প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত দাগনভূঞা পৌরবাসী
- আপডেট সময় : ৩৮ বার পড়া হয়েছে
ফেনী জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি পৌরসভা হচ্ছে দাগনভূঞা পৌরসভা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা। সমস্যা জর্জরিত এই পৌরসভাটি নাগরিকদের মৌলিক সুবিধা পূরণ করতে পারছে না। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার করণ চিত্র, নিরাপদ পানির অভাব, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, লাইটিং সমস্যা, পানিবদ্ধতাসহ নানা সমস্যায় পৌরবাসীর জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, দাগনভূঞা পৌরসভাটি ২০০০ সালের ২ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালের ৯ নভেম্বর দ্বিতীয় শ্রেণীর পৌরসভায় উন্নীত হয় এবং ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি এটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় উন্নীত হয়। কিন্তু বিগত সময়ে নানা অব্যবস্থাপনার দরুন পৌরবাসী নানাবিধ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
বিশেষত পৌর এলাকার বর্জ্য অপসারণের জন্য কোনো ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় যততত্র বর্জ্য ফেলার দরুন নষ্ট হচ্ছে পৌর এলাকার পরিবেশ। এতে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পৌরবাসী, পথচারী ও ব্যবসায়ীরা। ফেনী-নোয়খালী রোডের মাতৃভূঞা ব্রিজের কাছে মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলায় এ সড়কে চলাচলকারীরা দাগনভূঞায় প্রবেশ করতে দুর্গন্ধের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
এ ছাড়া পৌরসভাধীন খাল ও জলাশয়গুলো পরিষ্কার না করায় বর্ষা মৌসুমে পৌর এলাকার মানুষদের পানিবদ্ধতার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। এসব জলাশয়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ নানাবিধ রোগে আক্রন্ত হচ্ছেন পৌরবাসী। তাছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমস্যার কারণে পানি জমে থেকে সড়ক ও যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। তোহা বাজার ও মাছ বাজারে নানাবিধ সমস্যার কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেখানে দ্রুত পানি নামা ও উঁচু করে রাস্তা ঢালাই করে সংস্কার জরুরি হয়ে পড়ছে। তাছাড়া স্থায়ী পশু জবেহখানা নির্মাণ করে বর্জ্যসমূহ নিরাপদে অপসারণ করা গেলে বাজারের দুর্গন্ধ কমে আসবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
এ ছাড়া একটি স্থায়ী পাবলিক টয়লেট না থাকায় পথচারী ও ক্রেতা বিক্রেতাদের সমস্যা তৈরি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়কবাতি না থাকার দরুন পথচারীরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। পৌর এলাকায় শতভাগ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না থাকায় নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা। এজন্য নির্মাণাধীন ওয়াটার প্লান্টের কাজ দ্রুত শেষ করে সমগ্র পৌর এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দাবি জানান স্থানীয়রা। এ ছাড়া বিনোদন কেন্দ্র, পৌর পার্ক না থাকার দরুন শহরের বাসিন্দারা চিত্তবিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
দাগনভূঞা পৌর এলাকার আলাইয়া পুরের বাসিন্দা নুর ইসলাম খোকন জানান, পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো খানাখন্দে ভরা। এতে গাড়ি চালানো দায় হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে পানি জমে চলাচল একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে।
দাগনভূঞা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র কামাল হোসেন জানান, দীর্ঘ দিনের একদলীয় শাসনের যাতাকলে পড়ে পৌর এলাকার এ দশা হয়েছে। বিগত সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনি। অব্যবস্থাপনা, জবাবদিহিতা ও আন্তরিকতা না থাকায় যা হওয়ার তা হয়েছে। যার কুফল ভোগ করছে পৌরবাসী।
দাগনভূঞা পৌরসভা সহকারী প্রকৌশলী জুনায়েদ কাওছার সৌরভ বলেন, পৌর এলাকার রাস্তাসমূহ অতিবৃষ্টির কারণে খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা শেষে সেপ্টেম্বর নাগাদ তা মেরামত করা হবে। তরকারি বাজার, মাছ বাজারের উন্নয়নে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পানিবদ্ধতা নিরসনে খাল ও নালাসমূহ পরিষ্কার, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও লাইটিংসহ নানাবিধ উন্নয়ন কাজ হাতে নেয়া হবে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসক স ম আজহারুল ইসলাম বলেন, দাগনভূঞা পৌরসভার নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এ বিষয়ে কাজ করছি। দীর্ঘ দিনের সমস্যা রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
















