ঢাকা ০৬:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ‘নবীনগর বিএনপির হাল ধরে রাখার চেষ্টা করেছি’ Logo মুরাদনগরে ঘরে ঢুকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫ Logo লোহাগড়ায় জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের কমিটি কমিটির গঠন Logo সাদুল্লাপুর ইউএনও’র বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ Logo কোটচাঁদপুরের আদম ব্যবসায়ী নজরুল-মামুনের ফাঁদে সর্বস্বান্ত ১২ পরিবার Logo ঝিনাইদহে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা Logo তিতাসে রাজমিস্ত্রীর হাত পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার Logo তাড়াইল বাজারের ড্রেনে যেন ময়লার ভাগাড়, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য Logo ‘জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন’ Logo গোবিন্দগঞ্জ শিশু ধর্ষণ গণপিটুনিতে ধর্ষক নিহত

মোংলায় ৩৬ ঘন্টা পার হলেও ডুবন্ত কার্গো জাহাজ উদ্ধারে অগ্রগতি নেই

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:৪৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঘটনার ৩৬ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এখন উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়নী মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ত্রি-মোহনায় ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ “এমভি মিজান-১”
গত শুক্রবার রাতে মোংলা থানায় সাধারণ ডায়রী করতে গেলে পুলিশ তা না নিলেও দাকোপ থানায় জিডি করেছে জাহাজের মাস্টার মোঃ বেল্লাল হোসেন। অন্য লাইটারের সংঘর্ষে কার্গো জাহাজ ডুবিতে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণ করেছে পন্য আমদানিকারক ও জাহাজ মাস্টার সহ মালিক পক্ষ।
এ সময় ১০ নাবিক সাতারকেটে জীবিত উদ্ধার হলেও তাদের মুল্যবান মালামাল কিছুই রক্ষা করতে পারেনী জাহাজে থাকা নাবিকরা। কার্গো ডুবিতে বন্দরের মুল চ্যানেলের তেমন ক্ষতি না হলেও বন্দরের পক্ষ থেকে কার্গো ও লাইটার জাহাজের দুই মালিক পক্ষকে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পণ্য বোঝাই ডুবন্ত কার্গো জাহাজের মাস্টার মোঃ বেল্লাল হোসেন জানায়, ভারতের কলকাতার ভেন্ডেল থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইঅ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) বোঝাই করে ঢাকার মেঘনা ব্রিজের পাশে হোলসিম সিমেন্টস ফ্যাক্টোরিতে যাওয়ার উদ্দোশ্যে রওয়ানা হয় তারা। পথিমধ্যে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় যাত্রা বিরতি ও খাদ্য সামগ্রী কেনার জন্য অবস্থার করছিলেন। সকালে হঠাৎ করে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি খালী বড় লাইটার জাহাজ “এমভি কে আলম গুলশান-২” কার্গোটির সাথে সংঘর্ষ হয় এবং তাদের জাহাজের ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে পন্য বোঝাই কার্গো “এমভি জাহাজ মিজান-১” এর তলা ফেটে মুহুর্তের মধ্যে ডুবে যায় জাহাজটি। এসময় মাস্টার সহ জাহাজে থাকা ১০ জন নাবিক অন্য নৌযানের সহায়তায় সাতার কেটে কিনারে উঠতে সক্ষম হয়। কার্গো জাহাজে থাকা নাবিকরা প্রানে বেঁচে পেলেও তাদের নগদ টাকা ও মুল্যবান মালামাল কিছুই রক্ষা করতে পারনী। তারা এখন মোংলা বন্দরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে।
