দাগনভূঞার প্যানেলে চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম রত্না
ফ্যাসিস্ট এর দোসর হয়েও দৌরাত্ম এখনো বহাল
- আপডেট সময় : ১৪ বার পড়া হয়েছে
ফেনী দাগনভূঞা উপজেলার ২ নং রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য ও প্যানেলে চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম রত্নার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, বিগত ফ্যাসিস্ট সময়ে অবৈধ ও নিশিরাতের ভোটে রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭ ৮ ও ৯ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা সদস্য নির্বাচিত হন মমতাজ বেগম রত্না। ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বামী সেচ্ছাসেবক লীগের দাগনভূঞা উপজেলার সহ-সভাপতি হওয়ায় সদস্য নির্বাচিত হয়েই প্যানেল চেয়ারম্যানের পদটি সহজেই ভাগিয়ে নেন।
নির্বাচিত হওয়ার পর হতেই জনপ্রতিনিধি হয়ে টাকার বিনিময়ে নাগরিক সেবা দিয়ে আসছেন, বিশেষ করে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড, ভিজিডি কার্ড এবং ওয়ারিশ সনদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা নিতে হলে তাকে দিতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। টাকা ছাড়া কোন সেবা দিতে নারাজ তিনি।
স্থানীয়রা আরও জানান, পতিত আওয়ামী সরকার পতনের পর ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মামুন ও অন্য অনেক সদস্য আত্নগোপনে চলে গেলেও এই মমতাজ বেগম এখনো কি করে বহাল তবিয়তে সরকারি বেতন ভাতা ও পূর্বের ন্যায় দূর্নীতি করে যাচ্ছে তা তারা জানেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা দাবি করেন, কিছু বিএনপি ও জামায়াতের লোককে টাকা পয়সা দিয়ে এত অন্যায় অপরাধ করেও, বিনাভোটের অনেক ইউপি সদস্য পার পেয়ে যাচ্ছেন তার মধ্যে অন্যতম এই রত্না।
তিনি আরো বলেন, তার এবং তার স্বামী সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এম আবু নাছেরের ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে সাধারন সেবা গ্রহীতাকে অনেক হয়রানি করেছেন এই প্যানেল চেয়ারম্যান। টাকা ছাড়া তার কলম নড়ে না। বিভিন্ন শালিশ দরবারে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অনেকের প্রতি অবিচার করেছেন এই রত্না।
৭ ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষেরা মমতাজ বেগম রত্নাকে শেখ হাসিনার তৃনমুল কপি আখ্যায়িত করে বলেন, ৫ তারিখের আগে অনেক হয়রানি করেছেন মানুষকে যা এখনো চলমান।
৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিবি রহিমা বলেন আমার স্বামী বিদেশ থাকে তার পক্ষে একটি জন্ম নিবন্ধন সনদের সংশোধনের আবেদন করেছিলাম। আবেদনপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার সময় আমাকে বলে আবেদন কারী যেহেতু বিদেশে ৫ হাজার টাকা লাগবে, অনেক জায়গায় টাকা দিয়ে এটা পাশ করাতে হবে। এরপর মূল কপিতে স্বাক্ষর নিতে গেলে তিনি আবারও টাকা দাবি করেন।
১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০২৩ এর ডিসেম্বর মাসে আমি একটি ওয়ারিশ সনদের জন্য ওনার দ্বারস্থ হয়েছিলাম।
তিনি বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে আমার কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করি এবং বলি এটা কিসের খরচ আমাকে বলেন আমি দিব কিন্তু তিনি রাগান্বিত হয়ে আমার কাগজ ছুড়ে দিয়ে বলে আপনি চেয়ারম্যানের কাছে যান ওনি বলবে এটা কিসের খরচ? পরে নিজের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে ২ হাজার টাকা দিলে তিনি কাজটি করে দেন।
বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন সহ বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দিবে বলে অসংখ্য অসহায় গরীব নারী হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অসংখ্য অভিযোগ থাকার পরেও কি করে এই পরিবর্তিত সময়ে এ রকম আওয়ামী দোসর, দূর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী সদস্য ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে তা নিয়ে অনেকের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগের বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান মমতাজ বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এসব অভিযোগ মিথ্যা আমি আওয়ামী লীগ করলেও কারো ক্ষতি করিনি কোন দূর্নীতির সঙ্গে আমি জড়িত নই। কিছু বিএনপি জামায়াতের নেতা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক এসব অভিযোগ সামনে আনছে।
আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। আমার ৭ ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে কোন কারচুপির ভোট হয়নি।
খবর সংগ্রহ করে আসার পর তিনি বিভিন্ন ফেইক ও তার নিজস্ব আইডি ব্যাবহার করে গণমাধ্যম কর্মিদের চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে চরিত্র হনন করে যাচ্ছেন।
এই বিষয়ে ২ নং রাজাপুর ইউপি সচিব আবদুল হালিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনেক অভিযোগ পেলেও কিছু করতে পারবো না। তারা কি করে এখনো বহাল তা জেলা ও উপজেলা প্রশাসন জানে।
অভিযোগ ও তার বহাল তবিয়তে থাকা নিয়ে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।




















