শিবগঞ্জের দ্বিতীয় দফায় ভাঙ্গনের কবলে পদ্মা পাড়ের মানুষ, ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ

- আপডেট সময় : ২১ বার পড়া হয়েছে

filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; module: h; hw-remosaic: 0; touch: (0.17592593, 0.17592593); modeInfo: ; sceneMode: Hdr; cct_value: 0; AI_Scene: (2, -1); aec_lux: 105.41246; hist255: 0.0; hist252~255: 0.0; hist0~15: 0.0;
কিছুদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফাই নদীগর্ভে বিলীন হল শিবগঞ্জের পাঁকা ও দূর্লভপুর ইউনিযনের প্রায় ১২টি গ্রামে ৪০০ বাড়িঘর, গোরস্থান, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আরো প্রায় হাজার খানেক পবিরবার ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে আছে। অসহায় জীবন যাপন করছে ভাঙ্গনের কবলে পড়া শতাধিক পরিবার।অনেকেই বাস করছে খোলা আকাশের নিচে। স্থায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ভাঙ্গন কবলিত এলাকার জনসাধারণ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনের প্রতি। তবে প্রশাসন বলছেন স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। গতকাল রোববার দিনব্যাপী সরজমিনে পাঁকা ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,গত এক সপ্তাহ দূর্লভপুর ইউনিযনের দ্বোভাগী,পন্ডিতপাড়া, বাদশাহ পাড়া, মনোহরপুর,আইয়ুব বিশ্বাসের গ্রামে প্রায় এক শো বাড়িঘর পদ্মার ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়েছে শত শত বিঘা, আমবাগানসহ ফসলি জমি। ভাঙ্গনের কবলে নি:স্ব হওয়া রাজশাহী নিউ গর্ভমেন্ট সরকারী কলেজের বি এস সি অনার্স পদার্থ বিদ্যার ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দ্বোভাগী গ্রামের ইজাজ আহমেদ জানান, এবার দিয়ে আমরা দুই বার ভাঙ্গনের কবলে পড়লাম। বর্তমানে নদী থেকে সামান্য দূরে ফুল দিয়াড়ী এলাকায় অস্থায়ী বাড়ি তৈরী করে বাস শুরু করেছি। গত এক সপ্তাহে শুধু দ্বোভাগী গ্রামের ৫০টি বাড়ি বিলীন হয়েছে। বর্তমানে আমি আমার লেখাপড়া নিয়ে হতাশায় আছি। এভাবে জিও ব্যাগ ফেলে জনগণের সাথে নাটক না করে জরুরী ভিত্তিতে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জোর দাবী জানাচ্ছি।একই ভাবে হতাশার কথা জানান পদ্মায় বাড়িঘর বিলীন হয়ে নি:স্ব পরিবারে মালিক জামাল উদ্দিন, ইব্রাহিম,জাহাঙ্গীর হোসেন,জেনারুল ইসলাম,সেলিম রেজা,মানারুল ইসলাম,সাইদুর রহমান, নাসিমা বেগম, ফাতেমা বেগমসহ দ্বোভাগী গ্রামের ২৫-৩০জন নারী পুরুষ। তারা জানান, আমরা গরীব মানুষ যা ছিল তা নদী গর্ভে বিলীন। এখান কোথায় যাবো কি খাবো? বুঝে উঠতে পারছি না। পন্ডিত পাড়ার জামাল উদ্দিন জানান, আইয়ুব বিশ্বাসের গ্রাম,বাদশাহ পাড়া,পন্ডিতপাড়া, মনোহরপুর গ্রামের গত এক মাসে দুই দফায় প্রায় ১৫০টি বাড়ি বিলীন হয়েছে। একই কথা বললেন মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল খালেক, সাহেবের ঘাটের আব্দুল জলিল, আব্দুর রহিম, আব্দুল করিমসহ অনেকেই। চরলক্ষীপুর ও হাসানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল বারী ক্ষোভের সাথে জানান, গত ৩০ বছরে প্রায় চার বার ভাঙ্গনের কবলে পড়লাম। তখন থেকেই শুনছি স্থায়ী বাঁধ নির্মান হবে। এখন পর্যন্ত কোন খবর নেই। আমরা মানুষ হয়ে জন্ম নিলেও প্রশাসনের কাছে যেন আমরা অন্যকিছু। বন্যা ও ভাঙ্গন শুরু হলে শুধু কিছু জিও ব্যাগ ফেলে জনগণকে শান্তনা দেয়া চেষ্টা। যা পরের বছর আসতে আসতে পানিতে ভেসে যায়। ভাঙ্গন কবলিত মানুষকে রক্ষা করার একটাই উপায় হলো শিবগঞ্জের মনোহরপুর হতে পাঁকা ইউনিয়নের শেষ সীমানা পর্যন্ত প্রায় ১১কিলোমিটার বাঁধ নির্মান করা।দূর্লভপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আজম জানান, গত একমাসে দুই দফায় দূর্লভপুর ইউনিয়নে আটটি গ্রামে পদ্মার ভাঙ্গনে প্রায় ২০০ বাড়ি বিলীন হযেছে। আরো প্রায় ৪০০ পরিবার ভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে আছে।অন্যদিকে পাঁকা ইউপি চেয়ারম্যাম আব্দুল মালেক জানান, গতকাল পর্যন্ত পাাঁকা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ১৬২টি বাড়ি বিলীণ হযেছে এবং কদিনের মধ্যে আরো ৪০টি বাড়ি বিলীণ হওয়ার পর্যায় রয়েছে। তাছাড়া ঝুঁকির মধ্যে আছে সাড়ে তিনশো পরিবার। তাছাড়া নতুন করে আবারো বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওযায় মানুষের কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব ভাঙ্গনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা করছি মনোহরপুর,রঘুনাথপুর,দ্বোভাগী সহ কয়েকস্থানে কাজ চলছে।অন্যদিকে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য প্রায় ৭৫১ কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা তৈরী করে রাজশাহী পরিকল্পনা কমিশনের পাঠানো হয়েছে। তারা সেটি ঢাকা পাঠাবেন এবং ঢাকার হেড অফিসে মাধ্যমে একনেকের অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা যাবে। এতে করে মনাকষা ও দূর্লভপুর ও পাঁকা ইউনিয়নের প্রায় ১১ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মানের কাজ করা সম্ভব হবে বলে জানান।