মাস্টার আরো জানান, কার্গো ডুবির পর অন্যান্য নাবিকদের নিয়ে প্রথমে মোংলা থানায় সাধারণ ডায়রী করতে যাওয়া হলে পশুর চ্যানেলটি দুই থানার মধ্যবর্তী হওয়ায় মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান জিডি নিতে রাজি হন নি। পরবর্তীতে পার্শবর্তী দাকোপ থানায় রাতে জিডি করা হয়েছে। পন্য বোঝাই কার্গো ডুবিতে ফ্লাইএ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) সহ অনুমান ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা জাহাজ মাস্টার বেল্লাল হোসেনের। তবে এঘটনায় এখনও কোন মামলা করা হয়নী কারণ, কার্গো ও লাইটার জাহাজের দুই মালিক পক্ষ একে অপারের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে, তারাই নিজেরা বসে পন্য আমদানীকারকদের সাথে সমোজতা হওয়ার সম্ভাবনা বলেও জানায় তিনি। আর ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি তলা ফেটে দুই ভাগ হয়ে পুরো-পুরি ডুবে রয়েছে এবং জাহাজের থাকা ফ্লাইএ্যাস অধিকাংশই নদীতে ভেসে গেছে।
এদিকে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মো: মাকরুজ্জামান বলেন, মোংলা পশুর নদী ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনায় বন্দরের হারবার বিভাগের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন সহ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে হারবার বিভাগের সদস্য সেখানে অবস্তান করছে। এছাড়া ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি দুর্ঘটনা কবলীত স্থন চিহ্ণিত করার জন্য মার্কিন করে রাখা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটিতে বন্দরের অফিস বন্ধ থাকায় মৌখিক ভাবে দুই মালিক পক্ষকে ডুবন্ত কার্গোটি দ্রæত উত্তোলনের জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। রবিবার বন্দরের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল ভাবে পশুর চ্যানেল থেকে ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উত্তোলন করে চ্যানেল ঝুকি মুক্ত রাখার জন্য মালিক পক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। তাদেরকে ১৫ দিনের সময় বেধে দেয়া হবে, যদি ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উঠাতে ব্যার্থ হয় তা হলে বন্দরের নিজেস্ব সম্পদ হিসেবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় বন্দরই ব্যাবস্থা নেবে বলে জানায় তিনি। এছাড়া, ডুবন্ত কার্গোটি মেইন চ্যানেল থেকে অনেকটা দুরে ডুবে আছে। বন্দরে পন্য বোঝাই জাহাজ আগামন নির্গামনের মুল চ্যানেল সুরক্ষিত রয়েছে। পন্যবাহী জাহাজ বা অন্যান্য নৌযান চলাচল স্বাভাবিক-মুল চ্যানেল সম্পুর্ন ঝুকি মুক্ত।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোংলায় ৩৬ ঘন্টা পার হলেও ডুবন্ত কার্গো জাহাজ উদ্ধারে অগ্রগতি নেই

আপডেট সময় : ১২:৪৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

ঘটনার ৩৬ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এখন উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়নী মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ত্রি-মোহনায় ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ “এমভি মিজান-১”
গত শুক্রবার রাতে মোংলা থানায় সাধারণ ডায়রী করতে গেলে পুলিশ তা না নিলেও দাকোপ থানায় জিডি করেছে জাহাজের মাস্টার মোঃ বেল্লাল হোসেন। অন্য লাইটারের সংঘর্ষে কার্গো জাহাজ ডুবিতে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণ করেছে পন্য আমদানিকারক ও জাহাজ মাস্টার সহ মালিক পক্ষ।
