ঢাকা ০১:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাদুল্লাপুরে প্রতিবেশীর পুরনো গাছের নিচে মৃত্যু ঝুঁকিতে সাংবাদিক পরিবারের বসবাস, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা! Logo চাকরি করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন Logo অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুর্বল হিসেবে দেখতে চাইনা Logo কুড়িগ্রামে গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে আনবেন না: শিক্ষা উপদেষ্টা Logo কুড়িগ্রামে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের ৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Logo ভাণ্ডারিয়ায় কলেমা চত্বরের সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ শুরু Logo কোস্টগার্ড সদর দপ্তরে অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্সের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo ‘আমার বিরুদ্ধে লেখে কিছুই করতে পারবেন না’ Logo ৪ ছেলে মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে মানবেতার জীবনযাপন করছেন কোহিনুর বেগম

ভারত থেকে ছাড়া হচ্ছে লাখ লাখ কিউসেক পানি

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৫:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩২৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টির জেরে সিকিম ও ভুটান থেকে নেমে আসা নদীগুলোতেও পানি বাড়ছে। ফলে বাড়ছে ফ্লাশ ফ্লাডের আশঙ্কা। পরিস্থিতির সামাল দিতে ও ব্যারেজের ওপর চাপ কমাতে তিস্তা নদীর গাজোলডোবা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় পানি ছাড়ছে তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার রাত-দিনভর গজলডোবা ব্যারেজ থেকে বাংলাদেশের দিকে গড়ে প্রায় এক লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়। রাত ৮টার পর ছাড়া হয়, প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার ৩৮০ কিউসেক। রাত নটায় কিছুটায় পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৯ কিউসেক। এরপর রাতের দিকে কিছুটা কমে পানি ছাড়ার পরিমাণ। গড়ে পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭৮ কিউসেক।

পাহাড়ে লাগাতার ধস আর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতল। একটানা ভারী বৃষ্টিতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। ডুয়ার্সের মাল, ক্রান্তি থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ফুলে-ফেঁপে উঠেছে খরস্রোতা তিস্তা। মাল্লিতে তিস্তা নদীর পানি গ্রাস করেছে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সিকিমের জাতীয় সংযোগ সড়ক ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তা বাজারেও একই পরিস্থিতি। তিস্তা, জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, সাম্প্রতিককালে সেপ্টেম্বর মাসে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে গাজোলডোবা, নাগরাকাটাতে। জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, গাজোলডোবাতে ২৫৩ মিলিমিটার, নাগরকাটাতে ২৬৫.৪ মিলিমিটার, ডায়নাতে ২২১.৮ মিলিমিটার, মুর্তিতে ২৩১.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এ কারণে তিস্তা নদীর দোমহনি থেকে মেখলিগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দপ্তর। পাশাপাশি জলঢাকা নদীর মাথাভাঙা পর্যন্ত অসংরক্ষিত লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দপ্তরের নর্থ-ইস্ট বিভাগ।

শনিবার সকাল থেকে অবশ্য পানি ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমতে থাকে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত গড়ে পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ২৮ হাজার কিউসেক। কিন্তু সকাল দশটার পর থেকে বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা বাড়িয়ে পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৬৩ কিউসেক। এরপর সকাল ১১টায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৪১ কিউসেক। বেলা ১২ টায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ২১ কিউসেক এবং বেলা ১টায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩৪৮ কিউসেক। দুপুর ২ টায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৫৭ কিউসেক এবং বিকেল ৩টায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৪০ কিউসেক পানি ছাড়া হয়।

রাতারাতি নদীর পানি ফুলে-ফেঁপে ওঠায় তিস্তার ভারতীয় অংশে প্রশাসনের তরফে শুক্রবার রাত থেকেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং করা হয়। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসার আবেদনও জানানো হয়।

যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার রাতেই পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলা জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী ও সদর বিডিও মিহির কর্মকারসহ অন্যান্য কর্মীরা গভীর রাতে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি তিস্তা নদী-সংলগ্ন এলাকায় পরিদর্শন করেন। কথা বলেন তিস্তা পারের মানুষের সঙ্গে। এ সময় তাদের সাথে ছিলেন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা।

