ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতীয় মিডিয়ার দায়হীনতা: গুম ব্যক্তিদের স্বজনদের কর্মসূচিকে বলল ‘সংখ্যালঘুদের অবস্থান’

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যা করে ভারতে পাীরয়ে যাবার পর থেকে সেদেশের কিছু মিডিয়ার দায়িত্বহীন সংবাদ প্রচার করছে। কিছু সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার থামছেই না। কিছুক্ষেত্রে গুজবের পাশাপাশি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তারা চালিয়ে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক রঙ মাখানো প্রোপাগান্ডা।

ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ার পাশাপাশি কিছু সামজিক মাধ্যমও আদাল জল খেয়ে উস্কানিমূলক নানা মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ‘ফ্যাক্ট চেক’ অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় সাম্প্রতিক বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে তার ৯৫ ভাগই ভুয়া।

যেসব ঘটনা ঘটেনি তা দিয়ে রঙ মেঘে সাম্প্রদায়িক উস্কানি মূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পজেটিভ কোন বিষয় দেখার মতো মানুষিকতা দেখা যায়নি ওসব প্রতিবেদনে। সর্ব দায়হীনতা। যা কিনা আন্তর্জাতিক মিডিয়া বিবিসি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই সেই প্রোপাগান্ডায় শামিল হয়েছে। তারা গুম ব্যক্তিদের সন্ধান দাবিতে স্বজনদের অবস্থান কর্মসূচিকে প্রচার করেছে সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদী অবস্থান হিসেবে।

গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে এনআইতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। পরে সেই প্রতিবেদনের লিংক এএনআই ডিজিটালের এক্সে (সাবেক টুইটার) শেয়ার দেওয়া হয়।

এর ক্যাপশনে লিখে দেওয়া হয়, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ঢাকায় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। ওই ভবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে বৈঠক করেন।

পরে তাদের ওয়েব পোর্টাল থেকে প্রতিবেদনটি সরিয়ে নেওয়া হয়। মুছে দেওয়া হয় এক্সের পোস্টটিও।

এ নিয়ে এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এনআই ঢাকায় আয়নাঘরের বন্দিদের স্বজনের এক অবস্থান কর্মসূচিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ হিসেবে প্রচার করেছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেসব ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রঙ মাখিয়ে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে উসকানির সুরে প্রচার করতে থাকে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মজুড়ে বিভ্রান্তিকর বিষয়বস্তু সংবলিত নিবন্ধ-ভিডিও প্রচার চলছে নির্বিচারে। অনেকে এসবকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোবিন্দ প্রামাণিক ৬ আগস্ট এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ভারতের কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দু সমাজের ওপর হামলা নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়াচ্ছে, মিথ্যাচার করছে। নানা উদ্ভট কথাবার্তা বলছে।

এদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় কিছু টিভি চ্যানেলে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রতিবেদন হচ্ছে, এমনটি বলেছে সে রাজ্যেরও পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভারতীয় মিডিয়ার দায়হীনতা: গুম ব্যক্তিদের স্বজনদের কর্মসূচিকে বলল ‘সংখ্যালঘুদের অবস্থান’

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

 

ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যা করে ভারতে পাীরয়ে যাবার পর থেকে সেদেশের কিছু মিডিয়ার দায়িত্বহীন সংবাদ প্রচার করছে। কিছু সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার থামছেই না। কিছুক্ষেত্রে গুজবের পাশাপাশি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তারা চালিয়ে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক রঙ মাখানো প্রোপাগান্ডা।

ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ার পাশাপাশি কিছু সামজিক মাধ্যমও আদাল জল খেয়ে উস্কানিমূলক নানা মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ‘ফ্যাক্ট চেক’ অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় সাম্প্রতিক বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে তার ৯৫ ভাগই ভুয়া।

যেসব ঘটনা ঘটেনি তা দিয়ে রঙ মেঘে সাম্প্রদায়িক উস্কানি মূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পজেটিভ কোন বিষয় দেখার মতো মানুষিকতা দেখা যায়নি ওসব প্রতিবেদনে। সর্ব দায়হীনতা। যা কিনা আন্তর্জাতিক মিডিয়া বিবিসি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই সেই প্রোপাগান্ডায় শামিল হয়েছে। তারা গুম ব্যক্তিদের সন্ধান দাবিতে স্বজনদের অবস্থান কর্মসূচিকে প্রচার করেছে সংখ্যালঘুদের প্রতিবাদী অবস্থান হিসেবে।

গত মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে এনআইতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। পরে সেই প্রতিবেদনের লিংক এএনআই ডিজিটালের এক্সে (সাবেক টুইটার) শেয়ার দেওয়া হয়।

এর ক্যাপশনে লিখে দেওয়া হয়, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় ঢাকায় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। ওই ভবনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে বৈঠক করেন।

পরে তাদের ওয়েব পোর্টাল থেকে প্রতিবেদনটি সরিয়ে নেওয়া হয়। মুছে দেওয়া হয় এক্সের পোস্টটিও।

এ নিয়ে এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এনআই ঢাকায় আয়নাঘরের বন্দিদের স্বজনের এক অবস্থান কর্মসূচিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ হিসেবে প্রচার করেছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেসব ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রঙ মাখিয়ে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে উসকানির সুরে প্রচার করতে থাকে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মজুড়ে বিভ্রান্তিকর বিষয়বস্তু সংবলিত নিবন্ধ-ভিডিও প্রচার চলছে নির্বিচারে। অনেকে এসবকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোবিন্দ প্রামাণিক ৬ আগস্ট এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ভারতের কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দু সমাজের ওপর হামলা নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়াচ্ছে, মিথ্যাচার করছে। নানা উদ্ভট কথাবার্তা বলছে।

এদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় কিছু টিভি চ্যানেলে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রতিবেদন হচ্ছে, এমনটি বলেছে সে রাজ্যেরও পুলিশ।