নির্বাচনের সময় পুলিশকে শক্ত থাকতে হবে

- আপডেট সময় : ১২:৪৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে
পুলিশের প্রতি ড. ইউনূস,
কারও কথা মানার দরকার নাই। আইন যা বলে তুমি আইনের ভেতরে থাকো। আমাদের শুধু ভয় হলো আবার যেন অন্ধকারে হারিয়ে না যাই। ছাত্ররা আমাদের রক্ষা করেছে, আবার যেন আমরা সেই গর্তে ঢুকে না যাই
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যেহেতু নির্বাচন আসছে, নানারকম সমস্যা হবে, নানারকম চাপ আসবে। সবাই ডেস্পারেট হয়ে যাবে। আমাদেরকে (পুলিশ বাহিনী) সেখানে শক্ত থাকতে হবে। আইনের ভেতরে থাকতে হবে। গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে সরকার নির্বাচিত হয়ে আসবে, তারা যেন আইনের সরকার হয়। আইন ভেঙে যে আসবে সেই সরকার কোনোদিন আইন রাখতে পারবে না। কারণ তার ভাঙারই অভ্যাস। কাজেই এই সুযোগটা এমন যে ভবিষ্যতের সরকার যেন আইন মানার সরকার হয়। সেটারও দায়িত্ব তোমাদের হাতে, যেহেতু নির্বাচন তোমাদের (পুলিশ) হাত দিয়ে হবে। কারও কথা মানার দরকার নাই। আইন যা বলে তুমি আইনের ভেতরে থাকো। আমাদের শুধু ভয় হলো আবার যেন অন্ধকারে হারিয়ে না যাই। ছাত্ররা আমাদের রক্ষা করেছে, আবার যেন আমরা সেই গর্তে ঢুকে না যাই।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহী পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, আমরা একটা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। ৮ আগস্টের পর আমরা ভুলে গেছি যে, যুদ্ধ নাই, শেষ। কথা ঠিক না। আমরা একটা অনবরত যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। এটা যেন মনে থাকে। এই যুদ্ধাবস্থা থেকে আমাদের জয়ী হয়ে বেরিয়ে আসতে হবে। লোকে সুযোগ গ্রহণ করে, যারা পরাজিত শক্তি তারা সুযোগ গ্রহণ করে— একটা কিছু উসকিয়ে দেবে, গোলমাল পাকিয়ে দেবে। এটা প্রথমেই আসবে পুলিশের নজরে। তার (পরাজিত শক্তি) চেষ্টাই হবে গোলযোগ পাকিয়ে দেওয়া। কারণ সে তো সম্মুখ যুদ্ধে আসতে পারছে না। এখানেও সম্মুখে থাকবে পুলিশ বাহিনী— পরিস্থিতি নজরে রাখা এবং খেয়াল রাখা। তার মানে এই নয় যে, কাউকে সন্দেহের বশে কারাগারে নেওয়া। তিনি বলেন, এই যুদ্ধাবস্থা ক্রমাগত ঘনীভূত হবে। কালো মেঘ থেকে ঘূর্ণিঝড় হতে থাকবে। আমরা সতর্ক থাকলে এটা বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ নেই। নিত্যনতুনভাবে অপপ্রচার হবে। অপপ্রচারের একটা কারখানা আছে। তোমাদেরকেও দ্বিধার মধ্যে ফেলে দেবে, কাজেই সতর্ক থাকতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশন উঠিয়ে দেওয়ার পর অনেকেই বলা শুরু করলো— রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পেয়ে যাবে। আমরা বলেছি যে, রোহিঙ্গাদের তো ডাটাবেজ ইউএনএইচসিআর’র কাছে আছে। বায়োমেট্রিক চেক করলেই বুঝে যাবে যে, এটা তো রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। কারণ এই দুটো ডাটাবেজ কানেক্টেড হয়ে যাবে। তাহলে সেখানে আর সেই সুযোগ থাকবে না। পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষই ঠিক করবে কাজটা। কাজেই এখানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার নেই, যেহেতু প্রযুক্তি আমাদের সাহায্য করছে। তিনি আরও বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে স্টারলিংক চালু হয়ে যাবে। শুরু হয়ে গেলে দেখবেন ইন্টারনেটের গতি কেমন। এত দ্রুত গতির ইন্টারনেট আগে ছিল না। তাতে সব কিছু হাতের মুঠোয় চলে আসবে।