ঢাকা ১২:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভারতীয় কিছু মিডিয়া আওয়ামী লীগের চেয়েও হাসিনাপ্রেমী : শফিকুল আলম

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৫৩:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ভারতীয় কিছু মিডিয়া আওয়ামী লীগের চেয়েও হাসিনাপ্রেমী বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অপকর্ম ও তার দুঃশাসনের সত্য ইতিহাস মানতে নারাজ ভারতীয় মিডিয়া।

জলজ্যান্ত সত্যকেও তারা অস্বীকার করছে। গোটা দেশকে দুর্নীতির সাগরে ডুবিয়ে একটা চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গেছেন শেখ হাসিনা। হাসিনার অপকর্ম যা দিবালোকের মতো সত্য, কোটি কোটি মানুষ সাক্ষী। কিন্তু সেগুলো স্বীকার করে না ভারতীয় মিডিয়া। আমার মনে হয় কি, কিছু ভারতীয় মিডিয়া আওয়ামী লীগের চেয়েও হাসিনাপ্রেমী।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেস সচিব এ সাক্ষাৎকার দেন।

পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সদস্যরা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে, ভারতের একটি পত্রিকায় এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এটা লক্ষ্য করছি যে, ভারতীয় গণমাধ্যম (বাংলাদেশ ইস্যুতে) অনেক ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।

আসলে বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিকদের তথ্য সমৃদ্ধ নয়। এ বিষয়ে ফোনালোপে প্রফেসর ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নপ্রন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছিলেন, বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে ভারতীয় সাংবাদিকদের যেন তিনি উৎসাহিত করেন। কিন্তু তারা আসছেন না।

ভারতের দায়িত্বশীল গণমাধ্যমগুলোও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, এই কাজটি তাদের ইচ্ছাকৃত না কি পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রতি তাদের যে প্রেম-ভালোবাসা ছিল সেটা হয়তো এখনও কমেনি।

ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংগঠনের ওয়েবসাইট (আইডিআরডব্লিউ.অর্গ) সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, পাকিস্তান থেকে কিছু স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে বাংলাদেশ। বঙ্গপোসাগরে এই সামরিক অস্ত্র জমা করা হচ্ছে।

এই তথ্যের সত্যতা কী অথবা অসত্য হলে এই ধরনের মিথ্য সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, এগুলো সবই সূত্রহীন, বায়বীয় সংবাদ। এসব সংবাদের কোনো সোর্স নাই, কে বলেছে তাও বলা নাই। সেটাই বলছি যে, ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তাছাড়া আমরা কার কাছ থেকে কি কিনি এটা ভারতের দেখার বিষয় নয়।

বাংলাদেশ ইস্যুতে খবর প্রকাশের আগে তাদের (ভারতীয় সাংবাদিকদের) উচিত ছিল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। কোনো তথ্য পেলে তারা চেক করতে পারে। বাংলাদেশের চিফ অ্যাডভাইজার প্রেস উইং ফ্যাক্টস থেকে নিশ্চিত হতে পারে। কথা বলতে পারে। কিন্তু তারা সেটা না করেই প্রতিবেদন লিখছেন। তাদের ইচ্ছাই হচ্ছে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো। সত্য শোনার ভয়ে তারা আমাকে ফোনও করছেন না।

তিনি বলেন, ভারতের গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশে তাদের ব্যুরো অফিস খুলুক। প্রতিনিধি নিয়োগ দিক। তাদের সরেজমিনে করা তথ্য নিয়ে প্রকাশ করুক। আমরা তো বাধা দিচ্ছি না, স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা ভারতীয় সাংবাদিকদের এটাও বলেছি, বাংলাদেশে আসুন, আপনাদের ভিসা এক ঘণ্টায় করে দেব।

মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কারিগর ভারতের সাংবাদিকতাকে কীভাবে দেখছেন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, ভারতের সাংবাদিকতা অনেক পুরোনো। জার্নালিজমে তাদের ভালো ভালো রেকর্ডও আছে। তাদের কিছু কিছু পত্রিকা, কিছু ওয়েবসাইট খুবই জনবান্ধব। আবার কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই উগ্রবাদী, পুরোপুরি গোদি মিডিয়া। তারা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ায়, যা উন্নত সমাজে দেখা যায় না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভারতীয় কিছু মিডিয়া আওয়ামী লীগের চেয়েও হাসিনাপ্রেমী : শফিকুল আলম

