২০৩৫ সালের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার: প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৭:৩৪:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪ ২০২ বার পড়া হয়েছে
সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের পাশাপাশি হাইড্রোজেন ও অ্যামেনিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে বলে সংসদে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আশা করে বলেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে।
বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেট্রোবাংলার অধীন রূপান্তরিত গ্যাস কোম্পানি লি. (আরপিজিসিএল)-এ জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন উৎপাদনে টেকসই ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতির ওপর উন্নত বিশ্বের চলমান অধিকতর গবেষণাসমূহের ফলাফল এবং গৃহীত কার্যক্রমের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। ওই সেল গ্রহণযোগ্য তথ্যাদি প্রাপ্তির পর একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করবে। আশা করা যায় ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে।
সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ধনী, গরীব নির্বিশেষে সকলের জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচার ব্যবস্থায় দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধ পরিকর। বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সঠিক বিচারের নিশ্চিয়তা প্রদান করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে অধঃস্তন আদালতে এক হাজার ৪২৯ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৭টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী মোট মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি। এ পর্যন্ত ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলা সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী এ ৫টি বিভাগ এখন সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত। অর্থ্যাৎ এ সকল জেলা, উপজেলা ও বিভাগে কোনও ভূমিহীন গৃহহীন মানুষ নেই।
আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন নোয়াখালী, বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। সেখানেই ভূমিহীন মানুষকে সরকারি উদ্যোগে পুনর্বাসনের ভিত্তি রচিত হয়। ১৯৯৬ সালে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করে একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখি তখন বাংলাদেশের প্রায় ৩১ লাখ মানুষ গৃহায়নের তীব্র সংকটে আছে। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরের বাজেটে ৫০ কোটি টাকা দিয়ে একটি গৃহায়ন তহবিল গঠন করি এবং গৃহায়ন সমস্যা সমাধানে নানা উদ্যোগ নেই। ঘূর্ণিঝড় ও নদী ভাঙন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পনুর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে ‘আশ্রয়ন’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করি। তখন থেকেই আশ্রয়ন প্রকল্প শুরু।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যারাক হাউজের মাধ্যমে আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছি। ব্যারাক হাউজ ছাড়াও আমরা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৩টি পরিবারকে নিজ জমিতে বিনামূল্যে গৃহনির্মাণ করে দিই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫টি পরিবারের কাছে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর হস্তান্তর করেছি। মুজিববর্ষে উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমুল মানুষকে জমির মালিকানাসহ ঘর করে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে ৬ হাজার ৯৪৫ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরের ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা থেকে ৯.১২ গুণ বাড়িয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এক লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ১১৯টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।