে দিয়েছেন যে নিজের রক্ত-ঘামে গড়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যায়। তবুও জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি। বর্তমানে আবু তাহের খন্দকার শিবপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার রাজনৈতিক সক্রিয়তা ও উপস্থিতিতে দলের চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিপরায়ণদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দলের ভিতরে-বাইরে আদর্শিক রাজনীতি চর্চার অন্যতম উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। আবু তাহের খন্দকার শুধু একজন রাজনীতিক নন, তিনি এক সংগ্রামী জীবনের নাম। যিনি মৃত্যুর মুখ থেকেও ফিরে এসে জাতির জন্য, দলের জন্য এবং সাধারণ মানুষের জন্য আজও লড়াই করে যাচ্ছেন সত্য, ন্যায় ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। শিবপুর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও আয়ুবপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের খন্দকার আরও বলেন, আমরা এখন নতুন বাংলাদেশে নতুন স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। বর্তমানে আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা। আমি বিশ্বাস করি সবাই মিলে যদি ৩১ দফা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ সুন্দর একটি বাংলাদেশ পাবে। আমি আমার শিবপুর উপজেলার জনগণের ঘরে ঘরে তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা পৌঁছে দেবো ইনশাআল্লাহ। পরিশেষে তিনি সকলের দোয়া কামনা করেন।




















