ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

যশোরে প্রার্থী পরিবর্তন চেয়ে তারেক রহমানের কাছে আবেদন

শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ২৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির প্রার্থী সংস্কারপন্হী নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে পরিবর্তন করে ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার আবেদন করেছেন শার্শা উপজেলা বিএনপি, বেনাপোল পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ ৮৯ নেতা। গতকাল রোববার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর তারা এই আবেদন করেছেন।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনেরসমূহের নেতাদের পক্ষে যশোর-১ আসনে প্রাথমিকভাবে ঘোষিত সংস্কারপন্হী প্রার্থী পরিবর্তনের পুনঃবিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি।
সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু বলেন, আমাদের ৮৯ জন নেতার স্বাক্ষরিত আবেদন জমা দিয়েছি। কারণ যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে তার সাথে দলের নেতাকর্মী ও জনগণ কারো সম্পর্ক নেই। এই আসন থেকে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে মনোনয়ন দেওয়ায় উপজেলার ৮০ শতাংশ দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা নেমে এসেছে। বিগত ১৭ বছর নেতাকর্মীদের দুর্দিনে-বিপদে তিনি পাশে ছিলেন না। মামলা হামলায় কখনো পাশে দাঁড়াননি। এমনকি আন্দোলন সংগ্রাম এগিয়ে নিতেও তার কোন ভূমিকা ছিলো না। এমন প্রার্থীর পক্ষে কর্মীদের মাঠে নামানো কঠিন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কোন পছন্দের প্রার্থী নেই। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যেকোনো নেতাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক তার পক্ষে আমরা নির্বাচন করবো। শার্শা উপজেলা বিএনপি, বেনাপোল পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৮৯ জন নেতা প্রার্থী পুনঃবিবেচনার আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। আমরা মনে করছি জামায়াতের প্রার্থীর বিপরীতে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বিজয়ী করা অসম্ভব। তার জনপ্রিয়তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা নতুন প্রার্থী প্রত্যাশী।
আবেদনপত্রে কারণ সমূহ:
বিএনপির তৃনমূলের নেতৃবৃন্দ ও সমর্থকদের ক্ষোভ যে, ১/১১ এর সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবার ও বিএনপিকে ধ্বংস করার মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি। সে সময় মফিকুল হাসান তৃপ্তির নির্দেশে শার্শা উপজেলার বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের হয়রানি- নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো।
তৎকালীন সময় ডিজিএফআইয়ের দোসর মফিকুল হাসান তৃপ্তির সহযোগিতায় ১/১১ এর সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চার দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি ভোট করেন মফিকুল হাসান তৃপ্তি।
বিগত ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপির দুঃসময়ে শার্শায় আন্দোলন সংগ্রামে তার কোন ভূমিকা ছিল না। ১৬ বছর তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন, এমনকি দলের নেতা-কর্মীদের চরম বিপদের সময়ে তাকে পাশে পাওয়া যায়নি। ২০১৭ সালে তার বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার করে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি দলীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেননি।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও তাকে নির্বাচনী এলাকায় দেখা যায়নি। সেসময় তিনি তার যশোরের বাড়িতে বসে অলস সময় কাটিয়েছেন। পরে দলীয় নেতাকর্মীদের চাপের মুখে একদিন তিন থেকে চার ঘন্টা নির্বাচনী এলাকায় এসে ঘুরে যান। সেই নির্বাচনের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার শিকার হন। অত্যান্ত দুঃখের বিষয় মফিকুল হাসান তৃপ্তি সেসময় নির্যাতিত নেতাকর্মীদের কোন প্রকার সহযোগিতা করেননি বরং এলাকায়ও তাকে দেখা যায়নি।
বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে এলাকায় কোন মামলা হয়নি।
মফিকুল হাসান তৃপ্তি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগি এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাজ পরিচালনা করছেন। তার পোষ্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
বেনাপোল পৌর যুবদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান বাবু জানান, শার্শা উপজেলার বিএনপি সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকদের দাবীর প্রেক্ষিতে আসন্ন ২০২৬ সালের যশোর ৮৫-১ (শার্শা) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তন ও পুনঃবিবেচনা করে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব নেতারা হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ও দুঃসময়ে দলকে সু-সংগঠিত করে রেখেছে তাদের মধ্য থেকে যে কাউকে মনোনয়ন প্রদানের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। তাদেরকেই মনোনয়ন প্রদান করার জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত ৩ নভেম্বর সারাদেশে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওইদিন যশোর ৮৫-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

