ঢাকা ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

মাদারীপুর হাসপাতালে দুদকের অভিযান, পেল দুর্নীতির সত্যতা

মাদারীপুর প্রতিনিধি 
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবাদ ২৬ লাখ টাকা ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ, রোগীর খাবার বিতরণের অনিয়ম, কাঙ্খিত সেবা না পাওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বেলা ১২টার দিকে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করেন।

দুদক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের শকুনি মৌজায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাততলা বিশিষ্ট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালটি ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এরপর ২০২৩ সালের ২ ফেব্রæয়ারি হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হয়। এরপর তিন কোটি টাকা ব্যায়ে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়। রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বরে উদ্বোধন করা হলেও শুরু থেকে তালাবদ্ধ আইসিইউ’টি। এতে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটের কোনো সেবা পাচ্ছে না মুমূর্ষু রোগীরা। এ ছাড়াও হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালে আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকলেও সেবাপ্রত্যাশিরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রতিনিয়ত রোগীদের নি¤œ মানের খাবার সরবারহ করা হয়। সিটিস্ক্যান মেশিন এক মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও সচল করার কোন উদ্যোগ নেই। এ ছাড়াও হাসপাতালে সাবেক প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক গোলাম কাওসার মিয়া হাসপাতালের জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবাদ ২৬ লাখ টাকা ভুয়া বিল ভাউচার করে তুলে নিয়ে গেছেন বলে জানায় দুদক। এসব নিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয় এক ভুক্তভোগী। বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে অভিযানে চালায় দুদক কর্মকর্তারা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালের নানান অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দুদক। প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ের সত্যতাও পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নথিপত্র যাছাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিশেষ করে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রোববার ১৯৭ জনের খাবার রান্না করা হয়েছে। বাস্তবে সেই খাবার ১০০ জনও খেতে পারবে না। এ ছাড়াও জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবাদ ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের দৃশ্যমান অনিয়ম হয়েছে। ২৬ লাখ টাকার সঠিক কোন ভাউচার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে দেখাতে পারেনি।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের  তত্ত্বাবধায়ক কাম সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল বলেন, ‘দুদকের অভিযানের বিষয় আমাকে জানানো হয়নি। রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত এমন অভিযোগগুলো দুদকের ‘গদবাঁধা কথা’। হাসপাতালের খাবার নিয়মিত তদারকি করা হয়। খাবার বিতরণে কোন অনিয়ম নেই। সিটিস্ক্যান মেশিনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। যা মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। আইসিইউ চালু ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাদারীপুর হাসপাতালে দুদকের অভিযান, পেল দুর্নীতির সত্যতা

আপডেট সময় : ০৩:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবাদ ২৬ লাখ টাকা ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ, রোগীর খাবার বিতরণের অনিয়ম, কাঙ্খিত সেবা না পাওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বেলা ১২টার দিকে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করেন।

দুদক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের শকুনি মৌজায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাততলা বিশিষ্ট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালটি ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এরপর ২০২৩ সালের ২ ফেব্রæয়ারি হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হয়। এরপর তিন কোটি টাকা ব্যায়ে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়। রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বরে উদ্বোধন করা হলেও শুরু থেকে তালাবদ্ধ আইসিইউ’টি। এতে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটের কোনো সেবা পাচ্ছে না মুমূর্ষু রোগীরা। এ ছাড়াও হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হাসপাতালে আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকলেও সেবাপ্রত্যাশিরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রতিনিয়ত রোগীদের নি¤œ মানের খাবার সরবারহ করা হয়। সিটিস্ক্যান মেশিন এক মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও সচল করার কোন উদ্যোগ নেই। এ ছাড়াও হাসপাতালে সাবেক প্রধান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক গোলাম কাওসার মিয়া হাসপাতালের জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবাদ ২৬ লাখ টাকা ভুয়া বিল ভাউচার করে তুলে নিয়ে গেছেন বলে জানায় দুদক। এসব নিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয় এক ভুক্তভোগী। বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে অভিযানে চালায় দুদক কর্মকর্তারা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালের নানান অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দুদক। প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন বিষয়ের সত্যতাও পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নথিপত্র যাছাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিশেষ করে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রোববার ১৯৭ জনের খাবার রান্না করা হয়েছে। বাস্তবে সেই খাবার ১০০ জনও খেতে পারবে না। এ ছাড়াও জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবাদ ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের দৃশ্যমান অনিয়ম হয়েছে। ২৬ লাখ টাকার সঠিক কোন ভাউচার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে দেখাতে পারেনি।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের  তত্ত্বাবধায়ক কাম সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শরীফুল আবেদীন কমল বলেন, ‘দুদকের অভিযানের বিষয় আমাকে জানানো হয়নি। রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত এমন অভিযোগগুলো দুদকের ‘গদবাঁধা কথা’। হাসপাতালের খাবার নিয়মিত তদারকি করা হয়। খাবার বিতরণে কোন অনিয়ম নেই। সিটিস্ক্যান মেশিনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। যা মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। আইসিইউ চালু ব্যাপারেও আমরা কাজ করছি।’