রাজবাড়ীতে তীব্র নদী ভাঙ্গন
হুমকীতে জনবসতি, ফেরি ঘাট ও বহু স্থাপনা

- আপডেট সময় : ৩ বার পড়া হয়েছে
সাত নম্বর ফেরি ঘাট এলাকায় ডান পাশে বসবাস করেন আলতাফ মোল্লার পরিবার।ভাঙ্গনে অতিষ্ঠ হয়ে আক্ষেপের সুরে তার স্ত্রী সূর্য বেগম বলেন, এবারের ভাঙ্গন সহ সাত বার নদী ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়েছেন।এখন তিনি ও তার পরিবার কোথায় গীয়ে উঠবেন তা বলতে পারেনা।ঘর, টিনের চাল, আসবাব পত্র ভেঙ্গে স্তুুপ করে রেখেছেন।কাথায় ঠায় হবে তার চোখে মুখে অনিশ্চয়তার ছাপ। ভাঙ্গনের কারনে তাদের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে চলে যাচ্ছে।তবে তাদের ভাঙ্গন রোধে কেউ এগিয়ে আসছেনা। এখনো আশায় আছেন বালুভর্তি বস্তা ফেলে তাদের শেষ বসতবাড়ি রক্ষা করা হোক। এ এলাকার আলতাফ মোল্লা, ময়ান সরদার,শাহাদাৎ প্রামানিক, সহ ভাঙ্গন কবলিতরা চান তাদের শেষ আশ্রয় স্থল টুকু রক্ষায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কাজ করবে।
রাজবাড়ী দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া অংশের সাত নং ফেরি ঘাটের দুই পাশে তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের তোরে এ ফেরি ঘাটের দুই পাশে অবস্থিত জনবসতি এলাকার মানুষ বাড়িঘর ভেঙ্গে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন স্থানীয় বসতিরা- হুমকীতে পরেছে ২ শতাধিক জনবসতি,স্থাপনা,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,স্কুল ও দুটি ফেরি ঘাট।চার নং ফেরি ঘাটেও দেখা দিয়ছে ভাঙ্গন।কতৃপক্ষ বলছে,ভাঙ্গনের স্থান পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে ভাঙ্গন স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগের বস্থা ফেলার কাজ শুরু হবে।
দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ২১ জেলার গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট দৌলতদিয়া পাটুরিয়া ফেরি ঘাট।লঞ্চঘাট সহ দৌলতদিয়া প্রান্তে আটটি ঘাট রয়েছে।
প্রতি বছরের মত এ বছরও পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারনে প্রচন্ড স্রোত ও ঘূর্ণনের ফলে তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।সাত নং ফেরি ঘাটের দুই পাশে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতায় বাড়িঘর,গাছপালা বিলীন হচ্ছে।নদী ভাঙ্গনের ফলে অসহায়ত্ব দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন কবলিতদের মাঝে। বাড়ি ঘর ভেঙ্গে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা এখন এখানকার মানুষগুল।টিনের চাল,ঘরের বেড়া,খাট,চৌকি,গরু, ছাগল,হাস, মুরগী সহ সংসারের প্রয়োজনীয় জিনস পত্রগুলো নিয়ে ভিটে মাটি ফেলে চলে যাচ্ছেন অজানা স্থানে।কেউ কেউ আবার আত্মীয়দের বাড়িতে মাথা গোজার ঠায় করে নিতে চলে যাচ্ছেন। গত চার, পাঁচ দিনের ভাঙ্গনে এ স্থানের আট থেকে দশটি ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র চলে গেছেন এখানকার পদ্মাভাঙ্গন কবলিত সাধারন মানুষ। চার নম্বর ফেরি ঘাটেও ভাঙ্গ দেখা দিয়েছে। এখনো ভাঙ্গন স্থানে বালুর বস্তা ফেলা হলে এ স্থানেই বসবাস করতে পারবেন সাদারন মানুষ।তবে তারা চান এ স্থানে তারা যেন সবসময় বসবাস করতে পারেন সে জন্য স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ জানান কতৃপক্ষের কাছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মো. নাহিদুর রহমান,তিনি বলেন, দৌলতদিয়া ৭ নং ফেরি ঘাটের ভাঙ্গন এলাকা সরোজমিনে পরিদর্শন করেছেন।ভাঙ্গন এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগের বস্তা ফেলার কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে কথা বলেছেন।ঘাটের আশে পাশে পানি উন্নয়নবোর্ড বালু ভর্তি বস্তা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরী ভিত্তিতে নদী তী রক্ষার কাজ করবে বলে জানান।
রাজবাড়ী পানিউন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমএ শামীম, তিনি বলেন, উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে পত্রাকারে ভাঙ্গনের বিষয়ে জানানো হবে। কতৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান।
বিআইডব্লিটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (আরিচা অঞ্চল,) নেপাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন,দোলতদিয়া ঘাটের ভাঙ্গন বিষয়ে তিনি বলেন, ভাঙ্গনের অবস্থা সম্পর্কে বিআইডব্লিউটিএ অবগত আছে । এ বিষয়টি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঘাট রক্ষার্থে তাদের বালুর বস্তা মজুদ রয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে। ঘাটের বাইরের অংশে ভাঙ্গন হলে সেটা পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখবে বলে জানান।