যশোরে প্রার্থী পরিবর্তন চেয়ে তারেক রহমানের কাছে আবেদন

আপডেট সময় :

যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির প্রার্থী সংস্কারপন্হী নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে পরিবর্তন করে ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার আবেদন করেছেন শার্শা উপজেলা বিএনপি, বেনাপোল পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ ৮৯ নেতা। গতকাল রোববার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর তারা এই আবেদন করেছেন।
শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনেরসমূহের নেতাদের পক্ষে যশোর-১ আসনে প্রাথমিকভাবে ঘোষিত সংস্কারপন্হী প্রার্থী পরিবর্তনের পুনঃবিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি।
সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু বলেন, আমাদের ৮৯ জন নেতার স্বাক্ষরিত আবেদন জমা দিয়েছি। কারণ যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে তার সাথে দলের নেতাকর্মী ও জনগণ কারো সম্পর্ক নেই। এই আসন থেকে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে মনোনয়ন দেওয়ায় উপজেলার ৮০ শতাংশ দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা নেমে এসেছে। বিগত ১৭ বছর নেতাকর্মীদের দুর্দিনে-বিপদে তিনি পাশে ছিলেন না। মামলা হামলায় কখনো পাশে দাঁড়াননি। এমনকি আন্দোলন সংগ্রাম এগিয়ে নিতেও তার কোন ভূমিকা ছিলো না। এমন প্রার্থীর পক্ষে কর্মীদের মাঠে নামানো কঠিন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কোন পছন্দের প্রার্থী নেই। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যেকোনো নেতাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক তার পক্ষে আমরা নির্বাচন করবো। শার্শা উপজেলা বিএনপি, বেনাপোল পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৮৯ জন নেতা প্রার্থী পুনঃবিবেচনার আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। আমরা মনে করছি জামায়াতের প্রার্থীর বিপরীতে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বিজয়ী করা অসম্ভব। তার জনপ্রিয়তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা নতুন প্রার্থী প্রত্যাশী।
আবেদনপত্রে কারণ সমূহ:
বিএনপির তৃনমূলের নেতৃবৃন্দ ও সমর্থকদের ক্ষোভ যে, ১/১১ এর সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবার ও বিএনপিকে ধ্বংস করার মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি। সে সময় মফিকুল হাসান তৃপ্তির নির্দেশে শার্শা উপজেলার বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের হয়রানি- নির্যাতন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো।
তৎকালীন সময় ডিজিএফআইয়ের দোসর মফিকুল হাসান তৃপ্তির সহযোগিতায় ১/১১ এর সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চার দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি ভোট করেন মফিকুল হাসান তৃপ্তি।
বিগত ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিএনপির দুঃসময়ে শার্শায় আন্দোলন সংগ্রামে তার কোন ভূমিকা ছিল না। ১৬ বছর তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন, এমনকি দলের নেতা-কর্মীদের চরম বিপদের সময়ে তাকে পাশে পাওয়া যায়নি। ২০১৭ সালে তার বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার করে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি দলীয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেননি।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও তাকে নির্বাচনী এলাকায় দেখা যায়নি। সেসময় তিনি তার যশোরের বাড়িতে বসে অলস সময় কাটিয়েছেন। পরে দলীয় নেতাকর্মীদের চাপের মুখে একদিন তিন থেকে চার ঘন্টা নির্বাচনী এলাকায় এসে ঘুরে যান। সেই নির্বাচনের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার শিকার হন। অত্যান্ত দুঃখের বিষয় মফিকুল হাসান তৃপ্তি সেসময় নির্যাতিত নেতাকর্মীদের কোন প্রকার সহযোগিতা করেননি বরং এলাকায়ও তাকে দেখা যায়নি।
বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে এলাকায় কোন মামলা হয়নি।
মফিকুল হাসান তৃপ্তি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগি এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাজ পরিচালনা করছেন। তার পোষ্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
বেনাপোল পৌর যুবদলের আহবায়ক মফিজুর রহমান বাবু জানান, শার্শা উপজেলার বিএনপি সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকদের দাবীর প্রেক্ষিতে আসন্ন ২০২৬ সালের যশোর ৮৫-১ (শার্শা) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তন ও পুনঃবিবেচনা করে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব নেতারা হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ও দুঃসময়ে দলকে সু-সংগঠিত করে রেখেছে তাদের মধ্য থেকে যে কাউকে মনোনয়ন প্রদানের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। তাদেরকেই মনোনয়ন প্রদান করার জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত ৩ নভেম্বর সারাদেশে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওইদিন যশোর ৮৫-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।