ঢাকা ০৫:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজের একদিন পর স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিখোঁজের একদিন পর মোসম্মৎ ময়না আক্তার (০৯) নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত রোববার (৬ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাবলিপাড়া জামে মসজিদের দ্বিতীয়তলা থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু ময়না উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়া পাড়া এলাকার বাহরাইন প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে। সে লতিফ মোস্তারি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও হাবলিপাড়া মাদ্রাসায় নুরানী বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মেয়েটিকে কে বা কারা ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলে চলে যায় পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা। নিহত ময়নার মা মোসাম্মৎ লিফা আক্তার বলেন, গত শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে ময়না বাড়ি থেকে খেলাধুলা করার জন্য বের হয়। এরপর তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধ্যার পর থেকেই পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী তাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়া হয় এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে সারা এলাকায় জানানো হয় মেয়েটির সন্ধান চেয়ে। পরের দিন রবিবার সকালে মসজিদের মক্তবে পড়তে যাওয়া এলাকার শিশুরা মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। পরে মসজিদের ইমাম ময়নার মাকে খবর দেয়। তার পরিবারের সদস্যরা মসজিদে গিয়ে দেখে ময়নার বিবস্ত্র ও গলায় কাপড় পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ময়নাকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান বলেন, আমি চা খেয়ে এসে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছি। এসময় দ্বিতীয়তলা এক শিক্ষার্থী এসে বলছে একটি মেয়ে পরে রয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, শনিবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিলো না। সকালে স্থানীয় মসজিদের মক্তবে শিক্ষার্থীরা আরবি পড়তে আসে। এসময় দোতলায় শিশু ময়নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। শিশুটির শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার জানান, রাতে তাঁরা একটি নিখোঁজের জিডি করে। তখন আমাদের থানা পুলিশের একটি টিম খোঁজাখুজি করে পাই না। পরের দিন সকাল খবর পেয়ে মসজিদের দ্বিতীয়তলা মেয়েটির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। প্রাথমিক জিজ্ঞেসার জন্য মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেম থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে। তবে তাকে ধর্ষন করা হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজের একদিন পর স্কুল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

আপডেট সময় :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিখোঁজের একদিন পর মোসম্মৎ ময়না আক্তার (০৯) নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত রোববার (৬ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাবলিপাড়া জামে মসজিদের দ্বিতীয়তলা থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু ময়না উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছন্দুমিয়া পাড়া এলাকার বাহরাইন প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে। সে লতিফ মোস্তারি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও হাবলিপাড়া মাদ্রাসায় নুরানী বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মেয়েটিকে কে বা কারা ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলে চলে যায় পরিবার ও এলাকাবাসীর ধারণা। নিহত ময়নার মা মোসাম্মৎ লিফা আক্তার বলেন, গত শনিবার (৫ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে ময়না বাড়ি থেকে খেলাধুলা করার জন্য বের হয়। এরপর তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধ্যার পর থেকেই পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী তাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়া হয় এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে সারা এলাকায় জানানো হয় মেয়েটির সন্ধান চেয়ে। পরের দিন রবিবার সকালে মসজিদের মক্তবে পড়তে যাওয়া এলাকার শিশুরা মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। পরে মসজিদের ইমাম ময়নার মাকে খবর দেয়। তার পরিবারের সদস্যরা মসজিদে গিয়ে দেখে ময়নার বিবস্ত্র ও গলায় কাপড় পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডি ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ময়নাকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান বলেন, আমি চা খেয়ে এসে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছি। এসময় দ্বিতীয়তলা এক শিক্ষার্থী এসে বলছে একটি মেয়ে পরে রয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, শনিবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিলো না। সকালে স্থানীয় মসজিদের মক্তবে শিক্ষার্থীরা আরবি পড়তে আসে। এসময় দোতলায় শিশু ময়নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। শিশুটির শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার জানান, রাতে তাঁরা একটি নিখোঁজের জিডি করে। তখন আমাদের থানা পুলিশের একটি টিম খোঁজাখুজি করে পাই না। পরের দিন সকাল খবর পেয়ে মসজিদের দ্বিতীয়তলা মেয়েটির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। প্রাথমিক জিজ্ঞেসার জন্য মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেম থানায় আনা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে। তবে তাকে ধর্ষন করা হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে।