ক্র্যাবের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বক্তারা-
সমৃদ্ধ দেশ বির্নিমাণে সাংবাদিকদের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা গুরুত্বপূর্ণ

- আপডেট সময় : ১৬৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ৪২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি- বিএনপি নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, এবি পার্টির (আমার বাংলাদেশ পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন, পুলিশ সদর দপ্তরের (এআইজি) সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক-মিডিয়া এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ভারতীয় হাই কমিশনের প্রেস অফিসার তন্ময় সিংহ, ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) তারেক লতিফ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ্। ক্র্যাবের সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি ফখরুল আলম কাঞ্চন, এস এম আবুল হোসেন, আবুল খায়ের, মিজান মালিক, উপদেষ্টা কামরুল হাসান, সাবেক সহ সভাপতি লিটন হায়দার। উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের সাবেক সহ-সভাপতি মোরছালিন বাবলা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম, আলাউদ্দিন আরিফ, আসাদুজ্জামান বিকু, সিনিয়র সদস্য গাফফার মাহমুদ, বেলায়েত হোসেন, প্যাট্রিক ডি কস্তা, আইয়ুব আনসারী, সাবেক সহ-সভাপতি মাসুম মিজান, সিনিয়র সদস্য আহমেদ আতিক প্রমূখ।
এর আগে ক্র্যাব চত্বর থেকে ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি সেগুনবাগিচার কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও ক্র্যাবের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
র্যালিতে ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ন সম্পাদক নিয়াজ আহমেদ লাবু, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, দপ্তর সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিহাল হাসনাইন, প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক জসীম উদ্দীন, আইন ও কল্যাণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ মিজান, কার্যনির্বাহী সদস্য ইমরান রহমান প্রমুখ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, আজকের সমাজে বড় সংকট, বড় অভাব, বড় দৈন্যতা হচ্ছে সাহসিক সাংবাদিকতা। সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে পারা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে একুশে পদকপ্রাপ্ত, ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান অকুতোভয় সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, অকুতোভয় সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের মতো সাংবাদিক খুবই অভাব। যিনি অসত্য, অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। বরং মৃত্যু ভয়হীন চেতনা নিয়ে অকুতোভয়ভাবে এগিয়ে যেতে পারেন। তিনি নির্যাতিত হয়েছেন, তাকে অপমান অপদস্থ করা হয়েছে কিন্তু তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। সাংবাকিতা পেশার জন্যে এই দৃঢ়তা, নৈতিকতা, অনমনীয়তা, এই নিষ্ঠা, এই আন্তরিকতা; ক্রাইম রিপোর্টাার্স এসোসিয়েশনকে নতুন উচ্চতার দিকে নিয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।
সাংবাদিকরা জাতির বিবেক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে কোন অপরাধের, অনিয়মের নিউজ ইচ্ছাকৃত বাদ পড়লো কিনা কিংবা কোন নিউজ ইচ্ছে করে তুলাধুনা ধরলাম কি না-নতুন বাংলাদেশে এই বিবেচনা সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
দেশের প্রতিটি থানা এলাকায় অপরাধীদের তালিকা রয়েছে, তাই থানার ওসিরা (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সব জানেন, ধরতে পারেন কিন্তু কোন কালো হাতের ইঙ্গিতের কারণে ধরা যাচ্ছে না, সেটা উদঘাটন করতে পারাটাও সাংবাদিকদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
বিএনপি নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসেসিয়েশন (ক্র্যাব)কে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, আমি প্রত্যাশা করছি, দেশের মানুষের ইচ্ছা আকাঙ্খাকে ধারণ করে এগিয়ে যাবে ক্র্যাব। বিএনপির সঙ্গে সাংবাদিকদের উত্তরোত্তর সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ন্যায় অন্যায়ের লড়াইয়ের মধ্যে সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হিসেবে সব সময় সমাজ বিনির্মানে ভূমিকা রাখেন। ভবিষ্যতেও দেশ গঠনে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।
এনসিপির মুশফিক উস সালেহীন বলেন, বাংরাদেশে সাংবাদিকরা এখন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন। আমরা প্রত্যাশা করি সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ট, সত্য প্রকাশ করবেন। কারো দ্বারা প্রভাবিত হবেন না। কিন্তু দু:খজনক ভাবে দেখেছি এখনো স্টেট এর বিভিন্ন এজেন্সির রিপোর্ট প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। কয়েকদিন আগে আমরা এটা দেখেছি। এ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার আহবান জানাই।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ, ক্র্যাবের সাবেক নের্তৃবৃন্দসহ সকল সহকর্মীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। সাধারণ সম্পাদক আমন্ত্রিত অতিথিদের এবারের মতো ভবিষ্যতেও ক্র্যাবের সঙ্গে থাকার আহবান জানান। শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন। এর আগে সকাল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সাংবাদিকরা ক্র্যাব কার্যালয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
পরে বিকেলে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ক্র্যাব সদস্য ও পরিবারের সদস্যদের জন্যে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিনা মূল্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। রাতে ক্র্যাব নাইট, অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।