ঢাকা ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের শীর্ষে বিজেপি নেতারা

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪ ১৯৩ বার পড়া হয়েছে

ভারতে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ ছবি: সংগৃহীত

দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

কলাকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল ভারত। কলকাতা ছাপিয়ে প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতজুড়ে। বহু হাসপাতালে চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশটির জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলো।

সেই রিপোর্ট বলছে, এই মুহূর্তে ভারতের মোট ১৫১ জন বিধায়ক এবং সংসদ সদস্যের নামে নারী অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। যে তালিকায় শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। দলগতভাবে অপরাধের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি রয়েছে বিজেপি নেতাদের। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের মামলাও রয়েছে।

২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আয়োজিত বিভিন্ন নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়া প্রার্থীদের হলফনামা ঘেঁটে দেখেছে ভারতের অরাজনৈতিক অলাভজনক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)। এই পাঁচ বছর সময়কালের মধ্যে কমিশনে মোট ৪ হাজার ৮০৯টি নির্বাচনী হলফনামা জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৪ হাজার ৬৯৩টি হলফনামা বিশ্লেষণ করে ৩০০ পাতার দীর্ঘ রিপোর্ট তৈরি করেছে এডিআর।

তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ভারতের ১৬ জন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে যার ন্যূনতম শাস্তি ১০ বছরের কারাদন্ড। দেশটির সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং কংগ্রেসের পাঁচজন করে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে।

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সাংসদ এবং বিধায়ক মিলিয়ে এই রাজ্যের মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এডিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যগত তালিকায় দ্বিতীয় অন্ধ্রপ্রদেশ (২১ জন) এবং তৃতীয় ওড়িশা (১৭ জন)।

দলগত বিচারে যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে শীর্ষে রয়েছে ভারতের শাসকদল বিজেপি। সাংসদ এবং বিধায়ক মিলিয়ে তাদের ৫৪ জন প্রতিনিধি নিজেদের নামে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার কথা হলফনামায় স্বীকার করেছেন। দলগত তালিকায় বিজেপির পরেই রয়েছে কংগ্রেস (২৩ জন) এবং তেলুগু দেশম পার্টি বা টিডিপি (১৭ জন)।

পশ্চিমবাংলায় দুই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে। তারা হলেন, বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। এছাড়া চার সাংসদের বিরুদ্ধে রয়েছে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা।

সৌমিত্র ছাড়াও সেই তালিকায় আছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নাম।

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার তালিকায় রয়েছে এক নারীর নামও! তিনি বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল। যিনি আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক এবং গত লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর আসন থেকে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন।

সর্বভারতীয় তালিকার দিকে নজর দিলে দেখা যাচ্ছে, নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় নাম রয়েছে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির।

মহারাষ্ট্রের শিবসেনা নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত, ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় আদিবাসী মন্ত্রী জুয়েল ওরাম, ইনদওরের বিধায়ক তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং লালু প্রসাদ যাদবের জ্যেষ্ঠপুত্র তথা বিহারের বিধায়ক তেজপ্রদাপ যাদবের নামও তালিকায় রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পশ্চিমবঙ্গে নারী নির্যাতনের শীর্ষে বিজেপি নেতারা

আপডেট সময় : ০২:১২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

 

কলাকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল ভারত। কলকাতা ছাপিয়ে প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতজুড়ে। বহু হাসপাতালে চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশটির জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলো।

সেই রিপোর্ট বলছে, এই মুহূর্তে ভারতের মোট ১৫১ জন বিধায়ক এবং সংসদ সদস্যের নামে নারী অপরাধ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। যে তালিকায় শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। দলগতভাবে অপরাধের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি রয়েছে বিজেপি নেতাদের। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের মামলাও রয়েছে।

২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আয়োজিত বিভিন্ন নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা পড়া প্রার্থীদের হলফনামা ঘেঁটে দেখেছে ভারতের অরাজনৈতিক অলাভজনক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর)। এই পাঁচ বছর সময়কালের মধ্যে কমিশনে মোট ৪ হাজার ৮০৯টি নির্বাচনী হলফনামা জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৪ হাজার ৬৯৩টি হলফনামা বিশ্লেষণ করে ৩০০ পাতার দীর্ঘ রিপোর্ট তৈরি করেছে এডিআর।

তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ভারতের ১৬ জন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে যার ন্যূনতম শাস্তি ১০ বছরের কারাদন্ড। দেশটির সবচেয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং কংগ্রেসের পাঁচজন করে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে।

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সাংসদ এবং বিধায়ক মিলিয়ে এই রাজ্যের মোট ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এডিআরের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যগত তালিকায় দ্বিতীয় অন্ধ্রপ্রদেশ (২১ জন) এবং তৃতীয় ওড়িশা (১৭ জন)।

দলগত বিচারে যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে শীর্ষে রয়েছে ভারতের শাসকদল বিজেপি। সাংসদ এবং বিধায়ক মিলিয়ে তাদের ৫৪ জন প্রতিনিধি নিজেদের নামে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার কথা হলফনামায় স্বীকার করেছেন। দলগত তালিকায় বিজেপির পরেই রয়েছে কংগ্রেস (২৩ জন) এবং তেলুগু দেশম পার্টি বা টিডিপি (১৭ জন)।

পশ্চিমবাংলায় দুই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা রয়েছে। তারা হলেন, বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। এছাড়া চার সাংসদের বিরুদ্ধে রয়েছে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা।

সৌমিত্র ছাড়াও সেই তালিকায় আছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নাম।

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার তালিকায় রয়েছে এক নারীর নামও! তিনি বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল। যিনি আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক এবং গত লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর আসন থেকে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন।

সর্বভারতীয় তালিকার দিকে নজর দিলে দেখা যাচ্ছে, নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় নাম রয়েছে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির।

মহারাষ্ট্রের শিবসেনা নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত, ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় আদিবাসী মন্ত্রী জুয়েল ওরাম, ইনদওরের বিধায়ক তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং লালু প্রসাদ যাদবের জ্যেষ্ঠপুত্র তথা বিহারের বিধায়ক তেজপ্রদাপ যাদবের নামও তালিকায় রয়েছে।