সুন্দরবনে ফের দস্যুতার কালো ছায়া
বনজীবীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক ৭টি সক্রিয় বাহিনী
- আপডেট সময় : ১৭ বার পড়া হয়েছে
দক্ষিণ-পশ্চিমের খুলনা, বাগেরহাট, ও সাতক্ষীরা জেলার সুন্দরবনে র্যাব ও কোস্টগার্ডের অব্যাহত অভিযান এবং বনদস্যুদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত’ ঘোষণা করা হলেও, এখন আবারও দস্যুতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে এই মুহূর্তে কমপক্ষে ৭টি দস্যু বাহিনী বনজীবী ও জেলে-বাওয়ালীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
আতঙ্কের চিত্র ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
চাঁদা আদায়: প্রতি গোনে ডাকাতরা জেলে-বাওয়ালীদের কাছ থেকে কোটি টাকার চাঁদা আদায় করছে।
অপহরণ ও জিম্মি: বঙ্গোপসাগরের ফিশিং ট্রলার আটক করে জেলেদের জিম্মি করা তাদের নিত্যদিনের ঘটনা।
সক্রিয় বাহিনী: বর্তমানে সক্রিয় ৭টি বাহিনীর মধ্যে শরীফ বাহিনী, মামা-ভাগ্নে বাহিনী, আছাবুর বাহিনী, মজনু বাহিনী, জাহাঙ্গীর বাহিনী, আনারুল বাহিনী ও রাঙ্গা বাহিনীর নাম উঠে আসছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ: এই বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে অপহরণ, জিম্মি করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো গুরুতর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জেলেরা।
নবাগত বাহিনী: খুলনার কয়রা উপজেলার একসময়ের আলোচিত হরিণ শিকারি ও একাধিক মামলার আসামি মহসিন গাজী এখন নতুন করে ‘মহসিন বাহিনী’ তৈরি করে সুন্দরবনের মূর্তিমান আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন।
পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের বাসু ওরফে বাসুদেব বাহিনী
প্রভাব: এমন পরিস্থিতিতে বহু বনজীবী পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে বন বিভাগের রাজস্ব আদায় অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে।
বনজীবী সমিতির নেতা আব্দুল গফুর বলেন, “প্রশাসনের যদি সত্যিকারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ভূমিকা নিতো তাহলে সুন্দরবনে ডাকাতে সয়লাব হতো না।”
নতুন করে দস্যুতার নেপথ্যে
পালিয়ে আসা আসামি: গত ৫ আগস্টের পর সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে পালানো দাগী আসামি এবং ৭ বছর আগে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যুরা পুনরায় সুন্দরবনে গিয়ে নতুন করে দস্যুতা শুরু করেছে।
অস্ত্র সংগ্রহ: ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় লুট হয়ে যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ, এবং মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্ত থেকে বিভিন্ন আধুনিক অস্ত্র ও দেশীয় তৈরি অস্ত্র সংগ্রহ করে ডাকাত বাহিনীগুলো এখন সুন্দরবনের অঘোষিত সম্রাটে পরিণত হয়েছে।
বিদেশ থেকে চাঁদা দাবি: আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু আলিম বাহিনীর প্রধান আব্দুল আলিম, মিলন, জিয়া, জনাব ও নুরু বর্তমানে ভারতে বসে চাঁদা দাবি করছে বলে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা কোস্টগার্ডের অব্যাহত অভিযানে গত এক বছরে প্রায় ৪৮ জন বনদস্যু ও তাদের সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। এই সময়ে জিম্মি থাকা অর্ধশত জেলেকে মুক্ত করা হয়েছে।


















