ঢাকা ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

পার্বতীপুরে বড়বাড়ির দুর্গাপূজায় থাকছে পৌরাণিক নানা কাহিনি

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মহালয়ার মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ সূচনা। দেবী দূর্গা এ বছর হাতিতে চড়ে আসবেন আর দেবী গমন করবেন পালকিতে চড়ে। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর দুর্গাপূজা চলবে।
এ বছর ব্যক্তি ও গ্রামবাসীর উদ্যোগে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ পরিসরে বড়বাড়ির দুর্গাপূজাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা মাঝাপাড়া গ্রামে রামপুরা মাঝাপাড়ায় নতুন শারদীয় দুর্গা মন্ডপ। এটাই প্রথম বৃহৎ পরিসরে দুর্গা উৎসব মানেই বড় বাড়ির বড় দুর্গাপূজা। আলোকসজ্জার ক্ষেত্রে রয়েছে নতুনত্ব।
দিল্লির স্বামী-নারায়ন অক্ষরধাম মন্দিরের আদলকে ধারণ করে নিজস্ব আর্কিটেকের ডিজাইনের সংমিশ্রনে মূল গেটের ডিজাইন করা হয়েছে। এবছর মণ্ডপে ২৫টি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। পুরো পূজা মণ্ডপ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ, শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ও সিসি ক্যামেরা। থাকবে অতিথি ও দর্শনার্থীদের জন্য আপ্যায়ন ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা মাঝাপাড়া নতুন দুর্গা পূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি তপন কুমার দাস দাবি করেছেন, এটি প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে এ বছর পার্বতীপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় পূজামণ্ডপ। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ ও গ্রামবাসীর সম্মিলিতভাবে জামজমকপূর্ণ এই বড় পরিসরে দুর্গাপূজার আয়োজন। পূজার স্থানসহ আশপাশের এলাকার আলোকসজ্জার মাধ্যমে এক মায়াবী রূপ দেওয়া হয়েছে। সামনে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকারের সুসজ্জিত তোরণ। এই বিশাল আয়োজনে প্রায় ১০ লাখ টাকার উপরে ব্যয় ধরা হয়েছে। থিমে’ দেখানো হবে দেবীদূর্গার আখ্যান যেখানে দেবীদূর্গা এবং দুর্গম নামক অসুরের পৌরাণিক কাহিনীর প্রদর্শিত করা হবে। আর এই থিমে মূল পরিচালনায় থাকবেন বোন শ্রেষ্ঠা দাস পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স ফাইনাল ও ভাই সৌম্যদ্বীপ বিশ্বাস বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথম বর্ষের ছাত্র। সবমিলে মাঝাপাড়া বড়বাড়ির বড় দূর্গাপুজা থাকছে নতুনত্ব।
মালী দীনবন্ধু রায় বলেন, ধর্মগ্রন্থ বেদ এবং পুরানের কাহিনী অবলম্বনে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। ১ মাস ধরে ১২/১৫জন কারিগর তাদের নিপুণ হাতে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছেন। শেষ সময়ে রং তুলির কাজ পুরোদমে চলছে। এ সময় আমাদের দম ফেলার সময় নেই।স্থানীয় বাসিন্দা বিথী রায় বলেন, বড় বাড়ির এমন দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য আমরা দারুণ খুশি। আমরা সব ধর্মের মানুষ এই দুর্গোৎসবে মিলিত হই। দুর্গোৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, তার জন্য আমরা গ্রামবাসী সবাই সহযোগিতা করেছি।
আয়োজক তপন কুমার দাস বলেন, এই প্রথম বড়সড় দুর্গাপূজার আয়োজন করি। স্থানীয় লোকজনের উৎসাহে প্রতিমার সংখ্যা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা দুর্গাপূজা দেখতে আসবে বলে আশা করছি। সকল ধর্মের মানুষের এক মিলন মেলায় পরিণত হয় দুর্গোৎসব।
পার্বতীপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কৈলাশ প্রসাদ সোনার বলেন, উপজেলায় ১৩৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও জাঁক-জমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে। পার্বতীপুরে বড়বাড়ির বড় পরিসরে আয়োজন করেছে বড় দুর্গাপূজা। বড় বাড়ির পূজাটি আকর্ষণীয় হওয়ায় এখানে দর্শণার্থীদের বিপুল সমাগম ঘটবে। উৎসবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ বছর ১৩৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পার্বতীপুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। কোনও প্রকার বিশৃঙ্খলা করা যাবে না এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব শেষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পার্বতীপুরে বড়বাড়ির দুর্গাপূজায় থাকছে পৌরাণিক নানা কাহিনি