আপডেট সময় : ১১:৫৩:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

 

ভারতীয় কিছু মিডিয়া আওয়ামী লীগের চেয়েও হাসিনাপ্রেমী বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অপকর্ম ও তার দুঃশাসনের সত্য ইতিহাস মানতে নারাজ ভারতীয় মিডিয়া।

জলজ্যান্ত সত্যকেও তারা অস্বীকার করছে। গোটা দেশকে দুর্নীতির সাগরে ডুবিয়ে একটা চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে গেছেন শেখ হাসিনা। হাসিনার অপকর্ম যা দিবালোকের মতো সত্য, কোটি কোটি মানুষ সাক্ষী। কিন্তু সেগুলো স্বীকার করে না ভারতীয় মিডিয়া। আমার মনে হয় কি, কিছু ভারতীয় মিডিয়া আওয়ামী লীগের চেয়েও হাসিনাপ্রেমী।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেস সচিব এ সাক্ষাৎকার দেন।

পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সদস্যরা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে, ভারতের একটি পত্রিকায় এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, এটা লক্ষ্য করছি যে, ভারতীয় গণমাধ্যম (বাংলাদেশ ইস্যুতে) অনেক ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।

আসলে বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিকদের তথ্য সমৃদ্ধ নয়। এ বিষয়ে ফোনালোপে প্রফেসর ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নপ্রন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছিলেন, বাংলাদেশে এসে সরেজমিনে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে ভারতীয় সাংবাদিকদের যেন তিনি উৎসাহিত করেন। কিন্তু তারা আসছেন না।

ভারতের দায়িত্বশীল গণমাধ্যমগুলোও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, এই কাজটি তাদের ইচ্ছাকৃত না কি পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রতি তাদের যে প্রেম-ভালোবাসা ছিল সেটা হয়তো এখনও কমেনি।

ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংগঠনের ওয়েবসাইট (আইডিআরডব্লিউ.অর্গ) সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, পাকিস্তান থেকে কিছু স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কিনছে বাংলাদেশ। বঙ্গপোসাগরে এই সামরিক অস্ত্র জমা করা হচ্ছে।

এই তথ্যের সত্যতা কী অথবা অসত্য হলে এই ধরনের মিথ্য সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, এগুলো সবই সূত্রহীন, বায়বীয় সংবাদ। এসব সংবাদের কোনো সোর্স নাই, কে বলেছে তাও বলা নাই। সেটাই বলছি যে, ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তাছাড়া আমরা কার কাছ থেকে কি কিনি এটা ভারতের দেখার বিষয় নয়।

বাংলাদেশ ইস্যুতে খবর প্রকাশের আগে তাদের (ভারতীয় সাংবাদিকদের) উচিত ছিল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। কোনো তথ্য পেলে তারা চেক করতে পারে। বাংলাদেশের চিফ অ্যাডভাইজার প্রেস উইং ফ্যাক্টস থেকে নিশ্চিত হতে পারে। কথা বলতে পারে। কিন্তু তারা সেটা না করেই প্রতিবেদন লিখছেন। তাদের ইচ্ছাই হচ্ছে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো। সত্য শোনার ভয়ে তারা আমাকে ফোনও করছেন না।

তিনি বলেন, ভারতের গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশে তাদের ব্যুরো অফিস খুলুক। প্রতিনিধি নিয়োগ দিক। তাদের সরেজমিনে করা তথ্য নিয়ে প্রকাশ করুক। আমরা তো বাধা দিচ্ছি না, স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা ভারতীয় সাংবাদিকদের এটাও বলেছি, বাংলাদেশে আসুন, আপনাদের ভিসা এক ঘণ্টায় করে দেব।

মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কারিগর ভারতের সাংবাদিকতাকে কীভাবে দেখছেন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, ভারতের সাংবাদিকতা অনেক পুরোনো। জার্নালিজমে তাদের ভালো ভালো রেকর্ডও আছে। তাদের কিছু কিছু পত্রিকা, কিছু ওয়েবসাইট খুবই জনবান্ধব। আবার কিছু ভারতীয় গণমাধ্যম খুবই উগ্রবাদী, পুরোপুরি গোদি মিডিয়া। তারা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ায়, যা উন্নত সমাজে দেখা যায় না।