ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

মোরেলগঞ্জ ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা শুরু

বাগেরহাট প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রায় ৩০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা আজ বুধবার শুরু হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চলে সপ্তাহব্যাপী।
মেলা প্রাঙ্গন এখন সাজসাজ রব। মেলার মাঠ সেজেছে শিশু বিনোদনের খেলনাসহ নানা সামগ্রীতে। শত শত দোকানী বসেছে তাদের নানা পসরা নিয়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপড়ে পড়া ভীড় হয় এ মেলায়। প্রতিবছর ২৫ অগ্রহায়ণ থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হবার নিয়ম থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েক দিন আগে থেকেই মেলা জমে উঠে।
গতকাল মঙ্গলবার কালাচাঁদ মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মেলা শুরুর দুই-তিন দিন আগে থেকেই বসেছে নানা দোকান। ইতোমধ্যে শত শত দোকানি মেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের খেলনা, টমটম, কাঠের বাঁশি, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, গৃহস্থদের ঘরে ব্যবহারে কাঠের নানা সামগ্রী দোকান নিয়ে বসেছেন। এ ছাড়া প্রসাধনী কসমেটিকস, পাশাপাশি বসেছে মিষ্টি, মুড়ি মোয়ার দোকান। হাসিখুশি পানের দোকানে বিক্রি হচ্ছে নবরাজ, আগুন পান, মনের মতো পান। ১০-১৫ ধরনের মসলা দিয়ে এ পান বিক্রি হচ্ছে ১০-১০০ টাকায়। আচারের দোকানে আমের কাশ্মিরী মোরব্বা, গরুর গোশতের আচার, চালকুমড়ার আচার, পেঁপে, শিম, মিক্স আচার, আলু বোখারা, কিশমিশসহ ১০০ ধরনের আচার পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দোকানীরা জানায়,তারা ৩০-৩৫ বছর ধরে এ মেলায় দোকান নিয়ে আসে। লক্ষ লক্ষ টাকা বেচা কেনা হয় দোকানীদের।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে শিশু কালাচাঁদ আউলিয়া পানগুছি নদীতে ভেসে এসেছিলেন। তিনি বারইখালী কাজী বাড়ি এলাকায় বটগাছের নিচে আস্তনাা গেড়েছিলেন। লোকমুখে রয়েছে তার বিভিন্ন ধরনের অলৌকিক কাহিনি। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত, আশেকানবৃন্দ ও দর্শনার্থীরা এ মেলায় সমবেত হয়। জনশ্রæতি রয়েছে , এক লোক শীতার্ত কালাচাঁদকে দেখে তার গায়ের চাদর দিয়ে দেন। কালাচাঁদ চাদরটি পেয়ে তার সামনে জ্বলন্ত আগুনে ফেলে দিলে তা পুড়ে যায়। এতে ওই লোকটি আফসোস করলে কালাচাঁদ জ্বলন্ত আগুন থেকে অক্ষত চাদরটি উঠিয়ে তাকে ফেরত দেন। সমসাময়িক সময়ে কালাচাঁদ আউলিয়া নাকি বাঘের পিঠে ঘুরে বেড়াতেন। এভাবে তার নামে রয়েছে নানা জনশ্্রুতি। বারইখালী ফকিরের তাকিয়া মৌজা তার নামেই হয়েছে। বারইখালীর কাজী বাড়ির চত্বরে তিনি আস্তানা গড়েন এবং আর এখানেই তিনি জ্যান্ত কবর নিয়েছিল বলেও প্্রবীনরা জানান। তার নামেই এখানে প্রতি বছর মেলা বসে।
তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় রাতভর চলবে ওয়াজ মাহফিল, ওরস, মুর্শিদী ও মাইজভান্ডারী গান। ভক্তরা কালাচাঁদ আউলিয়ার মাজারে আগরবাতি আর মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। হাজারো ভক্ত মনের আশা পূরণ আর মানতের টাকা-পয়সা মাজারে দান করে তৃপ্ত হবে।
কালাচাঁদ আউলিয়া মাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ জানান, অত্যন্ত স্বপ্লপরিসরে ৩ দিনের জন্য এ মেলার আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ঝুকিঁপূর্ণ কোন রাইড কিংবা অববৈধ কিছু চলতে পারবেনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোরেলগঞ্জ ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা শুরু

