সফল দুম্বা খামারি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন জাহিদ

- আপডেট সময় : ০৫:১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ ২ বার পড়া হয়েছে
নিভৃত গ্রামের যুবক জাহিরুল ইসলাম জাহিদ। ব্র্যাক এনজিওতে চাকরির সুবাদে এক ব্যক্তির খামারে দুম্বা পালন করতে দেখেন। তারপর নিজেও স্বপ্ন দেখেন একটি দুম্বার খামার গড়ে তোলার। এরই মধ্যে শুরু করেছেন তার সেই স্বপ্নযাত্রা। পরিকল্পিতভাবে দুম্বা পালনে ইতোমধ্যে বাচ্চা পেতেও শুরু করছেন নব এই উদ্যোক্তা জাহিদ।
তার বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের দড়ি জামালপুর গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাহিরুল ইসলাম জাহিদ দিনাজপুর সদর উপজেলায় ব্র্যাক এনজিওতে চাকরি করছেন। সেখানকার বোচাগঞ্জের হান্নান মিয়া নামের এক উদ্যোক্তার দুম্বার খামার ভিজিট করেন। সেই থেকে নিজেও এই উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা আটেন। এরপর প্রাথমিক অভিজ্ঞতায় গত সাতমাস আগে এজেন্টের মাধ্যমে ভারত থেকে তুর্কি জাতের একটি পাঠাসহ পাঁচটি দুম্বা কিনেছেন। সাড়ে ৮ লাখ টাকায় এই দুম্বাগুলো কেনা হয়। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী মাচা পদ্ধতি এ পশু পালন শুরু করেছেন জাহিদ। এরই মধ্যে পেয়েছেন একটি বাচ্চা। আরও তিনটি গাভিন (গর্ভ) হয়েছে। আর কিছুদিন পরই সেগুলো প্রসব করবে। এ অবস্থায় ধীরে ধীরে খামার সম্প্রসারণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ থেকে নিজে স্বাবলম্বী হওয়াসহ অন্যদেরও কর্মসংস্থানের আশা করছেন এই উদ্যোক্তা জাহিদ মণ্ডল।
স্থানীয়রা বলছেন, দুম্বা মরু অঞ্চলের প্রাণী হলেও বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে দুম্বা পালন শুরু হয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় কয়েক মাস আগে পাঁচটি দিয়ে খামার শুরু করেছেন জাহিদ মণ্ডল। এখানে প্রতিদিন উৎসুক জনতা আসেন। এই প্রথম নিজ চোখে দুম্বা দেখতে পেয়ে অনেকটা আনন্দিত ও পালনে আগ্রহ জাগছে তাদের। বর্তমানে জাহিদ মণ্ডলের ব্যবস্থাপনায় খামার দেখাশুনা করছেন- তার মা পারভীন বেগম ও ছোট ভাই জিন্না মণ্ডল। তারা নিয়ম অনুযায়ী দুম্বাগুলোকে খাদ্য ও গোসল দেওয়াসহ সার্বিকভাবে লালনপালন করছেন তারা।
এ বিষয়ে পারভীন বেগম বলেন, ছেলে জাহিদের দিকনির্দেশনায় মাসে দুইবার দুম্বাগুলোকে গোসলা করানো হয়। সেডঘরের বাইরে আবদ্ধ প্রাচীর মধ্যে আঙ্গিনায় দলবদ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ায় এ প্রাণীগুলো। তা সার্বক্ষণিক দেখাশুনো করতে হয়।
খাদ্য সম্পর্কে জিন্না মণ্ডল বলেন, দুম্বাকে পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করতে খাবারের ব্যবস্থাপনা জরুরি। এ প্রাণীকে দানাদার খাবার যেমন- খড়, ভুসি, ঘাস প্রভৃতি দিতে। পরিমাণভাবে দিনে ৩ বার খাবার দিতে হয়। তবে গরু-ছাগলের চেয়ে সহজে দুম্বা পালন করা যায়।ন এই উদ্যোক্তা জাহিরুল ইসলাম জাহিদ বলেন, শখ ছিল যে আমি ব্যতিক্রম কিছু একটা করব। আমি যদি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে পারি তাহলে সবাই এ দুম্বা কিনে কোরবানি ঈদে কোরবানি দিতে পারবে। যেহেতু এটা সুন্নতি প্রাণী, এ উদ্দেশ্য নিয়ে আমার যাত্রা করা।
তিনি আরও বলেন, আমি দুম্বা পালন করলেও এখন পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অফিসের কোনো সহযোগিতা পাইনি। সরকারিভাবেভাবে সহযোগিতা পেলে আমার এই খামারটি সম্প্রসারণ করে যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পাতাম।
সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুম্বা পালন বেশ লাভজনক। জাহিদ নামের যুবক দুম্বার খামার করেছে সেটি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে তাকে সহযোগিতা চেষ্টা করা হবে। জাহিদ সফল হোক। তার দেখাদেখি অনেকে উদ্যোক্তা এখানে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।