বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ
- আপডেট সময় : ০৬:২৬:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২৯১ বার পড়া হয়েছে
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত সিএমজেএফ টকে বক্তব্য রাখছেন ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ। ডান পাশে সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানি ভূইয়া এবং বাম পাশে সাধারণ সম্পাদক আবু আলী
ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়ায় চলতি মূলধনের চাহিদা ৩০/৪০ শতাংশ বেড়েছে। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাত্র ১০ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি মূলধনের চাহিদা পূরণ করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ
চলতি বছর বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বজায় রাখাটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন, শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সংগঠন ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই)। সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ’র মতে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়ায় চলতি মূলধনের চাহিদা ৩০/৪০ শতাংশ বেড়েছে। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাত্র ১০ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি মূলধনের চাহিদা পূরণ করাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, উ™ভূত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না হলে খরচ আমাদেরকে কমাতে হবে। যার প্রভাব পড়বে উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধিতে। সংকুচিত হবে কর্মসংস্থান। এ অবস্থায় ক্রেডিট ফ্লো-টা বাড়ানো গেলে অর্থনীতি গতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব হবে।
আশরাফ আহমেদ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য অর্জনে অর্থনীতির আকার আড়াইগুণ বাড়াতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ উৎরাতে গেলে আমাদে কে আরও গতিশীল ভাবনা নিয়ে এগুতে হবে। গত দেড়-দুই বছরে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে পেরুতে হয়েছে আমাদের ইকোনমি ও বিশ্ব ইকোনমি।
প্রধানত, মুদ্রাস্ফীতির সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। যেটি দশবছরে করার কথা ছিল। কিন্তু অতিমারির কারণে ৪ বছর পেছনে পড়ে যেতে হয়েছে। ফলে ১০ বছরের কাজ এখন ৬ বছরে করতে হবে। দেশে এখন ডলারের সংকট রয়েছে। ব্যাংকগুলোর কাছে যথেষ্ট পরিমাণ ডলার লিকুইডিটি নেই। এজন্য আমদানির সমস্যাটা সমাধান হচ্ছে না। আমদানি কমলে উৎপাদনের ওপর বড় ধরণের প্রভাব পরে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’-এ অংশ নিয়ে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ তার বক্তব্যে এসব কথা তুলে ধরেন।
সিএমজেএফ নিজস্ব অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানটির আয়োজিত অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া।
বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি কম হওয়ায় পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করা হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেয়া খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এটা পুঁজিবাজারে নেই। বন্ড ইস্যু করে ৫ বছর ১০ বছরের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা যায়। পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করাটা একটু সময়সাপেক্ষ। এটা স্বল্প সময়ের কাজ নয়। অডিট রিপোর্টের একটা বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।
এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রসঙ্গে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে ভালো ইস্যুয়ারগুলোকে নিয়ে আসা। আমরা এ বিষয়ে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছি। ভালো ইস্যুয়াররা বন্ডে ও ফিক্সড ডিপোজিট দুটোতেই আসতে পারে। বন্ড মার্কেটে প্রাইমারি ট্রেড হচ্ছে কিন্তু সেকেন্ডারি হচ্ছে না। ইস্যুয়ারদের নিয়ে এসে আমাদের ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে হবে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, অর্থপাচার বা মানি লন্ডারিং শুধু অর্থনৈতিক কারণে হয় না। তিনি বলেন, অর্থের ধর্ম হলো রিটার্ন যেখানে বেশি, সেদিকেই যাবে। দেশের বাইরে বিনিয়োগ করলে রিটার্ন বেশি পাওয়া যায়, তা নয়। বরং, দেশে বিনিয়োগ করলেই তার চেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। সুতরাং মানি লন্ডারিং অর্থনৈতিক কারণে হয় না।
আশরাফ আহমেদ বলেন, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অনিয়মে যেসব ব্যবসায়ী জড়িত দায় শুধু তারই। কোনো ব্যবসায়ীর দায় সব ব্যবসায়ীর ওপর বর্তায় না। আমরা বিভিন্ন পলিসি নিয়ে সরকারের সাথে কাজ করতে পারি।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, অনেকগুলো নতুন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি আসছে। যেমন, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন যে আছে, সেটার ক্যাপাসিটি বাড়াতে পারলে ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমি হতে পারবে। যদি ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টির রাইট ধরে রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে নলেজ বেসড প্রপার্টি ডেভেলপ করা সম্ভব হবে না।