বন্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড় অনেক স্থান পানির নিচে ৪৫ কিলোমিটার যানজট
- আপডেট সময় : ০৩:৩৩:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪ ১৭৪ বার পড়া হয়েছে
ভারত থেকে আসা পানিতে জলমগ্ন ফেণী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কুমিল্লা। বানের জলে ভেসে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক একটা অংশ। বিশেষ করে কুমিল্লা থেকে ফেণী পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান পানির নিচে।
একারণে গত বৃহস্পতিবার থেকে দেখা দেয় যানজট। দেশের ৯০ শতাংশ বাণিজ্যই হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। ফলে বন্দর নগরীরর সঙ্গে এই মহাসড়কটি রাত-দিন ২৪ ঘন্টা ব্যস্ত থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজার যাতায়ত করে থাকে।
ধারণা করা হচ্ছে দীর্ঘ যানজটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পণ্যবাহী যাবাহনসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন আটকে আছে। বন্যায় মহাসড়কের বড় অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেনীর লালপোল থেকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত দুপাশে এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আটকা পড়ে ত্রাণবাহী ট্রাক-লরি ও ছোটখাটো যানবাহনও। বন্যার পানি কমলেও মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও দুই দিন সময় লাগতে পারে বলে আশা প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টরা।
অপর দিকে সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি চট্টগ্রামের সঙ্গে দেশের ট্রেন যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে।
বাণিজ্যিক নগরী সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকায় রপ্তানিতে প্রভাব পড়ছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বৃহস্পতিবার রাত থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকার কথা জানান, কুমিল্লা অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশ সুপার খায়রুল আলম।
খায়রুল আলম আরও বলেন, ফেনী ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন অংশে মহাসড়কটি পানিতে তলিয়ে গেছে, যার কারণে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। যানজটের প্রভাব পড়েছে পরিবহনে। চট্টগ্রাম বন্দর ও ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে আসা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ১০০টি রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক এসেছে, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১ হাজার কম। সাধারণত ডিপোগুলো প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ট্রাক পরিচালনা করে। শুক্রবার ৬৩০টি ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে গেছে, স্বাভাবিক সময়ে এই সংখ্যা ৯০০টি।
চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য সরবরাহের জন্য আসা যানবাহনের সংখ্যাও কমেছে, যদিও এতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সেক্রেটারি ওমর ফারুক যানবাহন আসার সংখ্যা কমার কথা স্বীকার করলেও বন্দরের কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-প্রাইম মুভার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহমেদ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ফেনী-চৌদ্দগ্রাম সড়কের উভয় পাশে সাড়ে তিন হাজারের বেশি যানবাহন আটকে আছে। আটকে থাকা যানবাহনে ডাকাতি ও লুটপাট হওয়ার খবর পেয়েছি।
আজ আবারও যান চলাচল শুরু হলেও যানজট কাটতে দুই দিন সময় লাগতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনিদ। এই যানজট চট্টগ্রামে পরিবহন সংকটকে আরও তীব্র করেছে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পণ্য সরবরাহ ও প্রাপ্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।