ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

হাসিনার পতন না হলে জীবন যেত দুবাই জেলে

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

হাসিনার পতন না হলে জীবন কাটাতে হতো দুবাইয়ের জেলে। দেশে ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ফরিদ আহমদ শাহীন। শাহীন এ বলেন, আন্দোলন সফল না হলে, হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকতো, তাহলে জীবনে দেশের মাটিতে পা রাখা হতো না।

কখনো আর পরিবারের সঙ্গে দেখা হবে সে আশাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। জীবন কাটতো দুবাইয়ের কারাগারে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগার থেকে ৪৫ দিন পর মুক্ত হয়ে দেশে আসা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে ফরিদ আহমদ শাহীন শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

শাহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আরব আমিরাত সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় সাজা মওকুফের পর দেশে আসতে পারলাম। বিদেশের বাড়িতে টাকা-পয়সা, ব্যবসা সব হারিয়েছি, তবে হাসিনার পতন ও দেশ আবার স্বাধীন হওয়ায় মনে কষ্ট নেই।

জুলাইয়ে দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমর্থনে ও শেখ হাসিনার সরকারের দুঃশাসনের প্রতিবাদে আরব আমিরাতের দুবাই, শারজাহ, আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভ করেছিলেন বাংলাদেশিরা। রাজতন্ত্রের দেশটিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকায় বিক্ষোভ থেকে আটক করা হয় অনেককে। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত।

শাহীন বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে আইন-কানুন মেনে বেশ সুনামের সঙ্গে দুবাইতে ব্যবসা করে আসছি। বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে গত ১৮ জুলাই দুবাইতে থাকা প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধভাবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করি।

পরদিন দেশটির পুলিশ আন্দোলনরত বাঙালিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। এ খবর বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সাজাপ্রাপ্তদের পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে নানা শঙ্কা দেখা দেয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিদেশের মাটিতে আন্দোলনের ফলে সাজাপ্রাপ্তদের সাজা মওকুফের বিষয়ে আরব আমিরাত সরকারকে অনুরোধ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে আমিরাত সরকার গত ৫ সেপ্টেম্বর আটক ১১৪ প্রবাসীকে বেকসুর খালাস দেয়। গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রথম ধাপে আটক ৫৭ জন প্রবাসী দেশে ফেরত আসেন। তাদেরই একজন ফরিদ আহমদ শাহীন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাসিনার পতন না হলে জীবন যেত দুবাই জেলে

আপডেট সময় : ১১:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

হাসিনার পতন না হলে জীবন কাটাতে হতো দুবাইয়ের জেলে। দেশে ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ফরিদ আহমদ শাহীন। শাহীন এ বলেন, আন্দোলন সফল না হলে, হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকতো, তাহলে জীবনে দেশের মাটিতে পা রাখা হতো না।

কখনো আর পরিবারের সঙ্গে দেখা হবে সে আশাও ছেড়ে দিয়েছিলাম। জীবন কাটতো দুবাইয়ের কারাগারে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের কারাগার থেকে ৪৫ দিন পর মুক্ত হয়ে দেশে আসা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে ফরিদ আহমদ শাহীন শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

শাহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আরব আমিরাত সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় সাজা মওকুফের পর দেশে আসতে পারলাম। বিদেশের বাড়িতে টাকা-পয়সা, ব্যবসা সব হারিয়েছি, তবে হাসিনার পতন ও দেশ আবার স্বাধীন হওয়ায় মনে কষ্ট নেই।

জুলাইয়ে দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সমর্থনে ও শেখ হাসিনার সরকারের দুঃশাসনের প্রতিবাদে আরব আমিরাতের দুবাই, শারজাহ, আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভ করেছিলেন বাংলাদেশিরা। রাজতন্ত্রের দেশটিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকায় বিক্ষোভ থেকে আটক করা হয় অনেককে। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত।

শাহীন বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে আইন-কানুন মেনে বেশ সুনামের সঙ্গে দুবাইতে ব্যবসা করে আসছি। বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে গত ১৮ জুলাই দুবাইতে থাকা প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধভাবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করি।

পরদিন দেশটির পুলিশ আন্দোলনরত বাঙালিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। এ খবর বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সাজাপ্রাপ্তদের পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে নানা শঙ্কা দেখা দেয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিদেশের মাটিতে আন্দোলনের ফলে সাজাপ্রাপ্তদের সাজা মওকুফের বিষয়ে আরব আমিরাত সরকারকে অনুরোধ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে আমিরাত সরকার গত ৫ সেপ্টেম্বর আটক ১১৪ প্রবাসীকে বেকসুর খালাস দেয়। গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রথম ধাপে আটক ৫৭ জন প্রবাসী দেশে ফেরত আসেন। তাদেরই একজন ফরিদ আহমদ শাহীন।