মাতৃহারা তানিয়া নড়িয়ার সেরা জয়িতা অদম্য নারী
- আপডেট সময় : ১১ বার পড়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে অদম্য নারী পুরস্কার শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় উপজেলা পর্যায়ে সেরা অদম্য নারী হিসেবে নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবন সংগ্রামে জয়ী নারী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করেছে নড়িয়া উপজেলার শিরংগল গ্রামের তানিয়া আক্তার।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ও নড়িয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে নড়িয়া উপজেলা পরিষদের হলরুমে আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে অদম্য নারী হিসেবে তানিয়াকে সংবর্ধনা ক্রেস্ট তুলে দেন নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাইয়ুম খান। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতিমা নাহিয়ান এর সভাপতিত্বে এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট লাকি দাস ।
রোকেয়া দিবসে মোট ৫ জন নারীকে পুরস্কার প্রদান করা হয় । গ্রামের আইজুদ্দীন বেপারী, তার মেয়ে আসমার সাথে চাঁদপুর জেলার নুরুল আমীনের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের দেড় বছর পরে নরুল আমীন ও আসমা আমিনের সংসারে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। নাম রাখা হয় তানিয়া আক্তার। তানিয়ার জন্মের পরে বাবা নুরুল আমীন শিশু কন্যা তানিয়া ও তানিয়ার মা আসমা আমীনকে ফেলে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। তানিয়া ছেলে না হয়ে কন্যা হিসেবে জন্ম নেওয়ায় ছিল পিতা নুরুল আমীনের কাছে অপরাধ। পরে সন্তান তানিয়াকে নিয়ে আসমা আমিন তার বাবা আইজুদ্দীন বেপারী আশ্রয়ে আসেন। হাস মুরগি গরু ছাগল পালন করে তানিয়াকে নিয়ে চলে মা আসমার সংগ্রামী জীবন। মায়ের আদর স্নেহের মাঝেই বেড়ে উঠছিল তানিয়া। কিন্তু প্রথম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় তানিয়ার বয়স যখন ৬ বছর তখন শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে মারা যায় তার মা আসমা আমিন । তখন থেকেই সংগ্রামী জীবন শুরু হয় শিশু তানিয়ার । ভালছাত্রী হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্নেহ ভালবাসায় ঝরে পড়েনি তানিয়া। নানার বাড়ীতে আশ্রয়ে থেকে সংসারের সকল কাজকর্ম করে এবং শিশু বয়স থেকেই হাস মুরগি পালন করে চালিয়ে যান তার লেখা পড়া। তানিয়া নিজ উদ্যোগে এসএসসিতে জিপিএ ৪.৪৫ ও এইচএসসি তে জিপিএ ৩.২০ এবং স্নাতক পাশ করে এলএলবি ফাইলাল ইয়ারে বর্তমানে অধ্যায়ন করছে মাদারীপুর ল কলেজ থেকে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি হয়েছে সংগ্রামী সাহসী নারী উদ্যোক্তা । সংসারের দারিদ্রতা দুরীকরনে পিছিয়ে পড়া নারীদের প্রশিক্ষণে গড়ে তুলেছেন গ্রামে কিশোরী ক্লাব । সেখানে তিনি মেয়েদের প্রশিক্ষিত করে উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এগিয়ে যাচ্ছেন । বর্তমানে তিনি স্কলারশিপ পেয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে জাপান ও অষ্ট্রেলিয়ায়। তানিয়ার স্বপ্ন, সে বেরিস্টার বা বিচারক হওয়ার । কিন্তু বিদেশ যেতে টাকা যোগার করতে সমষ্যায় পড়েছেন তিনি । আত্মীয় স্বজনদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন তিনি। তিনি দেশের মানবিক মানুষের কাছেও চেয়েছেন সহায়তা। তার বিকাশ নম্বর ০১৭৫৭৬৭০০২৯।


















