পত্নীতলায় বিএনপির মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

- আপডেট সময় : ৫৬ বার পড়া হয়েছে
নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলা ও নাজিপুর পৌরসভায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ঘোষিত নতুন কমিটিকে ‘গণতন্ত্রবিরোধী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ উল্লেখ করে গতকাল সোমবার একযোগে সংবাদ সম্মেলন, প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দলীয় সিনিয়র নেতা মোঃ আবু তাহের চৌধুরী (ভিপি মন্টু)-সহ ত্যাগী, কারানির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দকে পরিকল্পিতভাবে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে পত্নীতলা উপজেলা ও নাজিপুর পৌর বিএনপি।
বিকেল ৩ ঘটিকায় কর্মসূচির সূচনা হয় নাজিপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে। এতে সভাপতিত্ব করেন নাজিপুর পৌর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক এম.আর মোস্তফা। বক্তারা অভিযোগ করেন, জেলা পর্যায়ে নেতৃত্ব দখলের অপচেষ্টায় একটি মহল পূর্বনির্ধারিত ‘ভোটার তালিকা নাটক’ সাজিয়ে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে পছন্দসই লোকজনকে কমিটিতে স্থান দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শুধু অগণতান্ত্রিক নয়, বরং দলীয় ঐক্যের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক ভিপি মোঃ আবু তাহের চৌধুরী (ভিপি মন্টু) বলেন, “আমি কোনো পদ পাওয়ার আশায় রাজনীতি করিনি। আমি রাজপথে ছিলাম, কারাগারে থেকেছি, ত্যাগ স্বীকার করেছি। অথচ আজ সেই ত্যাগের মূল্য না দিয়ে সুবিধাবাদীদেরকে সামনে আনা হচ্ছে—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বিপজ্জনক। বিএনপি যদি নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়, তাহলে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আহ্বান জানাচ্ছি—সকল ত্যাগী, কারানির্যাতিত ও মাঠের নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন করে একটি গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক কমিটি গঠন করা হোক। তা না হলে আন্দোলনের ঢেউ তৈরি হবে।”
সংবাদ সম্মেলন শেষে সেখানে সরাসরি অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সভা। বক্তব্য রাখেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। বক্তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘দলকে নেতৃত্বশূন্য করার গভীর চক্রান্ত চলছে।’ তারা বলেন, ভিপি মন্টুর মতো পরীক্ষিত নেতাকে বাদ দেওয়ার অর্থ, রাজপথে যারা ছিল তাদের অবমূল্যায়ন এবং সুবিধাবাদীদের পুরস্কৃত করা।
প্রতিবাদ সভা শেষে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নেতাকর্মীরা রাস্তায় নেমে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে নজিপুর পত্নীতলা। মানববন্ধনে অংশ নেন নেতাকর্মী, যারা শান্তিপূর্ণভাবে ত্যাগী নেতাদের পক্ষে ও বিতর্কিত কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
কর্মসূচির শেষ অংশে আয়োজিত হয় একটি বিক্ষোভ মিছিল। এটি দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে ফিরে শেষ হয়। মিছিলেও ছিল তীব্র স্লোগান ও সংহতির প্রকাশ। নেতাকর্মীরা জানান, এই আন্দোলন শুধু এই এলাকায় নয়, বরং গোটা জেলায় ত্যাগীদের পক্ষে এবং ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে যাবে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে গণতান্ত্রিক ও ত্যাগী নেতৃত্বের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন না হলে, সামনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। দলীয় ঐক্য ও শক্তি টিকিয়ে রাখতে হলে, অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে একতরফা নেতৃত্ব চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে—এটাই ছিল কর্মসূচির প্রধান বার্তা।