ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

মাদকের ব্যাগ ঘিরে জকিগঞ্জে তাণ্ডব

ভুক্তভোগী পরিবার ফিরলেও, ইয়াবা নেই, ব্যবস্থা শূন্য

জকিগঞ্জ (সিলেট) সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় : ২৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বাগানবাড়ি কাচারচক গ্রামে মাদক নিয়ে বিরোধের জেরে একই গ্রামের তাজেল আহমদ দুদনের বিরুদ্ধে নারী-শিশুসহ সাত সদস্যের একটি পরিবারকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৮ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মৃত মনই মিয়ার স্ত্রী রেশমা বেগম, ছেলে নজরুল ইসলাম নজু এবং স্ত্রী খাদেজা আক্তার, ভাবি পারভীন আক্তার নিশ্চিত করেছেন যে, তাজেল আহমদ তাদের ঘরে একটি ব্যাগ রেখে গিয়েছিল। ওই ব্যাগে ছিল ২০ হাজার পিস ইয়াবা। পরে ওই ইয়াবা নিয়ে পলাতক হন নজরুল ইসলাম নজু।
রেশমা বেগম জানান, ১২ সেপ্টেম্বর তাজেল আহমদ একটি ব্যাগ রেখে যান। পরদিন তার ছেলে নজরুল ইসলাম নজু ওই ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর তাজেল আহমদ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পরিবারের সবাইকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে দেন।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ও জকিগঞ্জ থানা পুলিশের উদ্যোগে তালা ভেঙে পরিবারটিকে পুনরায় ঘরে প্রবেশ করানো হয়। রেশমা বেগমের অভিযোগ অনুযায়ী, ওই ব্যাগে ছিল প্রায় ২০ হাজার পিস ইয়াবা যার বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে অডিও ও ভিডিও প্রমাণও রয়েছে।
ঘটনার জেরে ১৪ সেপ্টেম্বর জকিগঞ্জ থানার এসআই সজীব দেব রায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, যেখানে নিরাপত্তা বিঘ্ন ও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়। তিনি বলেন, “রেশমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে তালা খুলে পরিবারটিকে ঘরে প্রবেশ করানো হয় এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে আপোষনামা স্বাক্ষরিত হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”
তবে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, মাদকের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ থাকলেও কেন কেবল আপোষের মাধ্যমে বিষয় নিষ্পত্তি করা হলো? এলাকার এক গোপনীয় সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ী তাজেল আহমদ দুদনের সম্পদ ও আয়ের উৎস নিয়েও নানা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, যা তদন্তে সামনে আসবে বলে বিশ্বাস করেন তারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, “তাজেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, সে জানিয়েছে রেশমা বেগমের ছেলে নজরুল ইসলাম নজু তার ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য চার লক্ষ টাকা নিয়েছে। সেই পাওনা দাবি করতেই গিয়েছিল। মাদকের প্রসঙ্গে রেশমা তখন মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না বলে দাবি করেছে।”
স্থানীয়রা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন, মাদকের বিরুদ্ধে মুখ খোলা পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়া হোক এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাদকের ব্যাগ ঘিরে জকিগঞ্জে তাণ্ডব

ভুক্তভোগী পরিবার ফিরলেও, ইয়াবা নেই, ব্যবস্থা শূন্য

আপডেট সময় :

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বাগানবাড়ি কাচারচক গ্রামে মাদক নিয়ে বিরোধের জেরে একই গ্রামের তাজেল আহমদ দুদনের বিরুদ্ধে নারী-শিশুসহ সাত সদস্যের একটি পরিবারকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৮ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মৃত মনই মিয়ার স্ত্রী রেশমা বেগম, ছেলে নজরুল ইসলাম নজু এবং স্ত্রী খাদেজা আক্তার, ভাবি পারভীন আক্তার নিশ্চিত করেছেন যে, তাজেল আহমদ তাদের ঘরে একটি ব্যাগ রেখে গিয়েছিল। ওই ব্যাগে ছিল ২০ হাজার পিস ইয়াবা। পরে ওই ইয়াবা নিয়ে পলাতক হন নজরুল ইসলাম নজু।
রেশমা বেগম জানান, ১২ সেপ্টেম্বর তাজেল আহমদ একটি ব্যাগ রেখে যান। পরদিন তার ছেলে নজরুল ইসলাম নজু ওই ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর তাজেল আহমদ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পরিবারের সবাইকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে দেন।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ও জকিগঞ্জ থানা পুলিশের উদ্যোগে তালা ভেঙে পরিবারটিকে পুনরায় ঘরে প্রবেশ করানো হয়। রেশমা বেগমের অভিযোগ অনুযায়ী, ওই ব্যাগে ছিল প্রায় ২০ হাজার পিস ইয়াবা যার বাজার মূল্য আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে অডিও ও ভিডিও প্রমাণও রয়েছে।
ঘটনার জেরে ১৪ সেপ্টেম্বর জকিগঞ্জ থানার এসআই সজীব দেব রায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, যেখানে নিরাপত্তা বিঘ্ন ও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়। তিনি বলেন, “রেশমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে তালা খুলে পরিবারটিকে ঘরে প্রবেশ করানো হয় এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে আপোষনামা স্বাক্ষরিত হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”
তবে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, মাদকের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ থাকলেও কেন কেবল আপোষের মাধ্যমে বিষয় নিষ্পত্তি করা হলো? এলাকার এক গোপনীয় সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ী তাজেল আহমদ দুদনের সম্পদ ও আয়ের উৎস নিয়েও নানা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, যা তদন্তে সামনে আসবে বলে বিশ্বাস করেন তারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, “তাজেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, সে জানিয়েছে রেশমা বেগমের ছেলে নজরুল ইসলাম নজু তার ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য চার লক্ষ টাকা নিয়েছে। সেই পাওনা দাবি করতেই গিয়েছিল। মাদকের প্রসঙ্গে রেশমা তখন মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না বলে দাবি করেছে।”
স্থানীয়রা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন, মাদকের বিরুদ্ধে মুখ খোলা পরিবারকে আইনি সহায়তা দেওয়া হোক এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।