পঞ্চগড় জেলা কারাগারে মানবিক বিপ্লব

- আপডেট সময় : ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
বন্দী, স্বজন ও স্টাফ সবার মুখে স্বস্তির হাসি
পঞ্চগড় জেলা কারাগারে বন্দী ও স্টাফদের ব্যবস্থাপনায় আশাব্যঞ্জক এবং যুগোপযোগী পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। কারাগারের বর্তমান জেল সুপার মোঃ বজলুর রশিদের তত্ত্বাবধানে এবং জেলার মোঃ আখেরুল ইসলাম এর দক্ষ নেতৃত্ব কারাগারে এসেছে প্রশংসনীয় পরিবর্তন। এই রূপান্তর শুধু প্রশাসনিক নয়, মানবিক ব্যবস্থাপনাও এতে যুক্ত হয়েছে।
সম্প্রতি স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে স্টাফ ও বন্দীদের নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। কারাভ্যন্তর এবং কারা এলাকার বাইরের পরিসরকেও এই উদ্যোগের আওতায় আনা হয়, যা জনস্বাস্থ্য সচেতনতায় এক সাহসী পদক্ষেপ।
কারা কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাঁদের সন্তানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতা, পাশাপাশি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করে বন্দীদের মাঝে আনন্দ ও উৎসাহ সৃষ্টি করা হয়। এসব কার্যক্রম কারা পরিবারে একটি বন্ধুসুলভ ও সৃজনশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বন্দীদের সাক্ষাৎপ্রার্থী স্বজনদের বিভিন্ন সমস্যা সহজে সমাধানের জন্য চালু করা হয়েছে সাপ্তাহিক গণশুনানি। প্রতি বৃহস্পতিবার জেল সুপার অথবা জেলার নিজে উপস্থিত থেকে বন্দীদের স্বজনদের কথা শোনেন এবং তাৎক্ষণিক সমাধানের চেষ্টা করেন। এ উদ্যোগে বন্দীদের পরিবার স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও, বন্দীদের মানসিক প্রশান্তি ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে কারাভ্যন্তরে একটি মিনি চা-বাগান স্থাপন করা হয়েছে। মৌসুমি ফল উৎসব, মাদকবিরোধী প্রচারণা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা প্রেরণামূলক কর্মসূচি ইতিমধ্যেই সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে।
জেলার মোঃ আখেরুল ইসলাম জানান, আগামী দিনে আরও বিস্তৃতভাবে খেলাধুলা, আরবি শিক্ষা, অক্ষরজ্ঞান ও আত্মউন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালু করা হবে, যাতে বন্দীদের মননশীলতা বিকশিত হয় এবং সমাজে পুনর্বাসনের পথ সুগম হয়।
পঞ্চগড় জেলা কারাগারে এ ধরনের মানবিক, উদ্ভাবনী ও প্রগতিশীল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার সর্বস্তরের মানুষ। এক সময়কার কঠোর-শাসন নির্ভর প্রতিষ্ঠানে এখন বইছে মানবিক পরিবর্তনের হাওয়া। বন্দী, স্বজন ও কারা স্টাফ সবাই নতুন পরিবেশে খুশি এবং আশাবাদী।