এ সময় ১০ নাবিক সাতারকেটে জীবিত উদ্ধার হলেও তাদের মুল্যবান মালামাল কিছুই রক্ষা করতে পারেনী জাহাজে থাকা নাবিকরা। কার্গো ডুবিতে বন্দরের মুল চ্যানেলের তেমন ক্ষতি না হলেও বন্দরের পক্ষ থেকে কার্গো ও লাইটার জাহাজের দুই মালিক পক্ষকে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পণ্য বোঝাই ডুবন্ত কার্গো জাহাজের মাস্টার মোঃ বেল্লাল হোসেন জানায়, ভারতের কলকাতার ভেন্ডেল থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইঅ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) বোঝাই করে ঢাকার মেঘনা ব্রিজের পাশে হোলসিম সিমেন্টস ফ্যাক্টোরিতে যাওয়ার উদ্দোশ্যে রওয়ানা হয় তারা। পথিমধ্যে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় যাত্রা বিরতি ও খাদ্য সামগ্রী কেনার জন্য অবস্থার করছিলেন। সকালে হঠাৎ করে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি খালী বড় লাইটার জাহাজ “এমভি কে আলম গুলশান-২” কার্গোটির সাথে সংঘর্ষ হয় এবং তাদের জাহাজের ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে পন্য বোঝাই কার্গো “এমভি জাহাজ মিজান-১” এর তলা ফেটে মুহুর্তের মধ্যে ডুবে যায় জাহাজটি। এসময় মাস্টার সহ জাহাজে থাকা ১০ জন নাবিক অন্য নৌযানের সহায়তায় সাতার কেটে কিনারে উঠতে সক্ষম হয়। কার্গো জাহাজে থাকা নাবিকরা প্রানে বেঁচে পেলেও তাদের নগদ টাকা ও মুল্যবান মালামাল কিছুই রক্ষা করতে পারনী। তারা এখন মোংলা বন্দরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে।
মাস্টার আরো জানান, কার্গো ডুবির পর অন্যান্য নাবিকদের নিয়ে প্রথমে মোংলা থানায় সাধারণ ডায়রী করতে যাওয়া হলে পশুর চ্যানেলটি দুই থানার মধ্যবর্তী হওয়ায় মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান জিডি নিতে রাজি হন নি। পরবর্তীতে পার্শবর্তী দাকোপ থানায় রাতে জিডি করা হয়েছে। পন্য বোঝাই কার্গো ডুবিতে ফ্লাইএ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) সহ অনুমান ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা জাহাজ মাস্টার বেল্লাল হোসেনের। তবে এঘটনায় এখনও কোন মামলা করা হয়নী কারণ, কার্গো ও লাইটার জাহাজের দুই মালিক পক্ষ একে অপারের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে, তারাই নিজেরা বসে পন্য আমদানীকারকদের সাথে সমোজতা হওয়ার সম্ভাবনা বলেও জানায় তিনি। আর ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি তলা ফেটে দুই ভাগ হয়ে পুরো-পুরি ডুবে রয়েছে এবং জাহাজের থাকা ফ্লাইএ্যাস অধিকাংশই নদীতে ভেসে গেছে।
এদিকে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মো: মাকরুজ্জামান বলেন, মোংলা পশুর নদী ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনায় বন্দরের হারবার বিভাগের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন সহ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে হারবার বিভাগের সদস্য সেখানে অবস্তান করছে। এছাড়া ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি দুর্ঘটনা কবলীত স্থন চিহ্ণিত করার জন্য মার্কিন করে রাখা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটিতে বন্দরের অফিস বন্ধ থাকায় মৌখিক ভাবে দুই মালিক পক্ষকে ডুবন্ত কার্গোটি দ্রæত উত্তোলনের জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। রবিবার বন্দরের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল ভাবে পশুর চ্যানেল থেকে ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উত্তোলন করে চ্যানেল ঝুকি মুক্ত রাখার জন্য মালিক পক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। তাদেরকে ১৫ দিনের সময় বেধে দেয়া হবে, যদি ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উঠাতে ব্যার্থ হয় তা হলে বন্দরের নিজেস্ব সম্পদ হিসেবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় বন্দরই ব্যাবস্থা নেবে বলে জানায় তিনি। এছাড়া, ডুবন্ত কার্গোটি মেইন চ্যানেল থেকে অনেকটা দুরে ডুবে আছে। বন্দরে পন্য বোঝাই জাহাজ আগামন নির্গামনের মুল চ্যানেল সুরক্ষিত রয়েছে। পন্যবাহী জাহাজ বা অন্যান্য নৌযান চলাচল স্বাভাবিক-মুল চ্যানেল সম্পুর্ন ঝুকি মুক্ত।