সরকারি কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তনে ৯ যৌক্তিকতা

- আপডেট সময় : ১২৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারীদের (ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী) পদনাম পরিবর্তনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ৯টি বিষয় আমলে নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে গতকাল রোববার আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বিধি) শামীম সোহেলের সভাপতিত্বে সভাটি বেলা ১১টায় শুরু হয়। এতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় (ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালার তফশিলভুক্ত পদধরীদের বর্তমান পদবীর বিপরীতে দায়িত্ব, সুবিধাদি/বেতন গ্রেড, কর্মপরিধি ও পদমর্যাদা অপরিবর্তিত রেখে বাস্তবতার নিরিখে পদনাম পরিবর্তনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে- ১) বাংলাদেশ সচিবালয়ের সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের ভিন্নতা রয়েছে বিধায় মাঠ প্রশাসনের চেয়ে ভিন্নতর স্বতন্ত্র পদনাম অর্থাৎ বাংলাদেশ সচিবালয়ের সাংগঠনিক কাঠামোর সঙ্গে সংগতি পদনাম নির্ধারণ করা জরুরি। ২) নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে ‘বাংলাদেশ বাংকে’ কর্মরতদের পদনাম অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকে কর্মরতদের পদনামের ভিন্নতা রয়েছে। এছাড়া নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে সুপ্রীম কোর্টে কর্মরতদের পদনাম অন্যান্য নিম্ন আদালতে কর্মরতদের পদনামের ভিন্নতা রয়েছে। অনুরূপভাবে সচিবালয়ের পদনাম মাঠ প্রশাসনের চেয়ে ভিন্নতা থাকা প্রয়োজন। ৩) সহকারী সচিবের ফিডার পদ হচ্ছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। এ দুটি পদের বেতন গ্রেড-১০ ও মর্যাদা অভিন্ন বিধায় বাস্তবতার আলোকে দু’টি পদকে একীভূতকরণ সময়ের দাবি। ৪) সচিবালয়ের প্রতিটি শাখাতে কর্মরত সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক, কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদগুলো ভিন্ন ভিন্ন পদনাম ও বেতন গ্রেড ভিন্ন হলেও পদগুলোর দায়িত্ব ও কর্মপরিধি একই এবং তৃতীয় শ্রেণীর পর্যায়ভুক্ত অর্থাৎ ১১-১৬ গ্রেডের। এ পদগুলো প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তার ফিডার পদ। তাই এ পদগুলোকে এক ও অভিন্ন পদবিতে পরিবর্তন করা জরুরি। ৫) এছাড়া মাঠ প্রশাসনে বিশেষ করে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর পর্যায়ভুক্ত ১৩-১৬ গ্রেডের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন করে একটি মানসম্মত (স্ট্যান্ডার্ড) নামকরণ করেছে। ৬) এক নিয়োগবিধিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে অন্য নিয়োগবিধির আওতায় পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। তবে সচিবালয় নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৪-এর তফশিলের ৪ ও ৫ ক্রমিকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, ঞযব ঈড়সঢ়ঁঃবৎ চবৎংড়হহবষ (এড়াবৎহসবহঃ ঙৎমধহরুধঃরড়হং) জবপৎঁরঃসবহঃ জঁষবং, ২০১৯ অনুযায়ী কম্পিউটার অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তার ফিডার পদ। অর্থাৎ শুধু সচিবালয়ে কর্মরত কম্পিউটার অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদ দু’টি সচিবালয় নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৪-এর তফশিলভুক্ত পদবি হিসেবে গণ্য হবে। ৭) সচিবালয় নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৪-এর তফশিলভুক্ত ১১-১৬ গ্রেডের পদগুলো ভিন্ন হওয়ায় পদোন্নতির ক্ষেত্রে সম্মিলিত জ্যেষ্ঠতা তালিকার ওপর অহেতুক বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমার উদ্ভব হয়। কর্মচারীদের মাঝে আন্ত:কলহ ও দুরত্ব বাড়তে থাকে বিধায় এক ও অভিন্ন পদবিতে নামকরণ জরুরি। ৮) সরকারি চাকরিতে পূর্বে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত এমনকি উচ্চতর বেতন গ্রেড হওয়া সত্ত্বেও সম্মিলিত জ্যেষ্ঠতা তালিকা প্রণয়নের ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিনিয়ররা জুনিয়র দ্বারা অতিক্রান্ত হয়ে সার্ভিসে ক্ষতিগ্রস্ত হন। পদোন্নতির ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়। অহেতুক বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমার উদ্ভব হয় বিধায় এক ও অভিন্ন পদবী নির্ধারণ করা জরুরি। ৯) বাস্তবতার আলোকে কাজের পরিধি ও প্রকৃতি বিবেচনায় এক ও অভিন্ন ঁহরভড়ৎসরঃু বজায় রাখতে এবং পদোন্নতি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যতা বজায় রাখতে পদনাম পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায়, বেতন গ্রেড অপরিবর্তিত রেখে পদনাম পরিবর্তন করা হলে এতে সরকারের অতিরিক্ত কোনো অর্থের সংস্থান প্রয়োজন পড়বে না। এছাড়াও সভায় কমিটির সদস্যদের কাছে আন্ত:মন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।