আপডেট সময় :

মহালয়ার মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ সূচনা। দেবী দূর্গা এ বছর হাতিতে চড়ে আসবেন আর দেবী গমন করবেন পালকিতে চড়ে। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর দুর্গাপূজা চলবে।
এ বছর ব্যক্তি ও গ্রামবাসীর উদ্যোগে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ পরিসরে বড়বাড়ির দুর্গাপূজাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা মাঝাপাড়া গ্রামে রামপুরা মাঝাপাড়ায় নতুন শারদীয় দুর্গা মন্ডপ। এটাই প্রথম বৃহৎ পরিসরে দুর্গা উৎসব মানেই বড় বাড়ির বড় দুর্গাপূজা। আলোকসজ্জার ক্ষেত্রে রয়েছে নতুনত্ব।
দিল্লির স্বামী-নারায়ন অক্ষরধাম মন্দিরের আদলকে ধারণ করে নিজস্ব আর্কিটেকের ডিজাইনের সংমিশ্রনে মূল গেটের ডিজাইন করা হয়েছে। এবছর মণ্ডপে ২৫টি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। পুরো পূজা মণ্ডপ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ, শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ও সিসি ক্যামেরা। থাকবে অতিথি ও দর্শনার্থীদের জন্য আপ্যায়ন ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের রামপুরা মাঝাপাড়া নতুন দুর্গা পূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি তপন কুমার দাস দাবি করেছেন, এটি প্রতিমার সংখ্যার দিক দিয়ে এ বছর পার্বতীপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় পূজামণ্ডপ। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ ও গ্রামবাসীর সম্মিলিতভাবে জামজমকপূর্ণ এই বড় পরিসরে দুর্গাপূজার আয়োজন। পূজার স্থানসহ আশপাশের এলাকার আলোকসজ্জার মাধ্যমে এক মায়াবী রূপ দেওয়া হয়েছে। সামনে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকারের সুসজ্জিত তোরণ। এই বিশাল আয়োজনে প্রায় ১০ লাখ টাকার উপরে ব্যয় ধরা হয়েছে। থিমে’ দেখানো হবে দেবীদূর্গার আখ্যান যেখানে দেবীদূর্গা এবং দুর্গম নামক অসুরের পৌরাণিক কাহিনীর প্রদর্শিত করা হবে। আর এই থিমে মূল পরিচালনায় থাকবেন বোন শ্রেষ্ঠা দাস পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স ফাইনাল ও ভাই সৌম্যদ্বীপ বিশ্বাস বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথম বর্ষের ছাত্র। সবমিলে মাঝাপাড়া বড়বাড়ির বড় দূর্গাপুজা থাকছে নতুনত্ব।
মালী দীনবন্ধু রায় বলেন, ধর্মগ্রন্থ বেদ এবং পুরানের কাহিনী অবলম্বনে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। ১ মাস ধরে ১২/১৫জন কারিগর তাদের নিপুণ হাতে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছেন। শেষ সময়ে রং তুলির কাজ পুরোদমে চলছে। এ সময় আমাদের দম ফেলার সময় নেই।স্থানীয় বাসিন্দা বিথী রায় বলেন, বড় বাড়ির এমন দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য আমরা দারুণ খুশি। আমরা সব ধর্মের মানুষ এই দুর্গোৎসবে মিলিত হই। দুর্গোৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, তার জন্য আমরা গ্রামবাসী সবাই সহযোগিতা করেছি।
আয়োজক তপন কুমার দাস বলেন, এই প্রথম বড়সড় দুর্গাপূজার আয়োজন করি। স্থানীয় লোকজনের উৎসাহে প্রতিমার সংখ্যা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা দুর্গাপূজা দেখতে আসবে বলে আশা করছি। সকল ধর্মের মানুষের এক মিলন মেলায় পরিণত হয় দুর্গোৎসব।
পার্বতীপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কৈলাশ প্রসাদ সোনার বলেন, উপজেলায় ১৩৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও জাঁক-জমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে। পার্বতীপুরে বড়বাড়ির বড় পরিসরে আয়োজন করেছে বড় দুর্গাপূজা। বড় বাড়ির পূজাটি আকর্ষণীয় হওয়ায় এখানে দর্শণার্থীদের বিপুল সমাগম ঘটবে। উৎসবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ বছর ১৩৮টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পার্বতীপুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। কোনও প্রকার বিশৃঙ্খলা করা যাবে না এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব শেষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।