এদিকে শুক্রবার সারা রাত বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের একাধিক জায়গায় নতুন করে ধস নামে। কালিম্পংয়ের মেল্লিতে ধস নেমে রাস্তা অবরুদ্ধ। দার্জিলিং জেলার চিত্রেতে নতুন করে ধস নেমেছে। কালিম্পং জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, আপাতত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পূর্ত দপ্তর। তাদের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ১০ বন্ধ থাকছে।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভারত থেকে ছাড়া হচ্ছে লাখ লাখ কিউসেক পানি

আপডেট সময় : ০৯:৩৫:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টির জেরে সিকিম ও ভুটান থেকে নেমে আসা নদীগুলোতেও পানি বাড়ছে। ফলে বাড়ছে ফ্লাশ ফ্লাডের আশঙ্কা। পরিস্থিতির সামাল দিতে ও ব্যারেজের ওপর চাপ কমাতে তিস্তা নদীর গাজোলডোবা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় পানি ছাড়ছে তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার রাত-দিনভর গজলডোবা ব্যারেজ থেকে বাংলাদেশের দিকে গড়ে প্রায় এক লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়। রাত ৮টার পর ছাড়া হয়, প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার ৩৮০ কিউসেক। রাত নটায় কিছুটায় পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৯ কিউসেক। এরপর রাতের দিকে কিছুটা কমে পানি ছাড়ার পরিমাণ। গড়ে পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭৮ কিউসেক।

পাহাড়ে লাগাতার ধস আর বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতল। একটানা ভারী বৃষ্টিতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। ডুয়ার্সের মাল, ক্রান্তি থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ফুলে-ফেঁপে উঠেছে খরস্রোতা তিস্তা। মাল্লিতে তিস্তা নদীর পানি গ্রাস করেছে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সিকিমের জাতীয় সংযোগ সড়ক ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তা বাজারেও একই পরিস্থিতি। তিস্তা, জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, সাম্প্রতিককালে সেপ্টেম্বর মাসে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে গাজোলডোবা, নাগরাকাটাতে। জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর, গাজোলডোবাতে ২৫৩ মিলিমিটার, নাগরকাটাতে ২৬৫.৪ মিলিমিটার, ডায়নাতে ২২১.৮ মিলিমিটার, মুর্তিতে ২৩১.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এ কারণে তিস্তা নদীর দোমহনি থেকে মেখলিগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দপ্তর। পাশাপাশি জলঢাকা নদীর মাথাভাঙা পর্যন্ত অসংরক্ষিত লাল সতর্কতা জারি করেছে সেচ দপ্তরের নর্থ-ইস্ট বিভাগ।

শনিবার সকাল থেকে অবশ্য পানি ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা কমতে থাকে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত গড়ে পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ২৮ হাজার কিউসেক। কিন্তু সকাল দশটার পর থেকে বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা বাড়িয়ে পানি ছাড়া হয় ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৬৩ কিউসেক। এরপর সকাল ১১টায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৭৪১ কিউসেক। বেলা ১২ টায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ২১ কিউসেক এবং বেলা ১টায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩৪৮ কিউসেক। দুপুর ২ টায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৫৭ কিউসেক এবং বিকেল ৩টায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৪০ কিউসেক পানি ছাড়া হয়।

রাতারাতি নদীর পানি ফুলে-ফেঁপে ওঠায় তিস্তার ভারতীয় অংশে প্রশাসনের তরফে শুক্রবার রাত থেকেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং করা হয়। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে আসার আবেদনও জানানো হয়।

যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার রাতেই পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের জেলা জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী ও সদর বিডিও মিহির কর্মকারসহ অন্যান্য কর্মীরা গভীর রাতে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি তিস্তা নদী-সংলগ্ন এলাকায় পরিদর্শন করেন। কথা বলেন তিস্তা পারের মানুষের সঙ্গে। এ সময় তাদের সাথে ছিলেন ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা।

এদিকে শুক্রবার সারা রাত বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের একাধিক জায়গায় নতুন করে ধস নামে। কালিম্পংয়ের মেল্লিতে ধস নেমে রাস্তা অবরুদ্ধ। দার্জিলিং জেলার চিত্রেতে নতুন করে ধস নেমেছে। কালিম্পং জেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, আপাতত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পূর্ত দপ্তর। তাদের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ১০ বন্ধ থাকছে।