পল্লী বিদ্যুতের বিরোধ নিষ্পত্তিতে নাগরিক কমিটি গঠন
- আপডেট সময় : ০৫:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) বিরোধ নিষ্পত্তিতে নাগরিক কমিটি গঠন করেছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলমকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোমি, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কারণ চিহ্নিত করে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রকাশ করবে কমিটি। শনিবার (১৯ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ক্যাব।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিআরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মধ্যে বিরাজমান বিরোধের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে আছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে ৬০টিতে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এতে পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন ভোক্তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। যেকোনও সময় দেশের বিপুল সংখ্যক বিদ্যুৎ-ভোক্তা এর থেকেও চরম বিপর্যন্ত অবস্থার শিকার হতে পারেন বলে জনমনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই বিবেচনায় ওই বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ক্যাব একটি নাগরিক কমিটি গঠন করেছে। কমিটি ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। কারণ চিহ্নিত করে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রকাশ করবে।
এদিকে আন্দোলন প্রত্যাহারের পরও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চাকরিরচ্যুত কর্মকর্তাদের গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শনিবার বিকালে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ‘বৈষম্যবিরোধী’ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হবে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরও চাকরিচ্যুতি ও মামলায় আতঙ্কিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের স্টেশনে অবস্থান করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।
তারা জানান, সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক মালামাল কেন, ভঙ্গুর বিতরণ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো নির্মাণ করে সমিতির কাছে হস্তান্তর করায় গ্রাহক প্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব না হওয়া, ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে সমিতিগুলোকে শোষণ করা, সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি কর, আরইবির ব্যর্থতার দায়ভার সমিতিগুলোর ওপর চাপানোসহ নানা কর্মকাণ্ডের কারণে গত জানুয়ারি থেকে সমিতিগুলোতে আন্দোলন শুরু হয়। ইতোমধ্যে গ্রাহক সেবা চালু রেখে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
কিন্তু ১৭ অক্টোবর কোনও কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও আরইবি বিনা কারণে সমিতির ২০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং ১০ জনের নামে মামলা করে। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষুদ্ধ হলে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
তারা আরও জানান, আরইবির এমন কর্মকাণ্ড বন্ধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতির আদেশ বাতিল করার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের দাবি পূরণের আশ্বাস ও আলোচনার আহ্বানে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরও রাতেই আরও চার জনকে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ধরপাকর চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।