আপডেট সময় :

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রায় ৩০১ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার মেলা আজ বুধবার শুরু হয়েছে। তিনদিন ব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চলে সপ্তাহব্যাপী।
মেলা প্রাঙ্গন এখন সাজসাজ রব। মেলার মাঠ সেজেছে শিশু বিনোদনের খেলনাসহ নানা সামগ্রীতে। শত শত দোকানী বসেছে তাদের নানা পসরা নিয়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপড়ে পড়া ভীড় হয় এ মেলায়। প্রতিবছর ২৫ অগ্রহায়ণ থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হবার নিয়ম থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েক দিন আগে থেকেই মেলা জমে উঠে।
গতকাল মঙ্গলবার কালাচাঁদ মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মেলা শুরুর দুই-তিন দিন আগে থেকেই বসেছে নানা দোকান। ইতোমধ্যে শত শত দোকানি মেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের খেলনা, টমটম, কাঠের বাঁশি, সিলভারের হাঁড়ি-পাতিল, গৃহস্থদের ঘরে ব্যবহারে কাঠের নানা সামগ্রী দোকান নিয়ে বসেছেন। এ ছাড়া প্রসাধনী কসমেটিকস, পাশাপাশি বসেছে মিষ্টি, মুড়ি মোয়ার দোকান। হাসিখুশি পানের দোকানে বিক্রি হচ্ছে নবরাজ, আগুন পান, মনের মতো পান। ১০-১৫ ধরনের মসলা দিয়ে এ পান বিক্রি হচ্ছে ১০-১০০ টাকায়। আচারের দোকানে আমের কাশ্মিরী মোরব্বা, গরুর গোশতের আচার, চালকুমড়ার আচার, পেঁপে, শিম, মিক্স আচার, আলু বোখারা, কিশমিশসহ ১০০ ধরনের আচার পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দোকানীরা জানায়,তারা ৩০-৩৫ বছর ধরে এ মেলায় দোকান নিয়ে আসে। লক্ষ লক্ষ টাকা বেচা কেনা হয় দোকানীদের।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে শিশু কালাচাঁদ আউলিয়া পানগুছি নদীতে ভেসে এসেছিলেন। তিনি বারইখালী কাজী বাড়ি এলাকায় বটগাছের নিচে আস্তনাা গেড়েছিলেন। লোকমুখে রয়েছে তার বিভিন্ন ধরনের অলৌকিক কাহিনি। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার ভক্ত, আশেকানবৃন্দ ও দর্শনার্থীরা এ মেলায় সমবেত হয়। জনশ্রæতি রয়েছে , এক লোক শীতার্ত কালাচাঁদকে দেখে তার গায়ের চাদর দিয়ে দেন। কালাচাঁদ চাদরটি পেয়ে তার সামনে জ্বলন্ত আগুনে ফেলে দিলে তা পুড়ে যায়। এতে ওই লোকটি আফসোস করলে কালাচাঁদ জ্বলন্ত আগুন থেকে অক্ষত চাদরটি উঠিয়ে তাকে ফেরত দেন। সমসাময়িক সময়ে কালাচাঁদ আউলিয়া নাকি বাঘের পিঠে ঘুরে বেড়াতেন। এভাবে তার নামে রয়েছে নানা জনশ্্রুতি। বারইখালী ফকিরের তাকিয়া মৌজা তার নামেই হয়েছে। বারইখালীর কাজী বাড়ির চত্বরে তিনি আস্তানা গড়েন এবং আর এখানেই তিনি জ্যান্ত কবর নিয়েছিল বলেও প্্রবীনরা জানান। তার নামেই এখানে প্রতি বছর মেলা বসে।
তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় রাতভর চলবে ওয়াজ মাহফিল, ওরস, মুর্শিদী ও মাইজভান্ডারী গান। ভক্তরা কালাচাঁদ আউলিয়ার মাজারে আগরবাতি আর মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। হাজারো ভক্ত মনের আশা পূরণ আর মানতের টাকা-পয়সা মাজারে দান করে তৃপ্ত হবে।
কালাচাঁদ আউলিয়া মাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ জানান, অত্যন্ত স্বপ্লপরিসরে ৩ দিনের জন্য এ মেলার আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ঝুকিঁপূর্ণ কোন রাইড কিংবা অববৈধ কিছু চলতে পারবেনা।