ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যমণি ড. ইউনূস

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৯৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

জাতিসংঘে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান

 

হাসান মাহমুদ, নিউইয়র্ক

জাতিসংঘ ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে ড. মোহাম্মদ ইউনূস ৫৭ জন সফরসঙ্গি নিয়ে নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণের পর সরাসরি ম্যানহাটনে হোটেলে উঠবেন। এরপরই অন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য পদ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে মধ্যমণি হিসেবে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখবেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশে^র অর্ধ শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন বলে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ি মিশনের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস বক্তব্য রাখবেন।

জাতিসংঘের মূল অধিবেশনের বাইরে এটি বাংলাদেশের জন্য অনন্য এক দিন হিসিবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ি প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, নিউইয়র্কের¬ কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা এই প্রতিবেদককে বলেন, জাতিসংঘে এটি বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে গণ্য হবে। এই অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সালাউদ্দিন মাহমুদও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এই মহূর্তে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্রদূত নেই। অন্তবর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর নতুন কোন রাষ্ট্রদূত আর নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

জাতিসংঘে সদস্য পদ লাভের জন্য বাংলাদেশকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল। নতুন রাষ্ট্র হিসিবে বাংলাদেশ যাতে জাতিসংঘে সদস্য পদ লাভ না করতে পারে সেজন্য অনেক রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তখন অবস্থান নিয়েছিল। ১৯৭২ এবং ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের স্থায়ি সদস্য পদ লাভ করতে দেওয়া হয়নি চীনের পক্ষ থেকে প্রবলভাবে বাধা দেওয়ার কারণে। ওই সময়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে চীন সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ভেটো প্রয়োগ করেছিল। ফলে বাংলাদেশ আর সদস্য পদ লাভ করতে পারেনি।

এভাবে দুই বছর পার হবার পর বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের স্থায়ি সদস্যপদ লাভ করে। এর ৭ দিন পর ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রথম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে তৎকালিন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। ওই সাধারণ অধিবেশনেই বাংলাদেশের প্রথম উপস্থিতি ছিল বিশ^ নেতৃবৃন্দের সামনে। এবারের সাধারণ অধিবেশনে ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় দুপুরে ড. মোহাম্মদ ইউনূস ভাষণ দেবেন।

কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা গতকাল জানিয়েছেনে, এবারের জাতিসংঘ অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ^ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ বিষয়ে অনেক কিছু জানার অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রবাসে বাংলাদেশি আমেরিকানরা এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশে রেমিট্যান্স পাঠান বলে তিনি জানান। গত জুলাই আগস্ট মাসে আমেরিকা থেকে ৫৩২.৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ নিউইয়র্ক থেকে পাঠানো হয়েছে। যাঁরা দেশে উদারভাবে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তাদের সম্পর্কে কনসাল জেনারেল বলেন, আমরা তাদের কাছে সত্যি কৃতজ্ঞ। রেমিট্যান্স প্রবাহ এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভাল।

জাাতিসংঘ অধিবেশন শেষ হবার আগেই ড. মোহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমন্ত্রণে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মিলিত হবেন। এসময় তারা স্বল্প সময়ের এক বৈঠক করবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক বিএনপির নেতা গিয়াস আহমেদ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন. জাতিসংঘে ভাষণ দেবার সময় ভবনের বাইরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যমণি ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ১১:৫৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

জাতিসংঘে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান

 

হাসান মাহমুদ, নিউইয়র্ক

জাতিসংঘ ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে ড. মোহাম্মদ ইউনূস ৫৭ জন সফরসঙ্গি নিয়ে নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণের পর সরাসরি ম্যানহাটনে হোটেলে উঠবেন। এরপরই অন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য পদ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে মধ্যমণি হিসেবে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখবেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিশে^র অর্ধ শতাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন বলে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ি মিশনের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস বক্তব্য রাখবেন।

জাতিসংঘের মূল অধিবেশনের বাইরে এটি বাংলাদেশের জন্য অনন্য এক দিন হিসিবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ি প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, নিউইয়র্কের¬ কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা এই প্রতিবেদককে বলেন, জাতিসংঘে এটি বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন হিসেবে গণ্য হবে। এই অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সালাউদ্দিন মাহমুদও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এই মহূর্তে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্রদূত নেই। অন্তবর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর নতুন কোন রাষ্ট্রদূত আর নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

জাতিসংঘে সদস্য পদ লাভের জন্য বাংলাদেশকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল। নতুন রাষ্ট্র হিসিবে বাংলাদেশ যাতে জাতিসংঘে সদস্য পদ লাভ না করতে পারে সেজন্য অনেক রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তখন অবস্থান নিয়েছিল। ১৯৭২ এবং ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের স্থায়ি সদস্য পদ লাভ করতে দেওয়া হয়নি চীনের পক্ষ থেকে প্রবলভাবে বাধা দেওয়ার কারণে। ওই সময়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে চীন সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ভেটো প্রয়োগ করেছিল। ফলে বাংলাদেশ আর সদস্য পদ লাভ করতে পারেনি।

এভাবে দুই বছর পার হবার পর বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের স্থায়ি সদস্যপদ লাভ করে। এর ৭ দিন পর ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রথম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে তৎকালিন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। ওই সাধারণ অধিবেশনেই বাংলাদেশের প্রথম উপস্থিতি ছিল বিশ^ নেতৃবৃন্দের সামনে। এবারের সাধারণ অধিবেশনে ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় দুপুরে ড. মোহাম্মদ ইউনূস ভাষণ দেবেন।

কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা গতকাল জানিয়েছেনে, এবারের জাতিসংঘ অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ^ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ বিষয়ে অনেক কিছু জানার অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রবাসে বাংলাদেশি আমেরিকানরা এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশে রেমিট্যান্স পাঠান বলে তিনি জানান। গত জুলাই আগস্ট মাসে আমেরিকা থেকে ৫৩২.৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ নিউইয়র্ক থেকে পাঠানো হয়েছে। যাঁরা দেশে উদারভাবে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তাদের সম্পর্কে কনসাল জেনারেল বলেন, আমরা তাদের কাছে সত্যি কৃতজ্ঞ। রেমিট্যান্স প্রবাহ এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ভাল।

জাাতিসংঘ অধিবেশন শেষ হবার আগেই ড. মোহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমন্ত্রণে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মিলিত হবেন। এসময় তারা স্বল্প সময়ের এক বৈঠক করবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক বিএনপির নেতা গিয়াস আহমেদ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন. জাতিসংঘে ভাষণ দেবার সময় ভবনের বাইরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করবেন।