ঢাকা ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ডামুড্যা উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত Logo পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হয় Logo `প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে হবে’ Logo খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা, ঘটছে দূর্ঘটনা Logo ঝিনাইদহে তরুন শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পলিথিন নিষিদ্ধ অভিযান Logo হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ঘোষণা Logo অফিস সময়ে রান্না পশ্চিমাঞ্চল রেলের কর্মচারীদরে, কাজে অনীহার অভিযোগ Logo তিতাসে পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস স্কিমের আওতায় কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ Logo কাঁঠালিয়া মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় ভাই ভাবীকে পিটিয়ে জখম Logo গোমস্তাপুরে কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ

লালমনিরহাটে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত একই স্থান জামে মসজিদ ও মন্দির

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ২০৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির। একপাশে উলুধ্বনি, অন্য পাশে চলছে জিকির। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলছে পৃথক দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়। একপাশে ধূপকাঠি, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দির। এই শারদীয় দুর্গোৎসবেও জমকালো আয়োজন বসেছে এই প্রাঙ্গণে।

স্থানীয়রা জানান, ১৮৩৬ সালে কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। একই আঙিনায় প্রায় শত বছর ধরে কোনো ধরনের সাম্প্রতিক কলহ বা দাঙ্গা ছাড়াই দুই ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম পালন করে আসছে নির্দ্বিধায়।

বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজ পড়ার জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন আর সেটির নামকরণও করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ। ওই সময় থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কাজ।

পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেন। নামাজ বা আযানের সময়সূচি অনুযায়ী পূজা-অর্চনার ঢাক বাজানো বন্ধ রাখা হয়। নামাজ শেষে পূজার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এ কারণে এখন পর্যন্ত এই মসজিদ-মন্দিরের প্রাঙ্গণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

মসজিদ-মন্দিরে সামনের মাঠে পূজার সময় যেমন মেলা বসে তেমনি মুসল্লির জানাজাও হয়ে থাকে। দুই ধর্মের মানুষই সমানভাবে এই মাঠটি ব্যবহার করে থাকেন। এই সম্প্রীতির নির্দশন মন্দির ও মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে সাধারণ মানুষ। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এই মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন।

পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী পুরান বাজার মসজিদের পাশেই রয়েছে মন্দির। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবুও এখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবশ্রেণির মানুষ যার যার ধর্ম পালন করে। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না।

কালীবাড়ী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শ্রী শংকর চক্রবর্তী বলেন, ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণও করা হয় কালীবাড়ী। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের দেয়াল ঘেঁষে প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির, এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত। এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন। যার প্রমাণ এক উঠানে কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির ও পুরান বাজার জামে মসজিদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

লালমনিরহাটে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত একই স্থান জামে মসজিদ ও মন্দির

আপডেট সময় :

 

একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির। একপাশে উলুধ্বনি, অন্য পাশে চলছে জিকির। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যুগ যুগ ধরে চলছে পৃথক দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়। একপাশে ধূপকাঠি, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দির। এই শারদীয় দুর্গোৎসবেও জমকালো আয়োজন বসেছে এই প্রাঙ্গণে।

স্থানীয়রা জানান, ১৮৩৬ সালে কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। একই আঙিনায় প্রায় শত বছর ধরে কোনো ধরনের সাম্প্রতিক কলহ বা দাঙ্গা ছাড়াই দুই ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম পালন করে আসছে নির্দ্বিধায়।

বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নামাজ পড়ার জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন আর সেটির নামকরণও করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ। ওই সময় থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কাজ।

পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেন। নামাজ বা আযানের সময়সূচি অনুযায়ী পূজা-অর্চনার ঢাক বাজানো বন্ধ রাখা হয়। নামাজ শেষে পূজার কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এ কারণে এখন পর্যন্ত এই মসজিদ-মন্দিরের প্রাঙ্গণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

মসজিদ-মন্দিরে সামনের মাঠে পূজার সময় যেমন মেলা বসে তেমনি মুসল্লির জানাজাও হয়ে থাকে। দুই ধর্মের মানুষই সমানভাবে এই মাঠটি ব্যবহার করে থাকেন। এই সম্প্রীতির নির্দশন মন্দির ও মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে সাধারণ মানুষ। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এই মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন।

পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী পুরান বাজার মসজিদের পাশেই রয়েছে মন্দির। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবুও এখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবশ্রেণির মানুষ যার যার ধর্ম পালন করে। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না।

কালীবাড়ী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শ্রী শংকর চক্রবর্তী বলেন, ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণও করা হয় কালীবাড়ী। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের দেয়াল ঘেঁষে প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির, এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত। এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন। যার প্রমাণ এক উঠানে কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির ও পুরান বাজার জামে মসজিদ।