উপমহাদেশের সর্বোচ্চ স্মৃতিস্তম্ভ শ্যামসিদ্ধি মঠ
সংস্কারের অভাবে বিলীন হওয়ার শঙ্কা
- আপডেট সময় : ১৬ বার পড়া হয়েছে
ভারত উপমহাদেশের সর্বোচ্চ স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে পরিচিত মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার শ্যামসিদ্ধি মঠটি বর্তমানে চরম অবহেলা ও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রায় ২৪১ ফুট (কোনো কোনো সূত্রমতে ২০ মিটার) উচ্চতার এই ঐতিহাসিক মঠটি সংস্কারের অভাবে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৮৩৬ বা ১২৪৩ বঙ্গাব্দ) বিক্রমপুরের ধর্নাঢ্য ব্যক্তি সম্ভুনাথ মজুমদার তাঁর স্বর্গীয় পিতার চিতার ওপর এই অষ্টভুজাকৃতির মঠটি নির্মাণ করেন। এটি দিল্লির কুতুব মিনারের (২৩৬ ফুট) চেয়েও উঁচু হওয়ায় এর ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অপরিসীম। তবে কুতুব মিনারের মতো সংরক্ষিত না হওয়ায় মঠটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন ও অবহেলার শিকার। মঠের গায়ের মূল্যবান পাথর, নকশা করা কাঠ ও পিতলের কলস বহু আগেই চুরি হয়ে গেছে। এমনকি ১৯৯৫ সালে মঠের অভ্যন্তরে স্থাপিত তিন ফুট উচ্চতার কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গটিও চুরি হয়।
বর্তমানে মঠটির মূল কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ায় এলাকাবাসী দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে প্রাচীন এই উঁচু মঠটি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
তবে আশার কথা, মঠের একেবারে নিচের কিছু অংশ নতুন করে টাইলস দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। যদিও প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মঠের ঐতিহ্য ও প্রাচীনত্ব বজায় রেখে সংস্কার কাজ করা উচিত এবং টাইলস স্থাপনের ফলে ঐতিহ্য নষ্ট হয়েছে।
এলাকাবাসী ও গবেষকরা মনে করেন, মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর অঞ্চলের শত শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহনকারী এই মঠের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা গেলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারত। তারা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত মঠটিকে প্রাচীন স্থাপত্যের নিয়ম মেনে সংস্কার করে এর অস্তিত্ব রক্ষার জোর দাবি জানিয়েছেন।




















