শেখ হাসিনার পদত্যাগ, নতুন বাংলাদেশের গড়ার প্রত্যায়

- আপডেট সময় : ০৯:০৮:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪ ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ। সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ এবং দেশ ছাড়ার খবরে গোটা জাতি বিজয় উল্লাসে রাজপথে নেমে আসে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাসভবন গণভবন, ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধুর জাদুঘরে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। নির্বিচার হত্যা, মামলা এবং গুমের বিচার সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। এই খবরে বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়েন ছাত্র -জনতা। বেলা ১২টায় রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবন থেকে বেলা আড়াইটা নাগাদ একটি সামরিক হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন হাসিনা। বেলা তিনটায় ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা বিমান বন্দরে পৌছান।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ সা’দিন মালিক বলেন, দেশে বর্তমানে মন্ত্রী পরিষদ বহাল নেই। কারণ, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে মন্ত্রী পরিষদ আর থাকে না। তারাও পদত্যাগ করেছেন বলে প্রতীয়মান হবে। সংবিধানে তেমনটিই বলা রয়েছে। রবিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন নিহতের খবর আসে।
এই মৃত্যু সারাদেশের সাধারণ মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। বিগত কয়েকদিনের ছাত্র-জনতার দাবির বিজয় হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের যাত্রা হবে। সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ রাষ্ট্রপতির কাছে শেখ হাসিনা তার পদত্যাগ পত্র দিয়ে বেলা আড়াইটা নাগাদ রাষ্ট্রপতির ভবন থেকে একটি সামরিক কপ্টারে দেশ ছাড়েন। শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে গোটা দেশ বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়ে।
তারা বিজয় মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমে আসে। সোমবার বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, শেখ হাসিনার অফিস কার্যালয়, বাস ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এদিন কার্ফু উপেক্ষা করে সোমবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার জমায়েত বাড়তে থাকে। বিগত কিছু দিনের আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষের সংহতি ও অংশ গ্রহণ গণআন্দোলনে রূপ নেয়। সোমবার বেলা দুইটার পর শেখ হাসিনার পদত্যাগের সংবাদে হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসে। মিছিল আর স্লোগানে ঢাকার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। কাতারে কাতারে মানুষ মানুষ স্লোগান দিতে দিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূতিকাগার শাহবাগ ও শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকে।
দুপুরের পর শেখ হাসিনার সরকারী কার্যালয়, পাশেই ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, ধানমন্ডির শেখ মুজিব ভবন, শেখ হাসিনার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাস ভবন, বিভিন্ন সংসদ সদস্যের বাস ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিকালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। আন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হবে। সেনা প্রধান বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে একটা অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করবো এবং এই সরকারের মাধ্যমে দেশের সব কার্যকলাপ চলবে। আমরা এখন মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাবো।
গিয়ে এই সরকারের গঠনের ব্যাপারে আলোচনা করবো। সেনাপ্রধান বলেন, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি সব হত্যা, সব অন্যায়ের বিচার আমরা করবো। আপনারা সেনাবাহিনীর প্রতি, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমি সব দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। সেনাবাহিনীর প্রধান অতি শিগগির ছাত্র-শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন।